সিমলা, 3 জুন: চলতি লোকসভা নির্বাচনে অন্য আসনের মতোই সকলের নজর রয়েছে হিমাচলের ছোট্ট আসন মান্ডির দিকে ৷ লোকসভা নির্বাচনের টিকিট দিয়ে বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াতকে বিনোদনের লাইমলাইট থেকে রাজনীতির ময়দানে নিয়ে এসেছে বিজেপি ৷ যদিও সেখানে প্রচারের আলোয় থাকতে কোনও রকম খামতি রাখেননি অভিনেত্রী কঙ্গনা ৷
অন্যদিকে, কুইনকে সমানে সমানে টক্কর দেওয়ার জন্য কংগ্রেস সামনে এনেছে রাজাকে ৷ হিমাচল প্রদেশের চারবারের মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বীরভদ্র সিংয়ের ছেলে ও ক্যাবিনেট মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিং লড়ছেন এখান থেকে ৷ 2014 ও 2019 সালে এই আসন জিতেছে বিজেপি ৷ ফলে বিজেপিকে আটকাতেই মরিয়া কংগ্রেস ৷ পয়লা জুনই ইভিএমে রাজা-রানির ভাগ্য বন্দি হয়ে গিয়েছে ৷ 4 জুন সকাল আটটা থেকে শুরু হবে ভোট গণনা ৷ এরপরই বোঝা যাবে কী হতে চলেছে।
1 তারিখ ভোট শেষ হতেই বিভিন্ন এক্সিট পোল এসেছে প্রকাশ্যে ৷ সাত দফা লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফা সম্পন্ন হতেই একাধিক বুথ ফেরত সমীক্ষায় বলা হয়েছে, হিমাচলে কংগ্রেস পেতে পারে 1টি থেকে 2টি আসন ৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, মান্ডিতে কংগ্রেসের জেতার সম্ভাবনাই বেশি ৷ অন্যদিকে, এই আসনে কঙ্গনাকে জেতাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের মতো হেভিওয়েটরা প্রচার সেরেছেন ৷ তার কি প্রভাব পড়বে না? তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যাচ্ছে ৷ তবে প্রার্থীদের ভাগ্যে কী রয়েছে তা ইভিএম খুললেই জানা যাবে ৷ পাশাপাশি, কঙ্গনাকে টিকিট দেওয়া নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে বিজেপির অন্দরেই ৷ সেটা অবশ্যই কংগ্রেসের কাছে অ্যাডভান্টেজ ৷
আর হয়তো বিজেপি নেতাদের ক্ষোভ আঁচ করতে পেরেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ৷ আর তাই, দেশের বড় বড় আসনের প্রচারের মাঝে কঙ্গনার সমর্থনে 24 মে মিছিল করেন মোদি ৷ ফলে এর থেকে আন্দাজ করাই যায়, মান্ডি আসনে বিক্রমাদিত্য সিংয়ের সঙ্গে কঙ্গনার লড়াই খুব যে সহজ নয়, তা বুঝেছেন প্রধানমন্ত্রীও ৷ এরপর উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও হিমাচলে কঙ্গনার সমর্থনে দুটি মিছিল করেন ৷ এই ব়্যালিতেই যোগী কঙ্গনা রানাওয়াতের প্রশংসা করতে গিয়ে মহারানি লক্ষ্মীবাঈ, মীরাবাঈ ও মহারানি পদ্মিনীর মতো মহান নারীদের নাম উল্লেখ করেন ৷ এমনকী, মঞ্চ থেকে কঙ্গনাকে নিজের বোন বলেও সম্বোধন করেন যোগী ৷ পাশাপাশি কঙ্গনার সমর্থনে প্রচার সারেন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি ও বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা ৷
রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর ভোট ঘোষণার পর থেকে টানা দু'মাস নির্বাচনী প্রচারের কাজে যুক্ত ছিলেন ৷ কঙ্গনা রানাওয়াতের প্রায় প্রতিটা জনসভা ও মিছিলে তিনি উপস্থিত ছিলেন ৷ আসলে কোথাও না কোথাও মান্ডি আসন হয়ে উঠেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুরের সম্মান রক্ষার লড়াই ৷
প্রচারে প্রথম সারির নেতারা থাকলেও কঙ্গনা বরাবরই নিজেকে হিমাচলের মেয়ে হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন ৷ 24 মার্চ কঙ্গনা রানাওয়াত বিজেপির হয়ে টিকিট পান ৷ একদিকে তিনি যেমন মান্ডির জনগণের কাছে গিয়েছেন তেমনই বিক্রমাদিত্য সিং-কে রাজনীতির পরিভাষায় আক্রমণও করেছেন ৷ একদিকে মোদি ম্যাজিক ও অন্যদিকে রামমন্দির তৈরির প্রভাবে তিনি যে জিততে পারেন, তা নিয়ে আশাবাদী অভিনেত্রী ৷ যাই হোক, হিমাচল প্রদেশের মান্ডি আগামী পাঁচ বছরের জন্য রাজা না রানি কাকে বাছে তা জানা আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেই ৷