কলকাতা, 22 সেপ্টেম্বর: প্রতিবাদের কারণে তিনমাস আগে সাসপেন্ড করা হয়েছিল ৷ কাজে যোগ দেওয়ার পরও তা কেড়ে নিত হেয়ার ড্রেসার গিল্ড এবং ফেডারেশন ৷ অবশেষে হতাশায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন কেশসজ্জা শিল্পী তনুশ্রী দাস ৷
শনিবার হোয়াটস্ অ্য়াপে সাধারণ সদস্যদের গ্রুপে পুরো বিষয়টি জানিয়ে একটি ভয়েস ম্যাসেজ করেন তনুশ্রী ৷ একটা চিঠিও লেখেন তিনি ৷ এরপর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ৷ শেষ মুহূর্তে মেয়ে এসে বাঁচায় তাঁকে ৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, বর্তমানে বাঙুর হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে এই কেশসজ্জা শিল্পীর ৷
বাড়িতে অসুস্থ স্বামী ৷ মেয়ে পড়াশোনা করছে ৷ বাড়ির লোন চলছে ৷ এই অবস্থায় তাঁকে 3 মাসের জন্য বরখাস্ত করা হয় ৷ তবে নির্দিষ্ট সময়ের পর কাজের অনুমতি পান তনুশ্রী ৷ যদিও বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয় তাঁকে ৷ নির্দেশ দেওয়া হয়, বাইরের কোনও কাজে যোগ দিতে পারবেন না তিনি ৷ সমস্ত শর্ত মেনে নেন তনুশ্রী ৷ কিন্তু, তারপরও একের পর এক কাজ কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ ৷
তনুশ্রীর অভিযোগ, রবিবার মৈনাক ভৌমিকের আগামী ছবির লুক সেট ছিল । তিনি সেই কাজটি হাতে পেয়েছিলেন । শনিবার প্রোডাকশন ম্যানেজার ফোন করে তাঁকে জানান, গিল্ড থেকে ফোনে বলা হয়েছে তাঁকে যেন কাজটি না দেওয়া হয় । এরপর তিনি যোগাযোগ করেন ফেডারেশন সম্পাদকের সঙ্গে । তিনিও একই কথা জানান ৷ কাজ হারিয়ে হতাশায় ডুবে যান তনুশ্রী । সেই হতাশা থেকেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন টলিপাড়ার এই কেশসজ্জা শিল্পী ৷ তাঁর বক্তব্য, মাত্র একটা শিফটে কাজ করে তাঁর পক্ষে সংসার চালানো অসম্ভব।
সাধারণ সদস্যদের গ্রুপে তনুশ্রীর বার্তা ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গিল্ড-এর প্রাক্তন সম্পাদক হেমা মুন্সী । তিনি বলেন, "বিষয়টি একাধিকবার উত্থাপন করেছি । প্রত্যেককে কাজ করতে দেওয়া হোক, দাবি জানিয়েছি । তারপরও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে ভাবতে পারিনি ৷ তিনি সাফ জানান, তিনি সম্পাদক থাকাকালীন এই ধরনের ঘটনাকে কখনও প্রশ্রয় দেননি ৷
অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আর এক স্টাইলিস্ট জানান, গিল্ড বিরোধী মন্তব্য করলেই সাসপেন্ড করা হয় ৷ নির্দিষ্ট সময়ের পর তাঁদের দিয়ে জোর করে মুচলেকাও লেখানো হয় বলে অভিযোগ ৷ এই বিষয়ে কেশসজ্জা শিল্পীদের সংগঠনের সম্পাদক জয়শ্রী দাস এবং ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয় ৷ তবে যোগাযোগ করা যায়নি তাঁদের কারও সঙ্গে ।
প্রসঙ্গত, তনুশ্রী দাসের এই আত্মহত্যায় চেষ্টার খবর প্রথম সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেন অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী ৷ এরপর সেই খবর পেয়েই হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান পরিচালক সুদেষ্ণা রায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী, চৈতি ঘোষাল, মানালি দে, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ ।