কলকাতা, 27 মার্চ: বাংলা সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ থিয়েটার ৷ যুগে যুগে থিয়েটারের মঞ্চ হয়ে উঠেছে বেঁচে থাকার মাধ্যম, প্রতিরোধের আঙিনা, প্রতিবাদের ভাষা । 27 মার্চ বিশ্ব নাট্য দিবস । কোথায় দাঁড়িয়ে আজকের বাংলার থিয়েটার ? বাংলার নাট্যকর্মীদের সঙ্গে কথা বলল ইটিভি ভারত।
সুদীপ্তা চক্রবর্তী বলেন, "আমি তো বলব, বাংলার থিয়েটার ভালো জায়গায় আছে । একটা সময় মনে হয়েছিল যে নতুন জেনারেশন থিয়েটার-বিমুখ । কিন্তু না, আমিও গত এক বছর ধরে ‘বিনোদিনী অপেরা’র হাত ধরে থিয়েটারে ফিরেছি । তাতে দেখছি প্রচুর মানুষ থিয়েটার দেখতে আসছেন । তবে হ্যাঁ, সেখানেও একটু স্টারের মুখ খোঁজার বিষয় চলে আসছে । যেটা বাংলায় আগে ছিল না । যারা থিয়েটার করে স্টার হয়েছেন, তাঁদের থেকেও অন্যান্য মাধ্যমের লোকেরা থিয়েটার করলে দর্শকের ঝোঁক বেশি । যদিও এতে আমি কোনও দোষ দেখি না ।"
সুদীপ্তার কথায়, "বাংলা থিয়েটার হলগুলোর উন্নয়নসাধন দরকার । বিশেষ করে অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের । থিয়েটার চলাকালীন শৌচালয়ের জল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, একটা খাবারের স্টলে সবাই গিয়ে ভিড় জমাচ্ছে । এটা হওয়ার কথা নয় । এটা লজ্জার ।"
আরেক প্রবীণ অভিনেতা সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বাংলা থিয়েটার আজ কোথায় দাঁড়িয়ে, তার নেতিবাচক এবং ইতিবাচক দু’দিকই আছে । সহজ কথায়, একটা দোলাচলের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে । অধিকাংশ নাট্যদল কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদানে চলে । আবার অনেক দলই অনুদান পায় না । তারা শো হাউজফুল করে সেই টাকাতেই পরের শো করে । যেমন কৌশিক সেনের দল, সুজন মুখোপাধ্যায়ের দল । তারা দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে একের পর এক শো হিট করে পরের শো করানো যায় । প্রচুর মানুষ থিয়েটার দেখতে আসছে, এটা তার প্রমাণ । এটা একটা পজিটিভ দিক ।"
তারঁ কথায়, কেন্দ্রীয় সরকার এতদিন নাটক ঘিরে যে জটিলতা সৃষ্টি করেছে তা সামাল দেওয়া গিয়েছে । যে সব দল গ্রান্ট পায়, প্রত্যেক বছর কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যেক দলের প্রেসিডেন্ট-ডিরেক্টরদের দিল্লিতে ডেকে পাঠায় এবং নানা বিষয়ে জিজ্ঞেস করে । ফলে সেই সব নাটিকা মঞ্চস্থ করা হয় । না-হলে যদি আর অনুদান না আসে । এককালে যারা থিয়েটার অন্তপ্রাণ, তাঁরা নিজেদের পকেটের পয়সায় থিয়েটার করতেন । এখন সেই মানুষ কই ? এখন আইপিএল-এর জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা যায় । নাটকের জন্য নয় । ফলে গ্রান্ট ছাড়া গতি নেই । সুতরাং নেগেটিভ এবং পজিটিভ দু’দিকই আছে ।
আরও পড়ুন: