কলকাতা, 11 মার্চ: ফের বিতর্কের মুখে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সঙ্গীত শিল্পী রূপঙ্কর বাগচি ৷ এবার তিনি মন্তব্য ছুঁড়লেন ডাকঘর কর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগের তীর তাঁর স্ত্রী চৈতালি লাহিড়ীর দিকেও । সোশাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই ফের একবার বিতর্ক শুরু রূপঙ্করকে নিয়ে ৷
দেবারতী দেবীর পোস্ট করা বিবরণ অনুযায়ী, "পেশায় গায়ক রূপঙ্কর বাগচি মহাশয় সোমবার সস্ত্রীক আমাদের পোস্ট অফিসে আসেন আধারের কাজ করাতে। প্রথমে সাড়ে বারোটা নাগাদ জনৈক চৈতালি লাহিড়ী (পরে বোঝা গেল উনি রূপঙ্করবাবুর স্ত্রী) এসে আধার নথিভুক্তিকরণের জন্য এক কর্মীকে বলেন, উনি রাজ্য সরকারের মহিলা সুরক্ষা দফতর থেকে আসছেন, ওনাকে কাজটা 'তক্ষুনি' করে দিতে হবে। প্রত্যুত্তরে আধারকর্মী বলেন, তিনি করে দেবেন। কিন্তু আগে যাঁরা সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন তাঁদের করার পর তারপর। প্রতিদিন আমাদের অফিসের সদর দরজা সকাল দশটায় খোলা মাত্র দেখি প্রচুর লোক লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন ৷ এই লাইনের জন্য তাঁরা স্বভাবতই দশটার আরও আগে থেকেই দাঁড়ান। এই অবস্থায় কোনওমতেই একজন শিল্পীকে সেই সকাল থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলিকে টপকিয়ে আগে সার্ভিস দেওয়া সম্ভব নয়, অন্তত নীতিগত ভাবে তো নয়ই ৷
তিনি আরও লেখেন, "এটা বুঝিয়ে বলার পরেও তিনি রীতিমতো "পাওয়ারফুল শিল্পীপত্নী" সুলভ আচরণ করেন এবং নিজেই স্বঘোষিত ভাবে বলেন যে উনি দুপুর দেড়টার সময় ফের আসবেন। দেড়টার বদলে ওনাদের কাজ 1:35 মিনিটে শুরু হয় ৷ তাতেই রূপঙ্কর বাবুর শৈল্পিক সত্ত্বায় আঘাত লাগে। ওনার স্ত্রী চৈতালি দেবীর বক্তব্য অনুযায়ী 'মুড়ি মুড়কি এক করলে চলবে না, বুঝতে হবে কাকে আগে করতে হবে' ৷ অর্থাৎ ওনারা দামি মুড়কি আর সকাল থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলি সস্তার মুড়ি। ইতিমধ্যে আমরা অর্থাৎ উক্ত ডাকঘরে থাকা কর্মীরা ছুটে যাই, ওনাকে বোঝানোর চেষ্টা করি ৷ বলি যে আপনারা দরকার পড়লে আলাদা ভাবে বলতেন, আমরা এনাদের করে শেষ বেলার দিকে আপনাদের সময় করে দিতাম, ইত্যাদি ৷"
তিনি লেখেন, "কিন্তু অহঙ্কারবশত বাগচিবাবু ভুলে যান যে উনি একজন কর্তব্যরত সরকারি কর্মচারীর সঙ্গে কী ব্যবহার করছেন, তাই ঔদ্ধত্যপূর্ণ ভাবে বাজে শব্দ বন্ধ ব্যবহার করেন ৷ তারপর আমরা সকল কর্মী এবং সেখানে উপস্থিত কিছু গ্রাহকরা সম্মিলিত ভাবে জোর গলায় ওনার এই শব্দবন্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে বাগচিপত্নী স্বামীকে নিয়ে চলে যান ৷
অন্যদিকে, রূপঙ্করের দাবি তিনি তাঁর স্ত্রীকে বলেছেন সেই কথাটি। তিনি সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, তাঁর স্ত্রী চৈতালির আধার কার্ডের ঠিকানাটি ভুল। তাই সেটি ঠিক করাতেই তাঁরা ডাকঘরে গিয়েছিলেন। প্রায় 45 মিনিট কেটে গেলেও স্ত্রী না বেরোলে তিনি অফিসে ঢোকেন। দেখেন, তাঁর স্ত্রীকে ঘিরে অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে কথা বলছেন ডাকঘরকর্মীরা। একাধিক পুরুষকর্মীও ছিলেন সেখানে। তখনই নাকি তিনি বিরক্ত হয়ে স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলে ফেলেন, ‘‘কী হচ্ছে! হোয়াট দ্য ফা**?" কথাটি তাঁর মুখ ফস্কে বেরিয়ে এসেছে। এমনই দাবি গায়কের। কর্মীরা বিক্ষোভ জানালে তিনি নাকি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, তিনি তাঁদের এই কথা বলেননি। স্ত্রীকে বলেছেন। আপাতত, রূপঙ্কর বাগচির সেই ভিডিয়ো ভাইরাল সোশাল মিডিয়ায় ৷
আরও পড়ুন
1. নাচ এমন যেন খনি থেকে তেল তুলছে, অক্ষয়কে ব্যঙ্গ স্ত্রী টুইঙ্কেলের
2. হিন্দি-হিন্দুত্বওয়ালাদের তোয়াজ করতেই রামনবমীর ছুটি? প্রশ্ন ক্ষুব্ধ সুমনের