কলকাতা, 24 জুলাই: 46 এ, গিরিশ মুখার্জি রোড। লেটার বক্সে উত্তম কুমার, গৌরী চট্টোপাধ্যায়, গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের নামের উপর কাগজে লিখে সেঁটে দেওয়া হয়েছে তাঁদের উত্তরসূরীদের নাম। কারণ চিঠি আজ তাঁদের নামেই আসে। তবু এক চিলতে দেখা যায় 'উত্তম কুমার' নামটা। মহানায়কের প্রয়াণ দিবসে তাঁকে ঘিরে উঠে এল অনেক অজানা কথা ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির কাছে ৷
মহানায়কের মেজ ভাই বরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে মৌসুমী দত্ত জানান, বাঙালির সর্বকালের ম্যাটিনি আইডল উত্তম কুমারের তিনবার নাম বদল হয়েছিল। প্রথমে উত্তম কুমার নামটি রেখেছিলেন তাঁর দাদামশাই। তখন সেই নাম পছন্দ হয়নি মহানায়কের মা চপলা দেবীর। বদলে রাখেন অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়। এরপর সেই নামে ভাগ্য সঙ্গ না দেওয়ায় বদলে রাখা হয় অরূপ কুমার। তাতেও ভাগ্য সঙ্গ দেয় না। এরপর মহানায়ক ফের ফেরত আসেন সেই উত্তম কুমার নামেই।
তিনি বলেন, "ভাইপো ভাইঝিদের নিয়ে থাকতে ভালোবাসতেন আমাদের বাবা, কাকা, জেঠুরা। মহানায়ক মানে আমার জ্যাঠা কোনওদিন নিজের ছেলের সঙ্গে আমাদের আলাদা চোখে দেখেননি। আমরা কী পরছি, কী খাচ্ছি সেদিকেও নজর ছিল। আমাদের দুই বোনের পুতুলের বিয়েতে মহাভোজের আয়োজন করেছিলেন তিনি। আর জেঠিমা (গৌরী দেবী) পুতুলের গয়না বানিয়ে দিয়েছিলেন। উনি ছিলেন সাক্ষাৎ সরস্বতী।" তিনি আরও বলেন, "জ্যাঠাকে দেখতে লক্ষ্মীপুজোর দিন বাড়িতে ভিড় জমে যেত। তিনি সকলের গুরু। তাঁকেই যেন ভগবান মানতেন সবাই।"
উল্লেখ্য, 1980 সাল পর্যন্ত 33 বছরে বাংলা-হিন্দি মিলিয়ে প্রায় দু'শোরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন উত্তম কুমার । অভিনয় জগতে তিনি এক আলাদা মাইলস্টোন তৈরি করেছেন । একাধিক অভিনেত্রীর সঙ্গে কাজ করেছেন মহানায়ক । যার মধ্যে সুচিত্রা সেনের সঙ্গে তাঁর জুটি ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় । 'সপ্তপদী', 'অগ্নিপরীক্ষা', 'পথে হল দেরি', 'সবার ওপরে', 'সাগরিকা', 'শাপমোচন', 'কাল তুমি আলেয়া', 'বন পলাশীর পদাবলী', 'সন্ন্যাসী রাজা', 'নায়ক'-এর মতো জনপ্রিয় ছবিতে অসাধারণ অভিনয় করে বাঙালির মণিকোঠায় আজও রাজ করছেন মহানায়ক উত্ত কুমার ৷ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে রইল ইটিভি ভারতের শ্রদ্ধার্ঘ ৷