ETV Bharat / entertainment

'মৌ ছিল বাড়ির সোনার ডিম, তিলকের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হয়নি বাবা'; রত্না ঘোষাল - Mahua Roychoudhury - MAHUA ROYCHOUDHURY

In memory of Mahua Roychoudhury: মাত্র 26 বছর বয়সে অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয় জনপ্রিয় অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরীর ৷ খুব কম বয়সে সিনেজগতে দর্শকদের মন জিতে নিয়েছিলেন ৷ প্রেমিক তিলক চক্রবর্তীকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন ৷ তাঁর বিয়েতে ভূরিভোজের আয়োজন করেছিলেন খোদ উত্তম কুমার-সুপ্রিয়া দেবী ৷ কেমন ছিল মহুয়ার ব্যক্তিগত জীবন, স্মৃতির পাতা ওলটালেন অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল ৷ শুনল ইটিভি ভারত ৷

In memory of Mahua Roychoudhury
মুখোমুখি অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jul 21, 2024, 6:12 PM IST

Updated : Jul 21, 2024, 9:24 PM IST

কলকাতা, 21 জুলাই: সালটা 1958 সাল, তারিখ 24 সেপ্টেম্বর ৷ দমদমের এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম হয় শিপ্রা রায়চৌধুরীর ৷ বাবা নীলাঞ্জন রায়চৌধুরী ছিলেন একজন নৃত্যশিল্পী ৷ আর্থিক অনটনের কারণে খুব বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি শিপ্রা ৷ মিষ্টি-স্নিগ্ধ সেই মেয়েটি নজরে আসে পরিচালক তরুণ মজুমদারের ৷ ঘোরে ভাগ্যের চাকা ৷ সেদিনের শিপ্রা হয়ে ওঠেন সকলের কাছের মহুয়া রায়চৌধুরী ৷ তাঁর খ্যাতি ও সাফল্যের শিখরে পৌঁছনো খুব কাছ থেকে দেখেছেন অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল ৷ 22 জুলাই মহুয়া রায়চৌধুরীর মৃত্যুদিন ৷ 39 বছর পর আজও মহুয়ার সঙ্গে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত তরতাজা প্রবীণ অভিনেত্রী রত্না ঘোষালের স্মৃতিতে ৷

অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরীর স্মৃতিচারণে রত্না ঘোষাল (ইটিভি ভারত)

মহুয়ার সঙ্গে আলাপের ঘটনার স্মৃতিচারণ করছিলেন অভিনেত্রী রত্না ৷ তিনি বলেন, "মহুয়ার সঙ্গে আমার আলাপ ভীষণ সুন্দরভাবে ৷ তখন আমার 'পান্না-হীরে-চুনী' মুক্তি পেয়েছে ৷ দর্শকরা আমাকে চিনতে শুরু করেছে ৷ আমার ফ্ল্যাটের পাশে সুদর্শন নামে এক দাদা থাকতেন ৷ তিনি আবার সম্পর্কে ছিলেন মহুয়ার দাদা ৷ তিনি একদিন আমাকে জানান, মহুয়া আমার সঙ্গে দেখা করতে চান ৷ আমি জানালাম, নিয়ে আসতে ৷ মৌ এসে আমাকে জানায়, আমার ছবি ওর ভীষণ ভালো লেগেছে ৷ তাই তোমার সঙ্গে আলাপ করার ইচ্ছে হয়েছিল ৷ আমি ওকে প্রশ্ন করলাম, তুমি কী করো ? মহুয়া জানাল, পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ শেখে ৷ ভালো ভরতনাট্যম নাচতে পারে ৷"

প্রথম দেখার পর ফের দেখা হয় দুই অভিনেত্রীর, রত্নার কথায়, "মাসখানেক বাদে এক স্টুডিয়োপাড়ায় আবার মহুয়ার সঙ্গে দেখা হয় ৷ তখন মৌ বলে, তরুণ মজুমদার ওকে ডেকেছিলেন ৷ কিন্তু তখনও ফাইনাল হয়নি তনুদা মহুয়াকে ওনার ছবিতে নেবেন কি না ৷ এইভাবেই শুরু আমাদের সম্পর্ক ৷ আমাকে আর মৌ দিদি বলত না, মাটু বলে ডাকত ৷ বন্ধু বলো, ছোট বোন বলো, সেই থেকেই আমাদের সম্পর্কের সূত্রপাত ৷"

মহুয়ার সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন রত্না ঘোষাল ৷ অভিনেত্রীর প্রেমও দেখেছিলেন কাছ থেকে ৷ এই প্রসঙ্গে প্রবীণ অভিনেত্রী আরও বলেন, "নহবতে আমার সঙ্গে নাটকও করত মৌ ৷ শুটিং করতে গিয়ে তিলকের সঙ্গে প্রেম ৷ আমার সঙ্গেও আলাপ করায় ৷ অদ্ভুতভাবে তিলকের সঙ্গে আমি আবার প্রথম ছবি 'রাজা রামমোহন'-এ অভিনয় করি ৷ সেখানে রামমোহনের ছোটবেলার চরিত্রে দেখা যায় তিলককে ৷ তিলক-মহুয়া একে অপরকে খুব ভালোবাসত ৷"

অভিনেত্রী জানান, মহুয়ার বাবা কিন্তু তিলকের সঙ্গে বিয়ে দিতে চাননি ৷ তিনি বলেন, "মৌ ছিল ওদের বাড়ির সোনার ডিম ৷ মৌয়ের রোজগারে সংসার চলত ৷ বিয়ে হলে ওদের সংসার কীভাবে চলবে ৷ তাই সোনার ডিম কি কেউ ছেড়ে দিতে চায়! এরপর মৌ ঠিক করে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে ৷ আর উঠবে আমার বাড়িতে ৷ ম্যানেজ করার দায়িত্ব আমার ৷ তরুণ কুমার মানে বুড়োদা একসপ্তাহের মধ্যে রেজিস্ট্রি ম্যারেজের ব্যবস্থা করেন ৷ আমি ছিলাম কন্যাপক্ষ ৷ বুড়োদা ছিল পাত্রপক্ষ ৷ সেখান থেকে দাদা মানে উত্তম কুমারের বাড়ি যাই ৷ তিনি মহুয়াকে দেখে অবাক ৷ দাদা বলেন, না-খেয়ে যাওয়া যাবে না ৷ এরপর বেণুদি খাবারের ব্যবস্থা করেন ৷ সেইদিন ভীষণ আনন্দ করেছিলাম আমরা ৷" আরও নানান স্মৃতি অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল ভাগ করে নিলেন ইটিভি ভারতের সঙ্গে ৷

কলকাতা, 21 জুলাই: সালটা 1958 সাল, তারিখ 24 সেপ্টেম্বর ৷ দমদমের এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম হয় শিপ্রা রায়চৌধুরীর ৷ বাবা নীলাঞ্জন রায়চৌধুরী ছিলেন একজন নৃত্যশিল্পী ৷ আর্থিক অনটনের কারণে খুব বেশি পড়াশোনা করতে পারেননি শিপ্রা ৷ মিষ্টি-স্নিগ্ধ সেই মেয়েটি নজরে আসে পরিচালক তরুণ মজুমদারের ৷ ঘোরে ভাগ্যের চাকা ৷ সেদিনের শিপ্রা হয়ে ওঠেন সকলের কাছের মহুয়া রায়চৌধুরী ৷ তাঁর খ্যাতি ও সাফল্যের শিখরে পৌঁছনো খুব কাছ থেকে দেখেছেন অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল ৷ 22 জুলাই মহুয়া রায়চৌধুরীর মৃত্যুদিন ৷ 39 বছর পর আজও মহুয়ার সঙ্গে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত তরতাজা প্রবীণ অভিনেত্রী রত্না ঘোষালের স্মৃতিতে ৷

অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরীর স্মৃতিচারণে রত্না ঘোষাল (ইটিভি ভারত)

মহুয়ার সঙ্গে আলাপের ঘটনার স্মৃতিচারণ করছিলেন অভিনেত্রী রত্না ৷ তিনি বলেন, "মহুয়ার সঙ্গে আমার আলাপ ভীষণ সুন্দরভাবে ৷ তখন আমার 'পান্না-হীরে-চুনী' মুক্তি পেয়েছে ৷ দর্শকরা আমাকে চিনতে শুরু করেছে ৷ আমার ফ্ল্যাটের পাশে সুদর্শন নামে এক দাদা থাকতেন ৷ তিনি আবার সম্পর্কে ছিলেন মহুয়ার দাদা ৷ তিনি একদিন আমাকে জানান, মহুয়া আমার সঙ্গে দেখা করতে চান ৷ আমি জানালাম, নিয়ে আসতে ৷ মৌ এসে আমাকে জানায়, আমার ছবি ওর ভীষণ ভালো লেগেছে ৷ তাই তোমার সঙ্গে আলাপ করার ইচ্ছে হয়েছিল ৷ আমি ওকে প্রশ্ন করলাম, তুমি কী করো ? মহুয়া জানাল, পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ শেখে ৷ ভালো ভরতনাট্যম নাচতে পারে ৷"

প্রথম দেখার পর ফের দেখা হয় দুই অভিনেত্রীর, রত্নার কথায়, "মাসখানেক বাদে এক স্টুডিয়োপাড়ায় আবার মহুয়ার সঙ্গে দেখা হয় ৷ তখন মৌ বলে, তরুণ মজুমদার ওকে ডেকেছিলেন ৷ কিন্তু তখনও ফাইনাল হয়নি তনুদা মহুয়াকে ওনার ছবিতে নেবেন কি না ৷ এইভাবেই শুরু আমাদের সম্পর্ক ৷ আমাকে আর মৌ দিদি বলত না, মাটু বলে ডাকত ৷ বন্ধু বলো, ছোট বোন বলো, সেই থেকেই আমাদের সম্পর্কের সূত্রপাত ৷"

মহুয়ার সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন রত্না ঘোষাল ৷ অভিনেত্রীর প্রেমও দেখেছিলেন কাছ থেকে ৷ এই প্রসঙ্গে প্রবীণ অভিনেত্রী আরও বলেন, "নহবতে আমার সঙ্গে নাটকও করত মৌ ৷ শুটিং করতে গিয়ে তিলকের সঙ্গে প্রেম ৷ আমার সঙ্গেও আলাপ করায় ৷ অদ্ভুতভাবে তিলকের সঙ্গে আমি আবার প্রথম ছবি 'রাজা রামমোহন'-এ অভিনয় করি ৷ সেখানে রামমোহনের ছোটবেলার চরিত্রে দেখা যায় তিলককে ৷ তিলক-মহুয়া একে অপরকে খুব ভালোবাসত ৷"

অভিনেত্রী জানান, মহুয়ার বাবা কিন্তু তিলকের সঙ্গে বিয়ে দিতে চাননি ৷ তিনি বলেন, "মৌ ছিল ওদের বাড়ির সোনার ডিম ৷ মৌয়ের রোজগারে সংসার চলত ৷ বিয়ে হলে ওদের সংসার কীভাবে চলবে ৷ তাই সোনার ডিম কি কেউ ছেড়ে দিতে চায়! এরপর মৌ ঠিক করে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করবে ৷ আর উঠবে আমার বাড়িতে ৷ ম্যানেজ করার দায়িত্ব আমার ৷ তরুণ কুমার মানে বুড়োদা একসপ্তাহের মধ্যে রেজিস্ট্রি ম্যারেজের ব্যবস্থা করেন ৷ আমি ছিলাম কন্যাপক্ষ ৷ বুড়োদা ছিল পাত্রপক্ষ ৷ সেখান থেকে দাদা মানে উত্তম কুমারের বাড়ি যাই ৷ তিনি মহুয়াকে দেখে অবাক ৷ দাদা বলেন, না-খেয়ে যাওয়া যাবে না ৷ এরপর বেণুদি খাবারের ব্যবস্থা করেন ৷ সেইদিন ভীষণ আনন্দ করেছিলাম আমরা ৷" আরও নানান স্মৃতি অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল ভাগ করে নিলেন ইটিভি ভারতের সঙ্গে ৷

Last Updated : Jul 21, 2024, 9:24 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.