কলকাতা, 22 জুলাই: সালটা 1985। অকালে মৃত্যুর হয় তৎকালীন বাংলার প্রথমসারির নায়িকা মহুয়া রায়চৌধুরীর। কেউ বলেন গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন তিনি ৷ আবার কেউ বলেন, স্বামী তিলক চক্রবর্তী নাকি খুন করেছেন অভিনেত্রীকে ৷ আবার কারও মত, নিছকই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় অভিনেত্রীর। সত্যিটা কী? অভিনেত্রী মহুয়ার প্রয়াণ দিবসে তাঁর মৃত্যু রহস্যের নেপথ্যের কাহিনী ইটিভি ভারতের কাছে খোলসা করলেন কাছের মানুষ রত্না ঘোষাল ৷
অভিনেত্রী বলেন, "ওদের বিয়ের সাক্ষী ছিলাম আমি আর বুড়ো দা মানে তরুণ কুমার। পালিয়ে বিয়ে করেছিল ওরা। পালিয়ে আমার বাড়িতে ছিল। সেই সময় ওর বাবা খুব ঝামেলা করেছিল ৷ তারপর মহুয়া বিয়ে করে তিলকের বাড়িতে হেদুয়ায় চলে যায়। এরপর আবার দক্ষিণ কলকাতায় চলে আসে। ওদের মধ্যে ঝগড়া যেমন ছিল তেমনই ভাব ছিল। মৌ কথায় কথায় রেগে যেত। বিয়ের আগেও গলায় দড়ি দিতে গিয়েছিল।
অভিনেত্রী রত্না আরও বলেন, "ওর দিদি ওকে বাঁচায়। তিলকের সঙ্গে বিয়ের পর একবার ঝগড়া করে ক্ষুর দিয়ে হাত কেটে ফেলেছিল। একবার নতুন গাড়ি কিনে একা চালিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল মৌ। তখনও গাড়ি চালাতে শেখেনি। স্বামী-স্ত্রী'র ঝগড়াতে প্রায়ই এমন কাণ্ড ঘটাত মৌ। আবার দু'জনে মিলে যেত। এভাবেই চলত। আমরা কত আড্ডা মারতাম। মৌ মানুষটা বড্ড ভালো ছিল। তিলকও ভালো ছিল। তাই তিলক ওকে মারার চেষ্টা করেছে এটা মেনে নেওয়া যায় না।"
রত্না ঘোষালের কাছ থেকেই জানা যায়, যেদিন মহুয়া রায়চৌধুরীর গায়ে আগুন লেগে যায় সেদিন প্রচুর মদ্যপান করেছিলেন তিনি। গভীর রাতে স্বামী তিলক এবং ছেলে গোলা ঘুমিয়ে পড়লেই নাকি ওই কাণ্ড ঘটান নায়িকা। এরপর অভিনেত্রীকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানে দশদিন লড়াই শেষে 22 জুলাই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। সেই সময়ে ইন্ডাস্ট্রির জনৈক নায়িকার মাকে রত্না ঘোষাল বলতে শুনেছিলেন , "মুখটা পুড়ে গিয়েছে নাকি আছে।..." রত্না ঘোষালের মতে, একটা মানষের মন কতটা নিচু হলে এমন কথা বলতে পারেন। তাঁর কথায়, মহুয়া রায়চৌধুরী আজ বেঁচে থাকলে অনেকেরই নায়িকা হওয়া হত না।