হায়দরাবাদ, 16 ডিসেম্বর: কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী ইলাইয়ারাজাকে মন্দিরের গর্ভগৃহে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ৷ তামিলনাড়ুর শ্রীভিল্লিপুথুর অন্ডাল মন্দিরের গর্ভগৃহে তাঁকে প্রবেশে বাধা দেওয়া নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে ৷ সোমবার এই খবর ছড়িয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়ায় ৷ এদিকে স্বয়ং দক্ষিণী শিল্পী ঘটনাটি অস্বীকার করেছেন ৷ মন্দির কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, প্রবেশের ব্যাপারে কোনও বৈষম্য নেই ৷ সবার জন্য একই নিয়ম।
সোশাল মিডিয়ায় তামিল ভাষায় পোস্ট করে সোমবার শিল্পী জানান, "কয়েকজন ব্যক্তি আমার সম্পর্কে ভিত্তিহীন গুজব ছড়াচ্ছেন ৷ আমি সবসময় সবকিছুর উপরে আত্মসম্মানকে মূল্য দিয়ে থাকি ৷ এর সঙ্গে কোনও আপস করি না ৷ তারা যেভাবে মিথ্যা সংবাদ রটিয়ে বেড়াচ্ছেন তাতে মনে হচ্ছে সেটাই সত্যি ৷ আমি আমার অনুগামীদের এবং জনসাধারণকেও এই গুজব বিশ্বাস না করার অনুরোধ জানাব ৷" কোনও বিষয়ের কথা আলাদা করে না লিখলেও তিনি যে মন্দিরে প্রবেশ ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক নিয়েই মন্তব্য করেছেন তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই।
সূত্রের খবর, গত 15 ডিসেম্বর সঙ্গীত শিল্পী ইলাইয়ারাজা তামিলনাড়ুর ভিরুধুনগর জেলার শ্রীভিল্লিপুথুর অন্ডাল মন্দিরে গিয়েছিলেন ৷ তাঁর সঙ্গীত 'দিব্যা পসুরম'-এর প্রকাশের আগে মন্দির দর্শনে যান ইলাইয়ারাজা ৷ সঙ্গে ছিলেন দুই বিখ্যাত ধর্মগুরু। ধর্মগুরুদের মন্দিরে সাদরে অভ্যর্থনা জানানো হয় ৷ মন্দিরের গর্ভগৃহে দেবতা উৎসবার মূর্তি রয়েছে ৷ সেটাই দেবতার বাসস্থান বলে মনে করা হয় ৷
ইলাইয়ারাজা গর্ভগৃহে ঢুকতে যাচ্ছিলেন, তখনই তাঁকে নাকি মন্দিরের তরফে জানানো হয়, সেখানে শুধুমাত্র পুরোহিতরাই যেতে পারেন ৷ এই বিষয়ে মন্দিরের এক আধিকারিক সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, "মণ্ডপমের প্রবেশ পথেই ইলাইয়ারাজাকে আটকে দেওয়া হয় ৷ সেখান থেকেই তিনি দেবতাকে শ্রদ্ধা জানান ৷ মন্দিরে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে পূর্ণ মর্যাদায় স্বাগত জানানো হয়েছে ৷"
পরে ইলাইয়ারাজার এই দর্শন ঘিরে বিতর্ক প্রসঙ্গে অন্ডাল মন্দিরের কর্তৃপক্ষের এগজিকিউটিভ আধিকারিক সক্কারি আম্মাল জানান, এই প্রথা মন্দিরের চিরাচরিত ৷ এতে কোনও বৈষম্য বা ভেদাভেদ নেই ৷ কোনও ব্যক্তি তিনি যে শ্রেণিতেই অবস্থার করুন না কেন সবার জন্যই এক নিয়ম ৷
এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, সঙ্গীত শিল্পী অর্থ মণ্ডপমের সিঁড়িতে পা রেখেছিলেন। ঠিক সে সময় তাঁকে বলা হয়, তিনি ওখান থেকেই দেবতার দর্শন করতে পারবেন ৷ ইলাইয়ারাজা তাতে রাজি হন ৷ মন্দিরের চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী পুরোহিত এবং মদাথিপাথিসরাই শুধু গর্ভগৃহে প্রবেশ করতে পারেন ৷ ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্য অন্ডাল মন্দির বিখ্যাত ৷ সপ্তম শতকের তামিল কবি-সন্ন্যাসী অন্ডাল এই মন্দিরের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন বলে কথিত আছে ৷