মুম্বই, 19 সেপ্টেম্বর: বম্বে হাইকোর্টে মুখ পুড়ল সিবিএফসির ৷ 'এমারজেন্সি' ছবির মুক্তি নিয়ে প্রশ্নের মুখে সেন্সর বোর্ডের ভূমিকা ৷ বৃহস্পতিবার আদলতের তরফে একটি ছবি বানানোর ক্ষেত্রে সৃজনশীল স্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছে ৷ বলা হয়েছে সেন্সর বোর্ড কেবলমাত্র সম্ভাব্য আইনশৃঙ্খলা সমস্যার ভয়ে একটি ছবির শংসাপত্র আটকে রাখতে পারে না ৷
বিচারপতি বিপি কোলাবাওয়াল্লা এবং ফিরদোশ পুনিওয়াল্লার সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে মামলা ওঠে ৷ যেখানে কঙ্গনা রানাওয়াতের ছবি 'এমারজেন্সি'-কে শংসাপত্র দিতে দেরি করার বিষয়ে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন (সিবিএফসি)- এর কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আদালত। এদিন সেন্সর বোর্ডকে 25 সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ এদিন সিবিএফসি-র উদ্দেশ্যে বিচারপতিরা প্রশ্ন তোলেন, বোর্ড কি দেশের জনগণকে এতটাই বোকা ভেবেছেন যে একটা সিনেমা দেখানো হলে তা সমালোচনা বা সমস্যা তৈরি করতে পারে ৷
এরপর বিচারপতিরা পিটিশন দাখিল যাঁরা করেছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে জানান, সার্টিফিকেট দেরিতে দেওয়ার পিছনে রাজনৈতিক মোটিভ রয়েছে ৷ কঙ্গনা রানাওয়াত নিজে একজন বিজেপি সাংসদ ৷ ফলে ক্ষমতাসীন দল তার নিজের সদস্যের বিরুদ্ধে কাজ করবে কি না, সেই প্রশ্নও ওঠে ৷ উল্লেখ্য, রানাওয়াত এই ছবির পরিচালনা, সহ-প্রযোজনার পাশাপাশি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির চরিত্রে অভিনয় করেছেন ৷ তিনি সিবিএফসি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে, বোর্ডের তরফে তাঁর ছবি মুক্তির জন্য সার্টিফিকেট দিতে দেরি করছে ৷
এদিন বিচারপতিরা বলেন, "তোমাদের (সিবিএফসি) যে কোনও একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হবে ৷ তোমাদের সেই সাহস থাকতে হবে এটা বলার যে, এই ছবি মুক্তি পাবে না ৷ তাহলে আমরা তোমাদের সাহসিকতার প্রশংসা অনন্ত করতে পারব ৷ আমরা চাই না সিবিএফসি আত্মরক্ষার আসনে বসুক ৷"
মামলাটি জি এন্টারটেইনমেন্ট এন্টারপ্রাইজের দায়ের করা একটি পিটিশনের শুনানি ছিল ৷ যেখানে কোর্টের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছিল, যাতে সেন্সর বোর্ড ছবিকে সার্টিফিকেট দেয় ৷ মূলত 6 সেপ্টেম্বর এমারজেন্সি মুক্তির তারিখ ঠিক করা ছিল ৷ কিন্তু ট্রেলার মুক্তির পর ছবির মুক্তিকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয় ৷ বিশেষ করে শিরোমণি আকালি দলের মতো শিখ সংগঠনগুলির তরফে অভিযোগ ওঠে, ট্রেলারে শিখ সম্প্রদায়ের ভাবাবেগকে আঘাত করা হয়েছে ৷ পাশাপাশি, ছবিতে ঐতিহাসিক তথ্যগুলিকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে ৷
এদিন বিচারপতি কোলাবাওয়ালা বলেন, "এইসব বন্ধ করতে হবে ৷ নাহলে আমরা সৃজনশীল স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে খর্ব করতে বাধ্য হব ৷ আমরা বুঝতে পারছি না মানুষ কেন এত সংবেদনশীল । আমার সম্প্রদায়কে নিয়ে সিনেমায় সব সময় মজা করা হয়। আমরা কিছু বলি না। আমরা শুধু হেসেছি এবং এগিয়ে চলেছি ৷" এরপর বোর্ডের তরফে দুই সপ্তাহ সময় বাড়ানোর আবেদন জানানো হলেও আদালতের তরফে 25 সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷
এদিন বিচারপতি আরও বলেন, "অভিনেত্রী নিজে একজন এই ছবির সহ-প্রযোজক ৷ তিনি আবার শাসক দলের সদস্য ও বিজেপি সাংসদও বটে ৷ তাহলে আপনারা বলতে চাইছেন, শাসক দল তাদের নিজের সদস্যের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছে ?" জি এন্টারটেইনমেন্টের আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে যে সিবিএফসি ইতিমধ্যে ছবির শংসাপত্র তৈরি করে রাখলেও তা ইস্যু করার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করেছে ৷