হায়দরাবাদ, 10 ডিসেম্বর: রাজনীতির আঙিনায় যখন উত্তপ্ত দেশ তখন ওপার বাংলা-এপার বাংলায় প্রেমের মরসুম ৷ উত্তেজনা-কূটনীতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে ভালোবাসার উন্মাদনা ৷ স্পষ্ট ভাষায় জানান দিল এই ভালোবাসা ভীরু নয় ৷ মনের মধ্যে দামাল প্রেম চেপে রাখলেন না বাংলাদেশের অভিনেত্রী সানজানা মেহরান ৷ এপার বাংলার সুদর্শন অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যের প্রতি সাহসী প্রেম প্রকাশ করেছেন সানজানা ৷ সত্যি, বুকের পাটা আছে বটে ৷
ইটিভি ভারতকে বাচিক শিল্পী তথা মঞ্চাভিনেত্রী সানজানা বলেন, "যে নারীরা বিবাহিত তাঁদের কাছে আরও বেশি কষ্টকর কাউকে ভালোবাসলে, ভালোলাগলে বলতে পারে না ৷ সমাজের ভয়ে, পরিবারের ভয়ে অকপটে ভালোবাসি বলতে চায় না ৷ ভালোবাসা পাপের নয় ৷ প্রেম-ভালোবাসা সুন্দর ৷ সুন্দরের চোখ দিয়ে যদি আমি দেখি এটা কোনও অন্যায় নয় ৷ দুনিয়া জানুক না আমি একজনকে ভালোবাসি, ক্ষতি কি?"
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার লাইন তুলে বলা যায়, '...তোমার সাথে জাগতে সে চায় আনন্দে পাগল।...' সানজানা বিবাহিত, তিন সন্তানের মা ৷ তারপরেও অনির্বাণের প্রতি ভালোবাসার প্রকাশে দ্বিধাবোধ করেননি ৷ তাঁর স্বামীও স্ত্রীর এই ভালোবাসার অনুভূতিকে প্রশ্রয় দিয়েছেন ৷ ইটিভি ভারত চেষ্টা করেছে, সানজানার ভালোবাসার অনুভূতিগুলোকে অনির্বাণেরই ছবির গান ধার করে ব্যক্ত করতে ৷ সেই গানের কথার সঙ্গে সানজানা মিলিয়েছেন নিজের ভালোবাসার অনুভূতিকে ৷
- গান- আমি বাউণ্ডুলে ঘুড়ি যে আমাকে বাসবে ভালো, তার আকাশেই উড়ি (দশম অবতার)
সানজানা বলেন, "আমিও আসলে একটু বাউণ্ডুলে ৷ যদিও আমি বিবাহিত ৷ তিনটে সন্তান রয়েছে ৷ তাও এই বাউণ্ডুলেপনা এতটুকু কমেনি ৷ আমার মাঝে মধ্যে মনে হয় এই গানগুলো যেন শুধুমাত্র আমার জন্যই লেখা ৷"
- গান- কিচ্ছু চাইনি আমি আজীবন ভালোবাসা ছাড়া... (শাহজাহান রিজেন্সি)
এই গানের কথা ধরে মনের ভাব প্রকাশ করতে গিয়ে সানজানা বলেন "এই গানটা শুনলে মনে হয় এটা আমার জন্যই গাওয়া ৷ আমিও অনির্বাণের কাছ থেকে ভালোবাসা ছাড়া কিচ্ছু চাই না ৷"
- ছিলে বন্ধু সাতজন্মের তুমি কি আমার (ফাইনালি ভালোবাসা)
সানজানার উত্তর- "বন্ধুত্ব সাতজনম কেন, জনম জনম ধরে রাখতে হয় ৷ তবে ধরে রাখা মুখের কথা নয় ৷ এই বন্ধুত্ব ধরে রাখতে পারলে পৃথিবীটা অন্যরকম হয়ে যাবে ৷ অনির্বাণের সঙ্গে আমার সেই বন্ধুত্ব অটুট থাক ৷"
- একে একে ঘর ভাঙে, কাছে ডাকে জলরাশি, তুমি আছ অনুভবে, দ্রুত পায়ে সরে আসি (ড্রাকুলা স্যার)
সানজানা- আমরা অনেক কিছু উপলব্ধি করতে পেরেও ছেড়ে দিই ৷ আমি অনির্বাণকে অনুভব করতে পারি ৷ আমার উপলব্ধিতে বলে যে আমি তাঁকে ভালোবাসি ৷ আমি তাঁকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি ৷ একটা সময় ওঁর সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করব এমন স্বপ্নও দেখি ৷ এই অনুভূতিটা অনেক জরুরী ৷ না হলে মানুষ হয়ে ওঠা হয় না ৷
- ওই চাঁদ এগিয়ে এসেছে কাছে, চুপি সারে ভালোবাসা জারি আছে (তালমার রোমিও জুলিয়েট)
সানজানা- এই গানের কথা শুনে হেসে ওঠেন ৷ তিনি বলেন, "অনির্বাণকে পাওয়া মানে চাঁদ পাওয়া ৷ ওঁর সঙ্গে একটু কথা বলতে চাই । পারলে ওঁর সঙ্গে কাজও করতে চাই ৷ কাজ নাই বা করলাম, দেখা করলাম, হাতটা ধরে বসে থাকলাম সেটাই আমার কাছে চাঁদ পাওয়ার মতো ৷ আর এভাবে না পেলেও চুপি সারে ভালোবেসে যাব ৷"
অনেকেই বলেন, বিবাহিত মহিলা বা পুরুষদের মধ্যে ভালোবাসার তীব্রতা বা আকাঙ্খা একটু বেশি হয় ৷ এমনটা শুনে সানজানা বলেন, "একটা বয়সের পরে ভালোবাসার উপলব্ধি আরও বেশি হয় ৷ নারী হোক পুরুষ হোক বা বিবাহিত, একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর গিয়ে বুঝতে পারে আসল ভালোবাসাটা কি ৷"
সানজানা এরপর জানান, ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার দরুণ রোমান্টিক দৃশ্যে অভিনয় করতে গেলে তিনি কল্পনায় ভেবে নেন অনির্বাণকে ৷ অভিনেত্রী বলেন, "আমার ব্যাকগ্রাউন্ড থিয়েটার ৷ মঞ্চে সহ-অভিনেতার সঙ্গে রোমান্টিক দৃশ্য করার সময় কল্পনা করি আমার সঙ্গে রয়েছে অনির্বাণ ৷ এই পাগলামির জন্য মঞ্চে পরিচালকের কাছে শুনতে হয় যে সারাক্ষণ আমার মাথার মধ্যে অনির্বাণ ঘোরে ৷"
যদি কখনও সামনে সত্যিই অনির্বাণ চলে আসেন প্রথমেই কী করবেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রেমিক সানজানা বলেন, "আমি অনেকভাবে ওঁকে নিয়ে ভাবি ৷ যদি কখনও সুযোগ হয়, ভাগ্যে থাকে আমি প্রথমেই ওনাকে জড়িয়ে ধরব ৷ জানি না কতক্ষণ জড়িয়ে রাখতে পারব ৷ একটা টাইট হাগ করব ৷" সানজানা জানান, অনির্বাণের কাছে যদি ভক্তের এই ভালোবাসার কথা পৌঁছে যায় এবং প্রতিক্রিয়া দেয় তাহলে তা জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া হবে ৷
এই মুহূর্তে ভারত-বাংলাদেশ ঘিরে যে উত্তপ্ত পরিবেশ হয়ে রয়েছে সেখানে সানজানা-অনির্বাণের হাত ধরে যদি ভালোবাসার উষ্ণতা ছড়িয়ে পড়ে ক্ষতি কী?