চুঁচুড়া, 23 নভেম্বর: 'লাল পাহাড়ির দেশ' ছেড়ে পরপারে পাড়ি দিয়েছেন কবি অরুণ চক্রবর্তী ৷ শুক্রবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে 78 বছর বয়সী কবির ৷
ভূমির বিখ্যাত গান 'লাল পাহাড়ির দেশে যা' ৷ সেই গান লিখেছিলেন চুঁচুড়া কবি অরুণ চক্রবর্তী। প্রথম দিকে কিছুটা বিতর্ক থাকলেও পরে তিনি স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। রাত একটা নাগাদ চুঁচুড়া ফার্ম সাইড রোডে তাঁর 'সোনাঝুড়ি' নিজের বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপরই স্থানীয় এক চিকিৎসক এসে জানায় তিনি প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল 78 বছর। কবির স্ত্রী দুই ছেলে বৌমা ও নাতিরা রয়েছেন। কবিকে শ্রদ্ধা জানাতে আসেন স্থানীয় বিধায়ক থেকে শহরের বইমেলা কমিটি ও বিশিষ্টজনরা।
কবির বৌমা সুদেষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, "গতকাল কলকাতার মোহরকুঞ্জে জঙ্গল মহল উৎসবে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। একটু ঠান্ডা লেগেছিল। ফুসফুসে সমস্যা ছিল করোনার পর থেকে। হঠাৎই কাল 12টার পর অসুস্থতা বোধ করেন। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা করি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে ডাকা হয়। পরে স্থানীয় চিকিৎসক এসে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান। জাতীয় আন্তর্জাতিক স্তরে সকলের কাছেই পরিচিত তিনি। জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।"
অরুন চক্রবর্তী শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করে হিন্দুস্থান মোটরে চাকরি করতেন। তখন থেকেই লেখালেখি করতেন। চাকুরী জীবন তাঁর ভালো লাগত না। মাঝে মধ্যেই মাটির টানে বাঁকুড়া পুরুলিয়ার চলে যেতেন। অসংখ্য কবিতা রয়েছে কবি অরুন চক্রবর্তীর। তবে 'লাল পাহাড়ির দেশে যা, রাঙা মাটির দেশে যা' কবিতা তাঁকে অন্য পরিচিতি দেয়। যা পরে গান হয়ে বিভিন্ন ভাষায় দেশে বিদেশে পরিচিতি পায়।
বাংলার লোক সংস্কৃতি নিয়ে চর্চা করতেন। পাহাড় জঙ্গল আদিবাসী এলাকায় ঘুরতেন। নানা ধরনের আদিবাসী ও তুসুকে নিয়ে অসংখ্য গান লিখেছেন তিনি। কবিতার জন্য কবি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। মাথায় লাল টুপি ও লাল কাপড়ের জ্যাকেট পরে ও ঝোলা ব্যাগ নিয়ে স্বভাব সিদ্ধ ভঙ্গিতে দেখা যেত তাঁকে। ছোটোদের দেখলেই চকলেট দিতেন। পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, কবির মরদেহ বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে চুঁচুড়া রবীন্দ্র ভবনের মুক্ত মঞ্চে শায়িত থাকবে। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন তাঁর গুণগ্রাহীরা। পরে শ্যাম বাবুর ঘাটে হবে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।