পুনে, 27 জানুয়ারি: আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন বলিউডের মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন ৷
শনিবার সিম্বায়োসিস চলচ্চিত্র উৎসবে ছাত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "প্রযুক্তিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে ৷ শুধু চিপ নয়, ফিল্ম এডিট করা ও অন্যান্য ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে ৷ উদ্বেগের বিষয় হল কোনও উদ্ভাবিত প্রযুক্তির আয়ুই দুই-তিন মাসের বেশি নয় । একটি বিষয় অত্যন্ত উদ্বেগের, তা হল এআই । আমাদের সবাইকে এখন ফেস ম্যাপিংয়ের শিকার করা হচ্ছে, আমাদের পুরো শরীরকে ম্যাপ করা হয় এবং যে কোনও সময়ে তা আলাদা আলাদা করে রেখে ব্যবহার করা হয় ৷ গতকাল মুম্বইয়ের একটি জনপ্রিয় স্টুডিয়োতে হলিউডের প্রবীণ টম হ্যাঙ্কসের উপর ফেস ম্যাপিংয়ের একটি প্রদর্শনী ছিল ৷ আমাকে টম হ্যাঙ্কসের একটি ক্লিপ দেখানো হয় এবং সেই একই ক্লিপ দেখানো হয় 20 বছর বয়সি টম হ্যাঙ্কসকে নিয়ে ৷"
অমিতাভ আরও বলেন, "অনেকে আপত্তি তুলেছেন ৷ আমি শুনেছি হলিউডে প্রযোজক ও পরিচালকরা ফেস ম্যাপিং করেন বলে শিল্পীরা কার্যত কর্মবিরতি করছেন ৷ তাঁরা বলছেন, এটি আমাদের সম্পত্তি এবং আমরা যখন চাই তখনই এটি ব্যবহার করব । সুতরাং, এমন একটি সময় আসবে যখন সিম্বায়োসিস আমাকে ব্যক্তিগতভাবে ফোন না করে আমার এআইকে ফোন করবে ৷"
স্ত্রী জয়া বচ্চনকে নিয়ে পুনের সিম্বায়োসিস ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সিম্বায়োসিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিগ বি ৷ দেশের নৈতিকতা পরিবর্তনের জন্য চলচ্চিত্র জগৎকে যে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়, এ দিন তা নিয়েও সরব হন অমিতাভ ৷ তাঁর দাবি, সমাজই চলচ্চিত্রের অনুপ্রেরণা ৷
তাঁর কথায়, "অনেক সময়ই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয় ৷ অভিযোগ করা হয় যে, আপনারাই সমাজের নৈতিকতা পরিবর্তনের জন্য দায়ী ৷ আমি নিশ্চিত যে আপনারা জয়াকে চেনেন, যিনি আনুষ্ঠানিকভাবে শিখেছেন যে, একটা প্রতিষ্ঠান এই সত্যটি মানে যে গল্প এবং চলচ্চিত্রগুলি এমন অভিজ্ঞতা থেকে তৈরি হয় যা আমরা প্রকৃতিতে, পৃথিবীতে, দৈনন্দিন জীবনে লক্ষ্য করি এবং এটিই আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে ।"
এ প্রসঙ্গে তাঁর বাবা তথা একজন বিশিষ্ট কবি ও লেখক হরিবংশ রাই বচ্চনের কথা স্মরণ করেন অমিতাভ ৷ তিনি বলেন যে, তাঁর বাবা বহু হিন্দি ফিল্ম বারবার দেখতেন ৷ বিগ বি-র কথায়, "সিনেমার নিজেরই শক্তি আছে । আমার বাবার জীবনের শেষ বছরগুলোতে, তিনি প্রতি সন্ধ্যায় টেলিভিশনে ক্যাসেটে একটি করে ছবি দেখতেন । অনেকবার তিনি একই ছবি দেখতেন । আমি প্রতিদিন সন্ধ্যায় তাঁকে জিজ্ঞেস করতাম, 'তুমি এই ছবি দেখেছো, তুমি বিরক্ত হও না ? তিনি বলতেন, 'আমি তিন ঘণ্টার মধ্যে পোয়েটিক জাস্টিস দেখতে পাব, যেটা তুমি বা আমি সারা জীবনে দেখতে পাব না ।' এবং এটিই হল সেই শিক্ষা যা সিনেমা সবাইকে দেয় ।"
আরও পড়ুন: