কলকাতা, 17 নভেম্বর: রবীন্দ্র সদনে আজ, রবিবার মঞ্চস্থ হতে চলেছে অলোকানন্দা রায়ের 'বাল্মিকী প্রতিভা'র 100তম এবং অন্তিম পারফরম্যান্স । 2008 সালের 15 নভেম্বর সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে প্রথম আত্মপ্রকাশ 'বাল্মিকী প্রতিভা'র । এই প্রযোজনাটি বন্দিদের সামাজিক উপলব্ধিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে, তাঁদের লুকনো প্রতিভা এবং সম্ভাবনার কথা বলেছে ।
রামায়ণ রচয়িতা ঋষি বাল্মিকী মুনি আগে ছিলেন দস্যু রত্নাকর । তাঁর রত্নাকর থেকে বাল্মিকীতে রূপান্তরের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই 'বাল্মিকী প্রতিভা' লেখেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । আর সেটিকেই মঞ্চে এতকাল ধরে পরিচালনার মাধ্যমে মঞ্চে উপস্থাপন করে আসছেন অলোকানন্দা রায় । পরিবেশনে রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারের বন্দিরা ।
প্রেসিডেন্সি, মেদিনীপুর এবং আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারের বন্দি, অফিসার ও প্রাক্তন এডিজি বি ডি শর্মার সঙ্গে মিলিত হয়েই এই প্রযোজনা অলোকানন্দার । এই সফরের আরেক নাবিক এডিজি বি.ডি শর্মা । তিনি পোশাক, মঞ্চ এবং গান তৈরি করেন । মার্শাল আর্ট, লোকনৃত্য এবং ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের মেলবন্ধন রয়েছে 'বাল্মীকি প্রতিভা'তে । এই গীতিনাট্যটি শিল্পের রূপান্তরকারী শক্তিকে উজ্জীবিত করে ।
শিল্পীর কথায়, "বাল্মীকি প্রতিভার 100তম শো ভারতীয় নৃত্য থিয়েটারে একটি মাইলফলক লিখবে । সামাজিক পরিবর্তনের উপর নৃত্য, প্রেম, সমবেদনা এবং সহানুভূতির প্রভাব উদযাপন করে এই 'বাল্মিকী প্রতিভা'।"
কারাবন্দি জীবন থেকে উত্তরণ ঘটাতে কয়েকশো আসামির 'মা' হয়ে উঠেছেন নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায় । প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারের বন্দিদের নাচ শেখাতে গিয়ে গারদের জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন তিনি । মহিলা সংশোধনাগার তখনও তৈরি হয়নি । অলোকানন্দা এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, "ওরা যদি কোনও ভুল করে থাকে, তার শাস্তি ওরা পাচ্ছে । সাজা পাওয়ার পরও তো মানুষের উত্তরণ হওয়া দরকার । আর সেই সুযোগটা সমাজই করে দিতে পারে ।"
অলোকানন্দার আসামিদের উত্তরণ নিয়ে এই কাজটিকে অনেকেই 'কালচারাল থেরাপি' বলে আখ্যায়িত করেন । কিন্তু তিনি একে বলেন, 'লাভ থেরাপি'।