ETV Bharat / business

50 বছরে দার্জিলিংয়ের চায়ের সর্বনিম্ন উৎপাদন, পুনরুজ্জীবনে প্রয়োজন কেন্দ্রীয় সাহায্য

Darjeeling Tea Industry: রফতানির চাহিদা কমে যাওয়া ও দেশের বাজারে বিক্রি হ্রাসের জেরে সংকটের দার্জিলিংয়ের চাহিদা ৷ পরিস্থিতি সামলাতে সরকারি সাহায্যের প্রয়োজন৷ এই নিয়ে লিখেছেন এস সরকার ৷

Darjeeling Tea
Darjeeling Tea
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Feb 7, 2024, 6:05 PM IST

নয়াদিল্লি, 7 ফেব্রুয়ারি: দার্জিলিং চা, যা চায়ের শ্যাম্পেন হিসাবে বিবেচিত হয়, তা অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে ৷ 2023 সালে এই চায়ের উৎপাদন 6.3 মিলিয়ন কেজিতে নেমে গিয়েছে ৷ যা 50 বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। দার্জিলিং জেলার 87টি চা বাগানের অর্ধেক বিক্রির মুখে রয়েছে ৷ জাপান একসময় দার্জিলিং চায়ের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল ৷ তারা এখন এই চায়ের আমদানি কমিয়ে দিয়েছে । রফতানিকারক ও দার্জিলিং চা-বাগানকারীরা জানিয়েছেন যে দার্জিলিং চা শিল্প আইসিইউতে রয়েছে এবং এটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অবিলম্বে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন ।

দার্জিলিং চা শিল্প 2017 সালে পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা দ্বারা আন্দোলনের সময় যে আঘাতের সম্মুখীন হয়েছিল, তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি ৷ প্রায় চার মাস ধরে বাগানগুলি বন্ধ ছিল এবং বিদেশি ক্রেতারা চলে গিয়েছিল ৷ কোভিড মহামারী দার্জিলিং চা বাগানের পরিস্থিতি আরও সঙ্গীন করে দিয়েছে । চা বাগানের মালিকরা আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছেন এবং তাঁরা চা বাগানের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থর যোগান দিতে পারেননি ৷ এখনও পর্যন্ত দার্জিলিং চা শিল্প কেন্দ্র থেকে কোনও পুনরুজ্জীবন প্যাকেজ পায়নি ৷ যদিও তারা এর জন্য একটি প্রস্তাব সরকারের কাছে জমা দিয়েছে ।

নেপালের সস্তা চা আমদানি দার্জিলিংয়ের চা শিল্পের সংকটকে আরও গভীর করেছে ৷ কারণ, এই শিল্প আগেই কম উৎপাদন, রফতানির বাজারে কম চাহিদা ও কমদামের জন্য আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে । বাণিজ্য সূত্র জানিয়েছে যে নেপাল দার্জিলিংয়ের চা রফতানির বাজারেও প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে ৷ এখন তারা সরাসরি জার্মানি ও জাপানের মতো দেশে চা রফতানি করছে । দার্জিলিংয়ের চা উৎপাদকরা উদ্বিগ্ন যে দেশীয় গ্রাহকরা নেপালের চা-কে দার্জিলিং চা হিসাবে পান করছেন ৷ ফলে দেশেও তাদের বাজারে খারাপ প্রভাব পড়ছে ৷

গোল্ডেন টিপস কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাধব সারদা বলেন, “নেপালের ইলাম জেলা ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং-এর আবহাওয়া একই রকম । এটি একটি কাল্পনিক লাইন যা দু’টিকে বিভক্ত করে । ইলামে উৎপাদিত চা প্রায় দার্জিলিংয়ের মতোই । তাই ইলাম থেকে প্রচুর চা ভারতে প্রবেশ করছে এবং দেশীয় বাজারে দার্জিলিং চা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে । এবং আয়তন প্রতি বছর ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে ।”

সারদা আরও বলেন, নেপালি চা দার্জিলিং চায়ের তুলনায় প্রায় 35-50 শতাংশ কম । এগুলি দার্জিলিং চায়ের সঙ্গে মিশ্রিত হয় এবং দার্জিলিং চা হিসাবে বিক্রি হয়৷ ক্রেতারা দার্জিলিং চা এবং নেপালি চায়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না । এমনকি চা বিশেষজ্ঞরাও কখনও কখনও উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যর্থ হন ৷”

দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা সন্দীপ মুখোপাধ্য়ায় বলেন, “দার্জিলিং-এর 87টি চা বাগানের মধ্যে 7টি স্থায়ীভাবে বন্ধ রয়েছে । তাদের অনেকেই কোনও না কোনোভাবে বেঁচে আছেন এবং শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করতে পারছেন না । দার্জিলিং শিল্পের ভাগ্য অনিশ্চিত এবং আমরা জানি না আর কতদিন বাগানগুলি তাদের কাজ চালিয়ে যাবে ।”

ভারতীয় চা রফতানিকারক সমিতির চেয়ারম্যান আংশুমান কানোরিয়া বলেন, “দার্জিলিং চা শিল্প আইসিইউতে রয়েছে এবং এ বছর রফতানি কম হবে । দার্জিলিং চা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার উভয়েরই অবিলম্বে পদক্ষেপ করা উচিত ৷”

আরও পড়ুন:

ভেষজ চাষের দিকে ঝুঁকছে দার্জিলিঙের চা-বলয়

নয়াদিল্লি, 7 ফেব্রুয়ারি: দার্জিলিং চা, যা চায়ের শ্যাম্পেন হিসাবে বিবেচিত হয়, তা অস্তিত্বের সংকটে পড়েছে ৷ 2023 সালে এই চায়ের উৎপাদন 6.3 মিলিয়ন কেজিতে নেমে গিয়েছে ৷ যা 50 বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। দার্জিলিং জেলার 87টি চা বাগানের অর্ধেক বিক্রির মুখে রয়েছে ৷ জাপান একসময় দার্জিলিং চায়ের সবচেয়ে বড় ক্রেতা ছিল ৷ তারা এখন এই চায়ের আমদানি কমিয়ে দিয়েছে । রফতানিকারক ও দার্জিলিং চা-বাগানকারীরা জানিয়েছেন যে দার্জিলিং চা শিল্প আইসিইউতে রয়েছে এবং এটিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অবিলম্বে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন ।

দার্জিলিং চা শিল্প 2017 সালে পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা দ্বারা আন্দোলনের সময় যে আঘাতের সম্মুখীন হয়েছিল, তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি ৷ প্রায় চার মাস ধরে বাগানগুলি বন্ধ ছিল এবং বিদেশি ক্রেতারা চলে গিয়েছিল ৷ কোভিড মহামারী দার্জিলিং চা বাগানের পরিস্থিতি আরও সঙ্গীন করে দিয়েছে । চা বাগানের মালিকরা আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছেন এবং তাঁরা চা বাগানের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থর যোগান দিতে পারেননি ৷ এখনও পর্যন্ত দার্জিলিং চা শিল্প কেন্দ্র থেকে কোনও পুনরুজ্জীবন প্যাকেজ পায়নি ৷ যদিও তারা এর জন্য একটি প্রস্তাব সরকারের কাছে জমা দিয়েছে ।

নেপালের সস্তা চা আমদানি দার্জিলিংয়ের চা শিল্পের সংকটকে আরও গভীর করেছে ৷ কারণ, এই শিল্প আগেই কম উৎপাদন, রফতানির বাজারে কম চাহিদা ও কমদামের জন্য আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে । বাণিজ্য সূত্র জানিয়েছে যে নেপাল দার্জিলিংয়ের চা রফতানির বাজারেও প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছে ৷ এখন তারা সরাসরি জার্মানি ও জাপানের মতো দেশে চা রফতানি করছে । দার্জিলিংয়ের চা উৎপাদকরা উদ্বিগ্ন যে দেশীয় গ্রাহকরা নেপালের চা-কে দার্জিলিং চা হিসাবে পান করছেন ৷ ফলে দেশেও তাদের বাজারে খারাপ প্রভাব পড়ছে ৷

গোল্ডেন টিপস কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাধব সারদা বলেন, “নেপালের ইলাম জেলা ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং-এর আবহাওয়া একই রকম । এটি একটি কাল্পনিক লাইন যা দু’টিকে বিভক্ত করে । ইলামে উৎপাদিত চা প্রায় দার্জিলিংয়ের মতোই । তাই ইলাম থেকে প্রচুর চা ভারতে প্রবেশ করছে এবং দেশীয় বাজারে দার্জিলিং চা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে । এবং আয়তন প্রতি বছর ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে ।”

সারদা আরও বলেন, নেপালি চা দার্জিলিং চায়ের তুলনায় প্রায় 35-50 শতাংশ কম । এগুলি দার্জিলিং চায়ের সঙ্গে মিশ্রিত হয় এবং দার্জিলিং চা হিসাবে বিক্রি হয়৷ ক্রেতারা দার্জিলিং চা এবং নেপালি চায়ের মধ্যে পার্থক্য করতে পারেন না । এমনকি চা বিশেষজ্ঞরাও কখনও কখনও উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যর্থ হন ৷”

দার্জিলিং টি অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান উপদেষ্টা সন্দীপ মুখোপাধ্য়ায় বলেন, “দার্জিলিং-এর 87টি চা বাগানের মধ্যে 7টি স্থায়ীভাবে বন্ধ রয়েছে । তাদের অনেকেই কোনও না কোনোভাবে বেঁচে আছেন এবং শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করতে পারছেন না । দার্জিলিং শিল্পের ভাগ্য অনিশ্চিত এবং আমরা জানি না আর কতদিন বাগানগুলি তাদের কাজ চালিয়ে যাবে ।”

ভারতীয় চা রফতানিকারক সমিতির চেয়ারম্যান আংশুমান কানোরিয়া বলেন, “দার্জিলিং চা শিল্প আইসিইউতে রয়েছে এবং এ বছর রফতানি কম হবে । দার্জিলিং চা পুনরুজ্জীবিত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার উভয়েরই অবিলম্বে পদক্ষেপ করা উচিত ৷”

আরও পড়ুন:

ভেষজ চাষের দিকে ঝুঁকছে দার্জিলিঙের চা-বলয়

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.