চিত্রকূট (মধ্যপ্রদেশ), 2 নভেম্বর: এবছর মধ্যপ্রদেশে মেলায় ব্যাপক চাহিদা ছিল সলমন-শাহরুখের ৷ কিন্তু, ওদের থেকেও বেশি চাহিদা আর কদর পেল লরেন্স বিষ্ণোই ৷ দর কষাকষির পর 1 লাখ 25 হাজার টাকায় ক্রেতারা কিনে নিলেন লরেন্স বিষ্ণোইকে ! প্রায় লাখ টাকায় বিক্রি হলেন শাহরুখ-সলমনও ৷
মধ্যপ্রদেশের শহর চিত্রকূটের প্রায় 300 বছরের ঐতিহাসিক গাধার মেলায় এবারের আকর্ষণ ছিল সলমন, শাহরুখ আর বাসন্তী, ক্যাটরিনা নামের গাধারা ৷ ক্রেতারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী গাধার জন্য দর দিয়ে কিনে নিয়ে যান ৷
শোনা যায়, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব 1670 সালের দিকে চিত্রকূট আক্রমণ করেছিলেন৷ তখন তার ঘোড়াগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং অনেক ঘোড়া ও খচ্চর মারা যায়৷ এই সময়ে আওরঙ্গজেব চিত্রকূটের বালাজি মন্দিরে আসেন এবং মন্দিরের নামে শত শত বিঘা জমি দান করেন৷ এই জায়গাতেই গাধা বিক্রির মেলা বসার কথা আশপাশের এলাকায় ঘোষণা করে দেওয়া হয়৷ ঘোষণার পর দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসতে শুরু করেন ভালো দামের বিনিময়ে তাঁদের কাছে থাকা গাধা বিক্রি করতে ৷ এই মেলা প্রথম হয়েছিল দীপাবলির সময় ৷ এরপর প্রতি বছর এই একই সময়ে হয়ে চলছে চিত্রকূটের ঐতিহাসিক গাধা মেলা ৷
প্রায় 300 বছর ধরে, দীপাবলির দিন থেকে তিন দিন ধরে চিত্রকূট রামঘাটের কাছে চলে এই গাধার মেলা ৷ উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউ, প্রয়াগরাজ, হামিরপুর, মৌরানিপুর, ঝাঁসি, পাশাপাশি বিহার, ছত্তিশগড় থেকে এমনকি নেপালের ব্যবসায়ীরাও ভালো জাতের গাধা ও খচ্চর কেনা-বেচার জন্য এই মেলায় আসেন ৷ রাজস্থানের পর এটাই ভারতের সবচেয়ে বড় পশু মেলা হিসেবে বিবেচিত ৷ এখানে জাত অনুযায়ী গাধার দাম লাখ টাকা পর্যন্ত নির্ধারিত হয়৷
মেলার আয়োজক রমেশ পান্ডে ওরফে বাগদ পান্ডে জানান, প্রতি বছরের মতো এ বছরও গাধার মেলার আয়োজন করা হয়েছে৷ আগের বছরের মতো এবারও মেলায় পশু কমই এসেছে৷ এর কারণ হল, এখন যন্ত্রপাতির যুগ ৷ এই কারণে, হাটে গাধা, খচ্চরের মতো পশুর চাহিদা কমে যাচ্ছে ৷ গাধা পালনকারী ও ক্রেতার সংখ্যাও আগের তুলনায় অনেক কমছে ৷ তাই ক্রমেই গুরুত্ব হারাতে বসেছে ঐতিহাসিক গাধার মেলার ৷
