কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর: বর্তমানে ব্যাঙ্কে একটি সেভিংস অ্যাকাউন্ট প্রত্যেকের জন্য প্রয়োজনীয়। সমস্ত সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে, একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকা জরুরি ৷ তাছাড়া, ডিজিটাল লেনদেনও করা যাবে না। ভারতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে কোনও বিশেষ বিধিনিষেধ নেই। এই কারণে প্রত্যেক ব্যক্তির দুই বা তার বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে বা থাকতে পারে। আপনার টাকা সেভিংস অ্যাকাউন্টে সুরক্ষিত থাকে এবং সময়ে সময়ে ব্যাঙ্ক এই জমা করা টাকার উপর তার গ্রাহককে সুদও দেয়।
নিয়ম অনুযায়ী, জিরো ব্যালেন্স অ্যাকাউন্ট ছাড়া সমস্ত অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স (মিনিমাম ব্যালেন্স ) বজায় রাখা প্রয়োজন ৷ না হলে ব্যাঙ্ক আপনার কাছ থেকে জরিমানা নেবে। কিন্তু, সেভিংস অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ কত টাকা রাখা যাবে, সে বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট সীমা নেই। কিন্তু, একটি নির্দিষ্ট সীমার চেয়ে বেশি টাকা জমা করতে গেলে ওই গ্রাহকের জমাকৃত অর্থ সম্পর্কে আয়কর দফতরকে জানাতে হয় ব্যাঙ্কের তরফে। কত টাকার বেশি সেভিংস অ্যাকাউন্টে জমা করলে আয়কর দফতর নোটিস পাঠাবে ? জেনে নিন...
সেভিংস অ্যাকাউন্টে কত টাকা রাখা যাবে?
দেশের ব্যাঙ্কিং নিয়ম অনুযায়ী, আপনি আপনার সেভিংস অ্যাকাউন্টে যে কোনও পরিমাণ অর্থ জমা রাখতেই পারেন। এর কোনও সীমা নেই। কিন্তু, যদি আপনার অ্যাকাউন্টে জমা করা নগদের পরিমাণ বেশি হয় এবং তা আয়করের আওতায় আসে, তাহলে আপনাকে সেই আয়ের উৎস জানাতে হবে। এছাড়া, ব্যাঙ্ক শাখায় গিয়ে নগদ জমা ও উত্তোলনেরও একটি নির্দিষ্ট সীমা রয়েছে। কিন্তু, চেক বা অনলাইনের মাধ্যমে আপনি আপনার সেভিংস অ্যাকাউন্টে 1 টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত জমা করতে পারেন।
নগদ অর্থ জমা করার নিয়ম:
আপনি যদি ব্যাঙ্কে 50,000 টাকা বা তার বেশি নগদ জমা করেন, তবে আপনাকে এর সঙ্গে আপনার প্যান নম্বর দিতে হবে। আপনি একদিনে 1 লক্ষ টাকা পর্যন্ত নগদ জমা করতে পারেন। এছাড়াও, আপনি যদি আপনার অ্যাকাউন্টে নিয়মিত নগদ জমা না করেন তবে এই সীমা 2.50 লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এগুলি ছাড়াও একজন ব্যক্তি একটি আর্থিক বছরে তার অ্যাকাউন্টে সর্বাধিক 10 লক্ষ টাকা নগদ জমা করতে পারেন। এই সীমা এক বা একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকা করদাতাদের জন্য প্রযোজ্য।
10 লক্ষ টাকার বেশি আমানতের উপর আয়কর দফতরের নজরদারি:
যদি কোনও ব্যক্তি একটি আর্থিক বছরে 10 লক্ষ টাকার বেশি নগদ জমা করেন, তবে ওই গ্রাহকের ব্যাঙ্ককে এই লেনদেন সম্পর্কে আয়কর বিভাগকে জানাতে হবে। এই পরিস্থিতিতে ওই ব্যক্তিকে তাঁর এই আয়ের উৎস প্রকাশ করতে হবে। যদি ওই ব্যক্তি তাঁর আয়কর রিটার্নে উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক তথ্য দিতে না পারেন, তাহলে তিনি আয়কর বিভাগের নজরদারিতে আসতে পারেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে, কোনও অনিয়ম ধরা পড়লে মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির জমাকৃত অর্থের উপর 60 শতাংশ কর, 25 শতাংশ সারচার্জ এবং 4 শতাংশ সেস আরোপ করা হতে পারে। তবে লাভজনক বিনিয়োগের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে সেভিংস অ্যাকাউন্টে এত টাকা রাখার পরিবর্তে, সেই টাকা ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানতে বা কোনও ফাণ্ডে বিনিয়োগ করলে আরও বেশি রিটার্ন পাওয়া যাবে।