বিলাসপুর, 15 মার্চ: পুতুল নাচের মাধ্যমে ভোটারদের সচেতন করার প্রচেষ্টা ৷ সরকারি প্রকল্পের প্রচার করছে পাপেট শো ৷ বিপন্ন এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শিল্পীরা এভাবেই জীবিকা ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ৷ এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে লোকসভা ভোটের সময় পুতুল নাচকে প্রচারের মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরেছেন ছত্তিশগড়ের শিল্পী কিরণ মৈত্র ।
পুতুল নাচের শিল্প শাশুড়ি থেকে পুত্রবধূর হাতে: কিরণের এই শিল্পে হাতে খড়ি তাঁর শাশুড়ি নীলিমা মৈত্রের কাছ থেকে । শাশুড়ির মৃত্যুর পরও কিরণ এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন এবং তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । আর এখন লোকসভা ভোটের মুখে সরকারি প্রকল্প-সহ নির্বাচন সংক্রান্ত নানা তথ্য পাপেট শোয়ের মাধ্যমে তুলে ধরে ভোটারদের সচেতন করে চলছেন ৷
কিরণের কথায়, "পুতুল নাচ বিনোদনের একটি মাধ্যম, কিন্তু আমাদের প্রচেষ্টা বিনোদনের পাশাপাশি শিক্ষা, তথ্য ও প্রচারের মাধ্যমে জনসচেতনতা গড়ে তোলা ৷"
কাজ না পেয়ে উৎসাহের অভাব: কিরণ মৈত্র প্রায় 25 জন শিল্পীর সঙ্গে যুক্ত, যাঁরা পুতুল নাচের শিল্পের বিশেষজ্ঞ । পাপেট শোয়ের কাজ এতটাই কম থাকে যে, তাঁদের প্রত্যেককেই জীবিকার জন্য অন্য কোনও কাজ করতে হয় ৷ ফলে ধীরে ধীরে পুতুল নাচের প্রতি উৎসাহ হারায় শিল্পীদের ৷
কিরণ মৈত্র বলেন, "পারিবারিক দায়িত্ব রয়েছে শিল্পীদের ৷ কিন্তু পাপেট শো দেখানোর কাজ না পাওয়ায় তাঁরা এখন ধীরে ধীরে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন । তাঁরা যদি পুতুল নাচ দেখিয়ে ভালো আয় করতে পারেন, তাহলে সামনের দিনগুলোতে এই শিল্পের অগ্রগতি সম্ভব হবে । ফুলটাইম কাজ করা প্রয়োজন । আমাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা প্রায়ই ফোন করে জিজ্ঞেস করেন, কোনও কাজ আছে কি না । একমাস ধরে যে কাজ চলত, তা আর গত কয়েক মাস ধরে পাওয়া যাচ্ছে না । সবার বাড়িতেই সমস্যা থাকে, যা মানসিক চাপও সৃষ্টি করে ।"
কিরণ মৈত্রের সঙ্গে কাজ করা পাপেট শিল্পী রূপেশ কুরে বলেন, তিনি 15 বছর ধরে পাপেট শো সংস্থার সঙ্গে যুক্ত আছেন । এর আগে সরকারের পক্ষ থেকে কাজ দেওয়া হত । জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি তিনি সারা রাজ্যে ঘুরে বেড়াতেন এবং পাপেট শো-এর মাধ্যমে জনগণের কাছে সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের তথ্য দিতেন । সরকার চাইলে তাঁরা এখনও দৈনন্দিন কাজ পেতে পারেন ।
তাঁর কথায়, "গত 15 বছর ধরে পুতুল নাচের অনুষ্ঠানের সঙ্গে আমি যুক্ত । আগে সংসার চালিয়ে নিতাম ৷ এখন দুই সন্তান ৷ কাজের অভাবে দিনমজুরের কাজ করছি । আমরা চাই সরকার এ দিকে নজর দিক । ছত্তিশগড়কে পাপেট শো বন্ধের হাত থেকে বাঁচাতে হবে ।"
বিশ্ব পুতুল দিবস: দীর্ঘদিন ধরে পুতুল নাচ মানুষকে সচেতন করার এবং তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম । এই কারণেই এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রতি বছর 21 মার্চ বিশ্ব পুতুল দিবস পালিত হয় । তবে শিল্পীদের মতে, শুধু দিন পালন না করে তাঁদের কাজের পরিসর বৃদ্ধি করার দিকে নজর দেওয়া উচিত সরকারের ৷
আরও পড়ুন: