রোহতাস, 21 সেপ্টেম্বর: বিহারের রোহতাসে একই স্কুলের তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ছাত্রীর। পড়ুয়ার অভিযোগ, স্কুলে যাওয়ার পর শিক্ষকরা বলেছিলেন তাঁর পোশাক ছোট এবং নোংরা। এই অভিযোগে স্কুলের তিন শিক্ষক একযোগে তাকে বেধড়ক মারধর করেন। শুধু তাই নয়, মেয়েটির মাথা দেওয়ালে ঠুকেও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ৷
জানা গিয়েছে, করগহর থানা এলাকার একটি সরকারি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী 3 শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমনই গুরুতর অভিযোগ এনেছে। ওই ছাত্রী জানিয়েছে, স্কুলের সব পড়ুয়াদের সামনে তাকে অপমান করা হয়েছে ৷ পরে শিক্ষকরা তাকে মারধর করে স্কুল থেকে বেরও করে দেন ৷ এছাড়া ওই জাতপাত সংক্রান্ত একাধিক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি ছাত্রীর।
ওই পড়ুয়ার কথায়, "আমার বাবা-মা বাইরে থাকেন। আর্থিক সমস্যার কারণে আমার স্কুলের পোশাক মাত্র একটি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে পোশাকটি একটু ছোট হয়ে গিয়েছে । কিন্তু এর জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষিকা এবং অন্য আরও একজন শিক্ষিকা আমাকে লাঞ্ছনা করেছেন ৷ মারধরও করেছেন।" অভিযোগ, ওই মেয়েটিকে মারধর করে এবং তাকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে মেয়েটি দুপুর তিনটে নাগাদ বাড়ি ফিরে আসে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, বাড়িতে ফিরেও সে কাঁদতে থাকে ৷ একই সঙ্গে ছাত্রী জানায় আর সে স্কুলে যাবে না। এরপরই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে ৷
করগহর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে নির্যাতিতার পরিবার। আহত ওই ছাত্রীকে নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালেও ভর্তি করা হয় ৷ সেখানে তার প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পুলিশ পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করছে ৷ করগহর থানার ইনচার্জ বিজয় কুমার বলেন, “এই বিষয়ে ছাত্রীর পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রতিটি দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।''
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৷ তিনি জানান, ছাত্রীকে পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল ৷ কিন্তু লাঞ্ছনা করা হয়নি। মেয়েটির অভিযোগ, স্কুলে নমাজের সময় প্রধান শিক্ষক, একজন সহকারী শিক্ষিকা ও একজন শিক্ষিকা ওই ছাত্রীর পোশাক ছোট ও পুরনো হওয়ায় তাকে অপমান করে।
প্রধান শিক্ষক অবশ্য বলেন, "সব পড়ুয়াকে প্রতিদিন পরিষ্কার থাকতে বলা হয়। মেয়েদের নখ ইত্যাদি নিয়মিত পরীক্ষা করা হয়। দেখা হয় মেয়েরা কতটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলছে । এদিনও সেটাই হয়েছে। কিন্তু মারধরের কোনও ঘটনা ঘটেনি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।"