নয়াদিল্লি, 15 মার্চ: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে দায়ের হওয়া মামলা গৃহীত হল দেশের শীর্ষ আদালতে ৷ 11 মার্চ, সোমবার গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে দেশজুড়ে এই সিএএ কার্যকর করার কথা ঘোষণা করে বিজেপি সরকার ৷ এই আইনের সাংবিধানিক বৈধতা এবং আইনের আওতায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ৷ তাই এই আইন লাগু হওয়ায় স্থগিতাদেশ চেয়ে 12 মার্চ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ বা আইইউএমএল ৷
শুক্রবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ এই মামলার শুনানির আবেদন গ্রহণ করে ৷ দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় আইইউএমএল পক্ষের প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিবালকে বলেন, "আমরা মঙ্গলবার এই মামলাটি শুনব ৷ 190টিরও বেশি মামলা রয়েছে ৷ সব মামলাগুলিই শোনা হবে ৷" আগামী 19 মার্চ, মঙ্গলবার 2019 সালের সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট বা সিএএ নিয়ে করা মামলার শুনানি হবে ৷ কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, সিএএ নিয়ে 237টি আবেদন জমা পড়েছে ৷ এদের মধ্যে 4টি সিএএ কার্যকর করার বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে ৷
এই আইনে কী বলা হয়েছে ? তিনটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র- পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে সময়ে সময়ে বহু অ-মুসলিম শরণার্থী হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি এবং খ্রিস্টানরা ভারতে এসেছে ৷ 2014 সালের 31 ডিসেম্বর তারিখের আগে যাঁরা এই তিন প্রতিবেশী দেশ থেকে ভারতে এসেছেন, তাঁদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করাই 2019 সালের সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টের উদ্দেশ্য, জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷
2019 সালের ডিসেম্বরে সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল পাশ হয় সংসদে ৷ পরের বছর জানুয়ারিতেই এই বিল আইনে পরিণত হয় ৷ তবে চার বছরেরও বেশি সময় পরে লোকসভা ভোটের ঠিক আগে এই আইন কার্যকর করে বিজেপি সরকার ৷ এতে কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট ব্যাংকের রাজনীতি করার অভিযোগ তোলে ৷ পাশাপাশি দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কীভাবে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাবে, সে বিষয়েও প্রশ্ন করে বিরোধী দলগুলি ৷
যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বারবার আশ্বাস দিয়েছেন, এই আইনে মুসলিমদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে না ৷ কারও নাগরিকত্ব যাবে না ৷ বরং, অনুপ্রবেশ রুখতে এই ব্যবস্থা ৷ তবে সিএএ আইন লাগু করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ একই কথা জানিয়েছে তামিলনাড়ু ও কেরল সরকারও ৷
আরও পড়ুন: