ETV Bharat / bharat

28 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা! গর্ভপাত চেয়ে আদালতে মা, কী বলল সুপ্রিম কোর্ট - pregnant minor seeks abortion - PREGNANT MINOR SEEKS ABORTION

Minor with 28 Weeks Pregnant appeals for medical termination: নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা, তাও 28 সপ্তাহের ৷ এই পরিস্থিতিতে তার মা গর্ভপাতের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ৷ নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ৷ তবে এই সময়ে গর্ভপাত নাবালিকার জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হবে না তো ? পাশাপাশি তার মানসিক ও শারীরিক ভালো থাকার বিষয়টিও জড়িত ৷

28 Weeks Pregnant minor
28 সপ্তাহের সন্তানসম্ভবা নাবালিকার মা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 20, 2024, 9:55 AM IST

নয়াদিল্লি, 20 এপ্রিল: যৌন নির্যাতনের ফলে অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকার গর্ভপাত সম্ভব ? শুধু তাই নয়, ওই নাবালিকার গর্ভধারণের সময় 28 সপ্তাহ অর্থাৎ প্রসবের সময় দূরে নেই ৷ এমন পরিস্থিতিতে 14 বছর বয়সি নাবালিকার গর্ভপাত করা উচিত কি না, সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছতে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ আবার এর সঙ্গে ওই নাবালিকার শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো থাকার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা জরুরি ৷

ধর্ষিতা নাবালিকার পরিবার মেয়েটির গর্ভপাত করতে চেয়ে বম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল ৷ তবে তা খারিজ হয়ে যায় ৷ তখন নাবালিকার মা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন ৷ শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে দেশের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত দুই সদস্যের বেঞ্চ ওই নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষার নির্দেশ দেয় ৷ প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা নির্দেশে জানান, শনিবারই সিওন হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট চিকিৎসকদের একটি বিশেষ বোর্ড তৈরি করে এদিনই ওই নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষা করবে ৷

এছাড়া মহারাষ্ট্র সরকারকে দেওয়া নির্দেশে বেঞ্চ জানায়, শারীরিক পরীক্ষার জন্য 28 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকাকে নিয়ে তার মা হাসপাতালে যাবেন ৷ তখন তাদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করবে মহারাষ্ট্র সরকার ৷ দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, "নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে ৷ নাবালিকা 28 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ৷ এই পরিস্থিতিতে তার গর্ভপাত করলে তাতে ওই নাবালিকার জীবনের কোনও ঝুঁকি থাকবে না তো ? এ বিষয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের মত কী, তা আদালতকে জানাতে হবে ৷" সোমবার সকালে প্রথমে এই মামলাটি তালিকাভুক্ত করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ৷

এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) ঐশ্বর্যা ভাট্টি এই মামলাটিকে আদালতে 'খুব কঠিন মামলা' বলে উল্লেখ করেন ৷ তিনি জানান, ওই নাবালিকার মায়ের বয়সও খুব বেশি নয়, 34 বছর ৷ এর আগে চিকিৎসকরা ওই নাবালিকাকে পরীক্ষা করে জানিয়েছে, গর্ভবতী অবস্থায় তার শরীরে কোনও অস্বাভাবিক লক্ষণ পাওয়া যায়নি ৷ তাছাড়া নাবালিকা 28 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা, অর্থাৎ প্রসবের সময় কাছাকাছি চলে এসেছে ৷ এই অবস্থায় জোর করে গর্ভপাত করানো যাবে না ৷ এএসজি বলেন, "আমার মনে হয়, নাবালিকা এ নিয়ে কী ভাবছে, তা জানা দরকার ৷"

তবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে ভাট্টি এদিন নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষার পক্ষেও সওয়াল করেন ৷ সন্তানসম্ভবা অবস্থায় মেয়েটির শারীরিক ও মানসিক দিয়ে কেমন আছে ? নাকি গর্ভপাত করলে সে ভালো থাকবে ? এই বিষয়টি যথাযথভাবে খতিয়ে দেখা দরকার বলে জোর দেন তিনি ৷

গত 4 এপ্রিল বম্বে হাইকোর্ট এই মামলার রায়ে মেয়েটির গর্ভপাতের আবেদন খারিজ করে দেয় ৷ নাবালিকার মা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছিল ৷ সেই কারণে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ৷ এ নিয়ে এফআইআর করা হয়েছে ৷ পকসো আইনে মামলাও চলছে ৷

এদিন শীর্ষ আদালত উল্লেখ করে যে, বম্বে হাইকোর্ট হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ডের মতামত মেনে গর্ভপাতের আবেদন নাকচ করেছিল ৷ মেয়েটির শারীরিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত দু'টি মেডিক্যাল রিপোর্ট রয়েছে ৷ তবে আবেদনকারী নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, দ্বিতীয় রিপোর্টটি নির্যাতিতা নাবালিকাকে পরীক্ষা না-করেই তৈরি করা হয়েছে ৷ তাই সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, প্রাথমিকভাবে ওই মেডিক্যাল রিপোর্টে নাবালিকার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়নি ৷ বিশেষত যেখানে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে ৷ তার ফলশ্রুতি এই পরিস্থিতি ৷

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এটা জানা জরুরি যে, নাবালিকার গর্ভপাত না-করলে তা তার শারীরিক ও মানসিক ভালো থাকাকে কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে ৷ তাতেই কি সে ভালো থাকবে ? প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ বলে, "হাসপাতালের তৈরি মেডিক্যাল বোর্ড আবেদনকারীর মেয়েকে পরীক্ষা করে দেখুক ৷"

আরও পড়ুন:

  1. 26 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বার ভ্রূণে অস্বাভাবিকতা আছে ? দিল্লি এইমসের রিপোর্ট তলব সুপ্রিম কোর্টের
  2. 'মা হতে রাজি নই', অন্তঃসত্ত্বা কুমারীর গর্ভপাতে সম্মতি সুপ্রিম কোর্টের
  3. 26 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাতের অনুমতি দিল না সুপ্রিম কোর্ট

নয়াদিল্লি, 20 এপ্রিল: যৌন নির্যাতনের ফলে অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকার গর্ভপাত সম্ভব ? শুধু তাই নয়, ওই নাবালিকার গর্ভধারণের সময় 28 সপ্তাহ অর্থাৎ প্রসবের সময় দূরে নেই ৷ এমন পরিস্থিতিতে 14 বছর বয়সি নাবালিকার গর্ভপাত করা উচিত কি না, সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছতে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ আবার এর সঙ্গে ওই নাবালিকার শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো থাকার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা জরুরি ৷

ধর্ষিতা নাবালিকার পরিবার মেয়েটির গর্ভপাত করতে চেয়ে বম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল ৷ তবে তা খারিজ হয়ে যায় ৷ তখন নাবালিকার মা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন ৷ শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে দেশের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত দুই সদস্যের বেঞ্চ ওই নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষার নির্দেশ দেয় ৷ প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা নির্দেশে জানান, শনিবারই সিওন হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট চিকিৎসকদের একটি বিশেষ বোর্ড তৈরি করে এদিনই ওই নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষা করবে ৷

এছাড়া মহারাষ্ট্র সরকারকে দেওয়া নির্দেশে বেঞ্চ জানায়, শারীরিক পরীক্ষার জন্য 28 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকাকে নিয়ে তার মা হাসপাতালে যাবেন ৷ তখন তাদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করবে মহারাষ্ট্র সরকার ৷ দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, "নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে হবে ৷ নাবালিকা 28 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ৷ এই পরিস্থিতিতে তার গর্ভপাত করলে তাতে ওই নাবালিকার জীবনের কোনও ঝুঁকি থাকবে না তো ? এ বিষয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের মত কী, তা আদালতকে জানাতে হবে ৷" সোমবার সকালে প্রথমে এই মামলাটি তালিকাভুক্ত করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি ৷

এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) ঐশ্বর্যা ভাট্টি এই মামলাটিকে আদালতে 'খুব কঠিন মামলা' বলে উল্লেখ করেন ৷ তিনি জানান, ওই নাবালিকার মায়ের বয়সও খুব বেশি নয়, 34 বছর ৷ এর আগে চিকিৎসকরা ওই নাবালিকাকে পরীক্ষা করে জানিয়েছে, গর্ভবতী অবস্থায় তার শরীরে কোনও অস্বাভাবিক লক্ষণ পাওয়া যায়নি ৷ তাছাড়া নাবালিকা 28 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা, অর্থাৎ প্রসবের সময় কাছাকাছি চলে এসেছে ৷ এই অবস্থায় জোর করে গর্ভপাত করানো যাবে না ৷ এএসজি বলেন, "আমার মনে হয়, নাবালিকা এ নিয়ে কী ভাবছে, তা জানা দরকার ৷"

তবে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে ভাট্টি এদিন নাবালিকার শারীরিক পরীক্ষার পক্ষেও সওয়াল করেন ৷ সন্তানসম্ভবা অবস্থায় মেয়েটির শারীরিক ও মানসিক দিয়ে কেমন আছে ? নাকি গর্ভপাত করলে সে ভালো থাকবে ? এই বিষয়টি যথাযথভাবে খতিয়ে দেখা দরকার বলে জোর দেন তিনি ৷

গত 4 এপ্রিল বম্বে হাইকোর্ট এই মামলার রায়ে মেয়েটির গর্ভপাতের আবেদন খারিজ করে দেয় ৷ নাবালিকার মা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছিল ৷ সেই কারণে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ৷ এ নিয়ে এফআইআর করা হয়েছে ৷ পকসো আইনে মামলাও চলছে ৷

এদিন শীর্ষ আদালত উল্লেখ করে যে, বম্বে হাইকোর্ট হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ডের মতামত মেনে গর্ভপাতের আবেদন নাকচ করেছিল ৷ মেয়েটির শারীরিক পরিস্থিতি সংক্রান্ত দু'টি মেডিক্যাল রিপোর্ট রয়েছে ৷ তবে আবেদনকারী নাবালিকার মায়ের অভিযোগ, দ্বিতীয় রিপোর্টটি নির্যাতিতা নাবালিকাকে পরীক্ষা না-করেই তৈরি করা হয়েছে ৷ তাই সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, প্রাথমিকভাবে ওই মেডিক্যাল রিপোর্টে নাবালিকার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খতিয়ে দেখা হয়নি ৷ বিশেষত যেখানে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে ৷ তার ফলশ্রুতি এই পরিস্থিতি ৷

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এটা জানা জরুরি যে, নাবালিকার গর্ভপাত না-করলে তা তার শারীরিক ও মানসিক ভালো থাকাকে কীভাবে প্রভাবিত করতে পারে ৷ তাতেই কি সে ভালো থাকবে ? প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ বলে, "হাসপাতালের তৈরি মেডিক্যাল বোর্ড আবেদনকারীর মেয়েকে পরীক্ষা করে দেখুক ৷"

আরও পড়ুন:

  1. 26 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বার ভ্রূণে অস্বাভাবিকতা আছে ? দিল্লি এইমসের রিপোর্ট তলব সুপ্রিম কোর্টের
  2. 'মা হতে রাজি নই', অন্তঃসত্ত্বা কুমারীর গর্ভপাতে সম্মতি সুপ্রিম কোর্টের
  3. 26 সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বাকে গর্ভপাতের অনুমতি দিল না সুপ্রিম কোর্ট
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.