দেরাদুন, 10 অক্টোবর: কেদারনাথ মন্দির থেকে শুরু করে বদ্রীনাথ মন্দিরের প্রসাদ অডিট হবে। এমনই সিদ্ধান্ত নিল বদ্রীনাথ-কেদারনাথ টেম্পেল কমিটি । তিরুপতি মন্দিরের লাড্ডু ঘিরে তৈরি হয় বিবাদ থেকে শিক্ষা নিয়েই এমন সিদ্ধান্ত । শুধু এই দু'টি মন্দির নয়, কমিটির নিয়ন্ত্রণে থাকা সমস্ত মন্দিরেব প্রসাদ ওডিট হবে এবার থেকে ।
শুধু অডিট করা নয়, প্রতিটি মন্দিরে প্রসাদ তৈরি থেকে শুরু করে তার গুণমান রক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে কমিটি । প্রতিটি মন্দির এই নির্দেশিকা মেনেই কাজ করবে। একাধিক জনপ্রিয় মন্দির থাকায় উত্তরাখণ্ডে প্রতি বছর প্রচুর পর্যটক আসেন। এমনিতেই পর্যটকদের পছন্দের গন্তব্য উত্তরাখণ্ড ৷ বিভিন্ন মন্দির সেই আকর্ষণ আরও বাড়িয়েছে । এমতাবস্থায় এখানকার প্রসাদ নিয়ে যাতে কোনও বিতর্ক তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই নির্দেশিকা তৈরি হয়েছে ।
তিরুপতি মন্দির ঘিরে বিতর্কের সূত্রপাত হয় মাসখানেক আগে । অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু দাবি করেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডির সময়কালে তিরুপতি মন্দিরের প্রসাদে যে লাড্ডু দেওয়া হত, তাতে ব্যবহৃত ঘিয়ে পশুর চর্বির আছে । চন্দ্রবাবুর এমন বক্তব্যে গোটা দেশে তোলপাড় পড়ে যায় । দেশের অন্যতম জনপ্রিয় মন্দিরে প্রতি বছর কোটি কোটি ভক্ত যান । লাড্ডু এই মন্দিরের অন্যতম বড় আকর্ষণ । সেই লাড্ডু ঘিরে এমন অভিযোগ কোটি কোটি ভক্তের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানে ।
তৎপর হয় কেন্দ্রীয় সরকার । মন্দিরের প্রসাদ এবং তা তৈরি করতে ব্যবহৃত সামগ্রীর নমুনা খতিয়ে দেখা হয়। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টেও ওঠে লাড্ডু-বিতর্ক । বিচার পর্বে সর্বোচ্চ আদালত জানায় ঈশ্বরকে কোনও রাজনীতির অংশ করা ঠিক নয়। এমন প্রবল বিতর্ক যাতে কেদারনাথ বা বদ্রীনাথ ঘিরে তৈরি না হয় তা নিশ্চিত করতে তৈরি হল নির্দেশিকা ।
রান্নাঘরের আকার: প্রসাদ রান্না হবে এমন রান্নাঘরের আকার বড় হতে হবে। সেই ঘরে আলাদা করে পানীয় জলের ব্যবস্থা থাকতে হবে ।
হাত ধোয়ার ব্যবস্থা: প্রসাদ তৈরির সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের হাত যাতে নোংরা না থাকে তার জন্য ঠান্ডা এবং গরম জলের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে । দীর্ঘদিন ধরে শরীরে কোনও কঠিন রোগ আছে এমন কাউকে প্রসাদ তৈরির কাজে নিয়োগ করা যাবে না ।
সামগ্রী কেনার আগে: তিরুপতি মন্দিরের বিতর্কে মূলে ছিল লাড্ডুতে ব্যবহৃত ঘিয়ের দাম ও মান । সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রসাদে ব্যবহার করা হবে এমন যে কোনও জিনিস কেনার আগে ভালো করে পরীক্ষা করে দেখতে হবে । শুধু তাই নয়, প্রতিটি জিনিসই কিনতে হবে কোনও না কোনও বড় সংস্থা থেকে ।
নজরদারি ও অডিট: প্রতিটি নির্দেশ ঠিক ঠিক মানা হচ্ছে কি না, দেখতে মন্দিরগুলি একজন আধিকারিককে নিয়োগ করবে । তাছাড়া বছরে একবার করে প্রসাদের অডিট করতে হবে ।