গ্যাংটক/শিলিগুড়ি, 13 জুন: প্রবল বৃষ্টির জেরে উত্তর সিকিমের লাচুং এলাকায় ধস নামল ৷ বৃহস্পতিবার লাচুংয়ের পার্কসাঙ্গ থেকে তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে ৷ ঘটনার পরই জরুরিকালীন বৈঠক ডেকেছেন উত্তর সিকিমের জেলাশাসক। তবে এখনও মৃতদের নাম জানা যায়নি। সূত্রের খবর, টানা বৃষ্টির কারণে জলস্ফীতি হয়েছে তিস্তা নদীতে। সেই কারণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে লাচুংয়ে ৷ নদীর পাশে থাকা বেশকিছু বাড়ি জলের স্রোতে ভেসে গিয়েছে ৷ বেশ কয়েক জায়গায় রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সিংথাম ও রঙপোতে তিস্তা লাল সতর্কতা পার করেছে ৷
এদিকে বৃহস্পতিবার যোগাযোগ বন্ধ কালিম্পংয়ের সঙ্গে। যে কোনও সময় বন্ধ হতে পারে বাংলা-সিকিম লাইফ লাইন 10 নম্বর জাতীয় সড়ক। কারণ উত্তর সিকিমে টানা বৃষ্টির জেরে ফের ভয়াল রূপ ধারণ করেছে তিস্তা। কালিম্পং যেমন বিচ্ছিন্ন পাশাপাশি জোড়বাংলো হয়ে ঘুম যাওয়ার রাস্তাটিও জলমগ্ন হয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে ৷ বুধবার রাত থেকে সিকিমে টানা বৃষ্টি হয়েছে। যে কারণে ফের একবার জলস্তর বেড়েছে তিস্তার। কোথাও কোথাও তো জাতীয় সড়কের কাছে উঠে গিয়েছে তিস্তার জল। আর তিস্তার জল বাড়তেই ফের একবার আতঙ্কে পাহাড়বাসী। এর জেরে জাতীয় সড়ক বন্ধ হলে প্রভাব পড়বে পর্যটনেও ৷
তিস্তার জল বাড়ায় জল ঢুকে পড়েছে তিস্তা বাজারের একাংশে। গত অক্টোবর মাসে তিস্তায় হড়পা বানের জেরে প্লাবিত হয় তিস্তা বাজার এলাকা। এখনও সেই ক্ষত পূরণ হয়নি। সবে শুরু হয়েছে পুনর্বাসনের কাজ। আর এর মধ্যেই ফের একবার বন্যার মুখে তিস্তা বাজার ৷ অন্যদিকে, তিস্তার জলের স্রোতে মাল্লির এক জায়গায় জাতীয় সড়কের একাংশ ধসে গিয়েছে। এখনও বন্ধ হয়নি 10 নম্বর জাতীয় সড়ক। তবে কালিম্পং যাওয়ার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছে।
তিস্তায় রেড এলার্ট জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। ইতিমধ্যে ময়দানে নেমেছে পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন তাঁরা। তবে তিস্তার জল বাড়ায় আতঙ্কে তিস্তা বাজার, মাল্লি এলাকার বাসিন্দারা। সিকিমে যতক্ষণ পর্যন্ত বৃষ্টি না-থামবে ততক্ষণ জলস্তর নামার কোনও প্রশ্ন নেই। উলটে সিকিমে বৃহস্পতিবার সারাদিন বৃষ্টি হওয়ার কথা রয়েছে। আর তা হলে ফের একবার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালাসুব্রহ্মণিয়ম টি বলেন, "আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। সিকিম প্রশাসনের সঙ্গে ঘনঘন যোগাযোগ করা হচ্ছে।"
ইতিমধ্যই সিকিমের মাঙ্গনে জেলার প্রশাসনিক আধিকারিকরা ডিএম-এর নির্দেশে ত্রাণ কাজ শুরু করেছেন ৷ সর্বক্ষণ পরিস্থিতি নজর রাখছেন তাঁরা ৷ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ-
- পার্কসাঙ্গে 3 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷
- সাতটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷
- আমবিথাংয়ে নিখোঁজ 2 জন ৷
- একজনকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷