নয়াদিল্লি, 22 মে: লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের জন্য দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জামিনে মুক্তি পেলেও তা পেলেন না ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন ৷ প্রচারের জন্য তাঁর অন্তর্বর্তী জামিনের আবেদন ও ইডি-র হাতে তাঁর গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা কোনওটাই গ্রহণ করল না সুপ্রিম কোর্ট ৷ দুই দিনের টানটান সওয়াল-জবাবের পর বুধবার শীর্ষ আদালত হেমন্তের বিরুদ্ধে তথ্য গোপন করার অভিযোগ এনে বলেছে, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ দোষমুক্ত নয় । হেমন্তের আইনজীবী কপিল সিবালকেও শীর্ষ আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় ৷
বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চ বলে যে, হেমন্ত সোরেনের আইনজীবী কপিল সিবাল সুপ্রিম কোর্টে এই আবেদনের 'সমান্তরাল প্রসিডিং' চালাতে চাইছেন ৷ ইডির অভিযোগের ভিত্তিতে বিশেষ আদালতে যে এই নিয়ে প্রসিডিং চলছে, সেই তথ্য শীর্ষ আদালতকে জানানো হয়নি বলেও জানিয়েছে বেঞ্চ ৷
বেঞ্চ আরও প্রশ্ন করেছে যে, কীভাবে বহুবিধ কার্যধারা হতে পারে ? বিচারপতি দত্ত তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন যে, বস্তুগত তথ্য প্রকাশ না-করে এভাবে শীর্ষ আদালতের সামনে আসা ঠিক নয় ।
বিচারপতি সতীশ চন্দ্র শর্মার সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বলেছে, আবেদনকারী পরিষ্কার হাতে আসেননি এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অভিযোগকে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং তাঁর জামিনের আবেদন যে খারিজ করা হয়েছে তা প্রকাশ করেননি । বেঞ্চ স্পষ্ট করেছে যে, শীর্ষ আদালত সেই ব্যক্তির আবেদন বিবেচনা করতে পারে না যাঁর আচরণ দোষমুক্ত নয় । শীর্ষ আইনজীবী কপিল সিবাল বলার চেষ্টা করেন যে, অভিযোগের স্বীকৃতি দেওয়া জামিন সংক্রান্ত রিট পিটিশনের পথে বাধা হবে না ৷ তবে সিবালের যুক্তি মানতে চায়নি বেঞ্চ ৷ আদালত বলেছে, "আপনার আচরণ দোষমুক্ত নয় । এটি দোষারোপযোগ্য । তাই, আপনি অন্য কোথাও চেষ্টা করতে পারেন ৷"
সিবাল অবশেষে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের 3 মে রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা পিটিশন প্রত্যাহার করে নেন ৷ 31 জানুয়ারি বেআইনি অর্থ তছরুপ মামলায় ইডির হাতে সোরেনের গ্রেফতারির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যে আবেদন করা হয়েছিল, সেই আবেদন 3মে খারিজ করে দিয়েছিল ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট ৷
ইডির অভিযোগ, রাঁচিতে একটি 8.86-একর জমি অবৈধভাবে অধিগ্রহণ করেছেন হেমন্ত সোরেন । বেআইনি অর্থ তছরুপের তদন্তে রাজ্য সরকারের আধিকারিক-সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে জমি কেলেঙ্কারি মামলায় ঝাড়খণ্ড পুলিশ একাধিক এফআইআর নথিভুক্ত করেছে ৷
এ দিন শুনানির সময়, সিবাল আদালতকে বলেন যে, তাঁর মক্কেল হেফাজতে রয়েছেন এবং আদালতে দায়ের করা আবেদনগুলি সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন না ৷ বেঞ্চ তখন তাঁর পর্যবেক্ষণে বলে, "তিনি (হেমন্ত সোরেন) একজন সাধারণ মানুষ নন ৷" মামলার যোগ্যতার প্রশ্নে না-গিয়ে আদালত গ্রেফতারির বিরুদ্ধে তাঁর আবেদন খারিজ করবে বলে জানায় বেঞ্চ ।
সিবাল জোরালোভাবে হেমন্তের পক্ষে যুক্তি দেওয়ার পরেও বেঞ্চ তাঁকে বলে যে, আদালত তাঁর যুক্তিতে বিশ্বাসী নয় । বিচারপতি দত্তের কথায়, "মিস্টার সিবাল, আমরা এখনও খোলা মনেই দেখছি কিন্তু আপনাকে আমাদের মন থেকে এই সন্দেহ দূর করতে হবে....৷"
আরও পড়ুন: