নয়াদিল্লি, 13 ফেব্রুয়ারি: ফের রাজধানীর পথে কৃষকরা ৷ ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি-সহ একগুচ্ছ দাবিদাওয়া নিয়ে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছে কৃষক সংগঠনগুলি ৷ তবে তাতে কোনও রফাসূত্র মেলেনি বলেই জানা গিয়েছে ৷ তাই মঙ্গলবার 'দিল্লি চলো' মহামিছিল ডাক দিয়েছে তারা ৷ ইতিমধ্যেই কৃষক সংগঠনগুলি রাজধানীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে ৷
এদিকে এই মহামিছিল রুখতে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছে দিল্লি পুলিশ ৷ ইতিমধ্যে 144 ধারা জারি করা হয়েছে ৷ তাই ট্র্যাক্টর নিয়ে বা অন্য কোনও মিছিল করা যাবে না ৷ দিল্লির সঙ্গে গাজিপুর-টিকরি-সম্ভু সীমানায় ব্যারিকেড আর কাঁটাতার দিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্স-সহ ক্রাইম ব্রাঞ্চের প্রায় 2 হাজার নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন রয়েছে ৷
হরিয়ানা সরকার আগেই জানিয়েছিল, পঞ্জাব-হরিয়ানা সীমানা যেমন অম্বালা, জিন্দ, ফতেহবাদ, কুরুক্ষেত্র এবং সিরসায় কৃষকদের আটকাতে সবরকম ব্যবস্থা করবে প্রশাসন ৷ সেই অনুযায়ী দুই রাজ্যের সীমানায় কাঁটাতার, কংক্রিটের ব্লক, লোহার তার, ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে ৷ এমনকী হরিয়ানার 15টি জেলায় 144 ধারাও জারি করা হয়েছে ৷ এর ফলে পাঁচ জন বা তার বেশি সংখ্যা মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ ৷ ট্র্যাক্টর বা অন্য কোনও কিছু নিয়েই মিছিল করা যাবে না ৷
পঞ্জাবে কৃষকদের দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে অরাজনৈতিক কৃষক সংগঠন 'সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা' এবং 'কিষাণ মজদুর মোর্চা' ৷ তারা আজ সকাল 10টায় মিছিল বের করবে বলে জানিয়েছে ৷ অম্বালা-শম্ভু, খানৌরি-জিন্দ এবং দাবওয়ালি সীমানা দিয়ে দিল্লির দিকে এগিয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ৷
এই মিছিল ঠেকাতে সোমবার রাতেই কৃষকদের সঙ্গে বৈঠকে করে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলেছে এই বৈঠক ৷ কিষাণ মজদুর সংঘর্ষ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সারওয়ান সিং পানধের বলেন, "আমাদের মনে হচ্ছে, সরকার আমাদের দাবিদাওয়াগুলিকে খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না ৷ তারা আমাদের দাবিগুলি পূরণ করতে চায় না ৷ আমরা সকাল 10 টায় দিল্লির দিকে মিছিল করে এগিয়ে যাব ৷"
তবে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা এবং কেন্দ্রীয় খাদ্য ও উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানিয়েছেন, সোমবার রাতের বৈঠক কিছুটা ফলপ্রসূ হয়েছে ৷ কৃষক নেতাদের সঙ্গে একমতে পৌঁছনো গিয়েছে ৷ একটি কমিটিও গঠন কর হবে ৷ কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা বলেন, "আমরা এখনও আশা করছি কৃষক সংগঠনগুলি আলোচনায় বসবে ৷ আমরা আগামিদিনে বেশ কিছু ইস্যু সমাধান করতে পারব ৷"
এদিকে অরাজনৈতিক কৃষক সংগঠন সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতা জগজিৎ সিং দাল্লেওয়াল বলেন, "এমএসপি-র আইনি নিশ্চয়তা, ঋণ মকুব, স্বামীনাথন কমিশনের প্রস্তাবগুলি কার্যকর করতে চায় সরকার ৷ আর সেই কারণে কমিটিও গঠন করতে চায় ৷ বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে, তা কৃষকদের বিস্তারিত জানাব ৷ তবে দিল্লি আমরা যাবই ৷"
আরও পড়ুন: