নয়াদিল্লি, 30 সেপ্টেম্বর: সরকারি হাসপাতালে সিসিটিভি বসাতে দেরি হওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি জুনিয়র চিকিৎসকদের জন্য পৃথক বিশ্রামাগার এবং শৌচালয় তৈরি করতে কেন দেরি হচ্ছে সেই প্রশ্নও করেছে আদালত। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সিসিটিভি বাসানোর নির্দেশ দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদলত। সেই মতো বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের 26 শতাংশ জায়গায় বসেছে সিসিটিভি। সুপ্রিম কোর্টে এমনই দাবি করল পশ্চিমবঙ্গ সরকার । পাশাপাশি আরজি করে ঘটনায় অভিযুক্তদের সরকারি পদ থেকে অপসারণের দাবিও উঠেছে।
এ ব্যাপারেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ । পাশাপাশি 15 অক্টোবরের মধ্যে সিসিটিভি বসানোর প্রক্রিয়া শেষ করার কথাও বলেছে শীর্ষ আদালত।
অভিযুক্তদের অপসারণের দাবি:
একইসঙ্গে এদিন সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে উঠল হাসপাতালে চলা 'থ্রেট কালচারের' প্রসঙ্গ। সিনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবী করুণা নন্দী দাবি করেন, আরজি করে আর্থিক অনিয়মের ঘটনায় জড়িত থাকা বেশ কয়েকজন এখনও নিজেদের পদে বহাল রয়েছেন। তাঁরা নির্যাতিতার মৃত্যুর দিনও হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। পদে থেকে গেলে তাঁরা তদন্ত প্রভাবিত করতে পারেন। নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তাঁদের আপাতত পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক। একান্তই যদি সরিয়ে দেওয়া না যায়, তাহলে তাঁদের অন্তত ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হোক।
প্রায় একই দাবি করেছেন জুনিয়র চিকিসকদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংহও। তিনি জানন, এই সমস্ত ব্যক্তিরা পদে থেকে গেলে জুনিয়র চিকিসকদের পক্ষে কাজে যোগ দেওয়া মুশকিল। তাঁদের সরানো হলে জুনিয়র চিকিসকরা নির্ভয়ে কাজে যোগ দিতে পারবেন। দুই আইনজীবীর বক্তব্য শুনে আরজি করের ঘটনার কোন কোন অভিযুক্ত এখনও পদে রয়েছেন, তা জানাতে চাইলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান, এই ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত ব্যবস্থা নিতে হবে রাজ্য সরকারকেই। আর তাই তদন্তের এই পর্যায়ে তাদের সঙ্গে তথ্য ভাগ করে নেওয়া দরকার। আইনজীবীরা জানান, আগামী শুনানিতে অভিযুক্তদের নামের সেই তালিকা আদালতে জমা দেওয়া হবে ।
নোডাল অফিসার নিয়োগের নির্দেশ:
এদিনের শুনানির শুরুতে আরও একবার নির্যাতিতার পরিচয় গোপন রাখার কথা বলেন তাঁর পরিবারের আইনজীবী । তিনি দাবি করেন, এখনও সোশাল মিডিয়ায় নির্যাতিতার নাম ও ছবি পোস্ট হয়ে চলেছে । শুধু তাই নয়, নিত্যদিন তাঁর ছবির সঙ্গে হিন্দি গানের অংশ ব্যবহার করে রিলস পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে । এসব দেখে নির্যাতিতার পরিবার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে । এই বক্তব্য শুনে প্রধান বিচারপতিকে বলতে শোনা য়ায়, তাঁরা আগেই এই সংক্রান্ত নির্দেশ দিয়েছেন । জানিয়েছেন, কোনওভাবেই নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ্যে আনা যাবে না । এবার আইন বলবৎকারী সংস্থাকে ব্যবস্থা নিতে হবে । তখন আইনজীবীদের তরফে বলা হয় একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করলে পবিস্থিতির উপর নজর রাখা সহজ হবে । এরপর ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয়, তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক থেকে নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে।