নয়াদিল্লি, 10 ফেব্রুয়ারি: প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত চৌধুরি চরণ সিং যদি নেহরু-গান্ধি পরিবারের সদস্য হতেন, তাহলে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার তাঁকে অনেক আগেই ভারতরত্ন দিয়ে দিত ৷ শনিবার এই অভিযোগ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্যসভার দলনেতা পীযূষ গোয়েল ৷ শনিবার বাজেট অধিবেশনের শেষদিনে রাজ্যসভায় এই কথা বলেন পীযূষ গোয়েল ৷ সেখানে তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে চৌধুরি চরণ সিংকে ভারতরত্ন দেওয়ার ঘোষণা করেছে, তা খুবই গর্বের বিষয় ৷
তিনি বলেন, ‘‘এটি একটি গর্বের মুহূর্ত যে প্রধানমন্ত্রী মোদি চৌধুরি চরণ সিংকে ভারতরত্ন প্রদানের মাধ্যমে সম্মান জানিয়েছেন... কংগ্রেসের আজ উদযাপন করা উচিত ছিল যে তাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে মোদি সরকার পুরস্কৃত করেছে ৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, তাঁর পদবিতে নেহেরু-গান্ধী ছিল না । তিনি প্রথম পরিবারের অন্তর্ভুক্ত হলে এই কাজ আগেই করা হত ৷’’
একই সঙ্গে তিনি বিরোধী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চরণ সিংকে অসম্মান করার অভিযোগও করেছেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘...চৌধুরি চরণ সিংকে অসম্মান করার জন্য বিরোধী দলনেতার (রাজ্যসভা) দেশের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত ৷’’ রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দল, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে যাঁরা দেশের জন্য কাজ করেছেন, তাঁদের সকলকে স্যালুট জানাই ।’’
এ দিন শুধু গোয়েল নন, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপ-রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়েরও রোষের মুখে পড়েন খাড়গে ৷ ধনকড় রাজ্য়সভার বিরোধী দলনেতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, "আপনি চৌধুরি চরণ সিংকে ঘুরিয়ে অপমান করেছেন, আপনি তাঁর উত্তরাধিকারকে অপমান করেছেন । ভারতরত্ন চৌধুরি চরণ সিংয়ের জন্য আপনার কাছে সময় ছিল না । আপনি চৌধুরি চরণ সিং ইস্যুতে অধিবেশন কক্ষের অভ্যন্তরে এমন পরিবেশ তৈরি করে দেশের প্রতিটি কৃষককে আঘাত করছেন । আমাদের লজ্জায় মাথা নত করা উচিত ৷’’
এখানেই না থেমে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘‘আমি চৌধুরি চরণ সিংকে নিয়ে অপমান সহ্য করব না । তিনি অনবদ্য জনজীবন, নিরবচ্ছিন্ন সততা ও কৃষকদের প্রতি দায়বদ্ধতার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন...আমি নিজের চোখে দেখেছি, হট্টগোল, বিশৃঙ্খলা, নিন্দা, চিৎকার এবং স্লোগান ।’’
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার সোশাল মিডিয়া মারফত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেন যে এবার ভারত সরকার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত চৌধুরি চরণ সিংকে ভারতরত্ন দিতে চলেছে ৷ একই সঙ্গে আরেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত পিভি নরসিমার নামও ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী ৷ তাঁকে এবার ভারতরত্ন দিচ্ছে সরকার ৷ শুক্রবার ভারতরত্নের জন্য ঘোষণা হওয়া আরেকটি নাম এমএস স্বামীনাথন, যিনি সুবজ বিপ্লবের জনক হিসেবে পরিচিত ৷ এছাড়া আগেই বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত কর্পুরি ঠাকুর ও প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য লালকৃষ্ণ আদবাণীকে ভারতরত্ন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷
আরও পড়ুন: