তিরুঅনন্তপুরম, 15 জুলাই: চিকিৎসা করাতে এসে লিফটের মধ্যে আটকে পড়লেন রোগী ৷ জানতেই পারলেন না তিরুঅনন্তপুরম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷ দু’দিন পর লিফটের মধ্য থেকে তাঁকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৷ দু’রাত ও একদিন লিফটের মধ্য়ে আটকে থাকার পরও রবীন্দ্রন নায়ার নামে ওই ব্যক্তি বেঁচে গিয়েছেন ৷ এই নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে পরিবার ৷ তারা আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে ৷ অন্যদিকে কেরালা সরকারের তরফে এই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷
কেরালার তিরুঅনন্তপুরমের উল্লুরের বাসিন্দা রবীন্দ্রন নায়ার ৷ তিনি গত শনিবার সকালে তিরুঅনন্তপুরম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে পিঠের ব্যথার চিকিৎসা করাতে যান ৷ সেখানে তাঁর কিছু মেডিক্যাল টেস্ট করা হয় ৷ তার পর তিনি বাড়ি ফিরে যান ৷ দুপুরে আবার তিনি ওই মেডিক্যাল কলেজে আসেন মেডিক্য়াল টেস্টের রিপোর্ট নেওয়ার জন্য ৷ সেই সময় লিফটে ওঠার পর সেটি বন্ধ হয়ে যায় ৷
তিনি বেশ কয়েকবার লিফটের অ্যালার্মের সুইচ চাপেন ৷ তার পরও তাঁকে কেউ উদ্ধার করতে যাননি ৷ এর পর তিনি ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন পরিবারের সঙ্গে ৷ ইতিমধ্যে তাঁর ফোনটি হাত থেকে পড়ে যায় এবং ভেঙে যায় ৷ তার পর তিনি আর বাইরের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি ৷
ফলে তিনি লিফটেই আটকে যান ৷ এদিকে তিনি বাড়ি না ফেরায় চিন্তায় পড়েন তাঁর পরিবারের সদস্য়রা ৷ তাঁর পরিবারের তরফে মেডিক্যাল কলেজ থানায় নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷ মেডিক্যাল কলেজের কেউ জানতেন না যে একজন রোগী লিফটে আটকে আছেন । সোমবার সকাল 6টা নাগাদ রবীন্দ্রন নায়ারকে লিফটে আটকে থাকতে দেখা যায় । অপারেটর এসে লিফট খুলে দেখেন রবীন্দ্রন নায়ার সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ৷
অপারেটর জানিয়েছেন যে লিফটের সামনে একটি বোর্ড ছিল ৷ সেখানে ওই লিফট না ব্যবহারের কথা লেখা ছিল ৷ কিন্তু রবীন্দ্রন নায়ারের পরিবারের অভিযোগ, বিকল লিফটের সামনে কোনও সতর্কতামূলক বোর্ড লাগানো হয়নি । এই ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে রবীন্দ্রন নায়ারের পরিবার ।
কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষকে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন । তিরুবনন্তপুরম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার এই ঘটনার বিষয়ে নিরাপত্তা অফিসারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন । ওই সুপার ইটিভি ভারতকে জানিয়েছেন যে এই ঘটনায় কোনও কর্মচারী দোষী প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্য়বস্থা নেওয়া হবে ।