ভুবনেশ্বর, 10 জুন: মিশনারি স্কুল থেকে পঠনপাঠন ৷ এরপর ব্যাঙ্গালোর আইআইএম থেকে স্নাতক ৷ কটকের বাসিন্দা সোফিয়া ফিরদৌস কংগ্রেসের হয়ে ওড়িশা বিধানসভা নির্বাচনে বারাবাটি-কটক কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন ৷ তাঁর এই জয় ওড়িশার রাজনীতিতে ইতিহাস তৈরি করেছে ৷ ওড়িশার প্রথম মুসলিম মহিলা বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন সোফিয়া ৷ ওড়িশার একটি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি বড় হয়েছেন মূলত কটকের সমস্ত হিন্দু পরিবারের মাঝে ৷ কিন্তু, ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে সোফিয়া একজন 'গর্বিত ওড়িয়া' ৷ বিধানসভা নির্বাচনে জিতে এমনই বার্তা দিলেন সোফিয়া ফিরদৌস ৷
বিজেপির পূর্ণ চন্দ্র মহাপাত্রকে 8,001 ভোটে হারিয়ে বারাবাটি-কটক আসন থেকে জয়ী হয়েছেন সোফিয়া ফিরদৌস ৷ সংবাদসংস্থা পিটিআই'কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে 32 বছরের নবনির্বাচিত কংগ্রেস বিধায়ক বলেন, "কটকের মানুষ সৌভ্রাতৃত্বে বিশ্বাসী ৷ তাঁরা প্রমাণ করে দিয়েছেন যেখানে উন্নয়নের প্রশ্ন, সেখানে ধর্মের কোনও স্থান নেই ৷ আমার কাছে ধর্ম হল একটা মাধ্যম ৷ যার সাহায্যে মানুষ সর্বশক্তিমান, না-দেখা শক্তির আরাধনা করা ৷ আমি বিশ্বাস করি আধ্যাত্মিকতা সবার জন্য অপরিহার্য, তা সে হিন্দু হোক মুসলিম হোক বা খ্রিস্টান ৷ কিংবা অন্য যে কোনও ধর্মের মানুষ হোন না কেন ৷ এটা একজনকে একাগ্র ও সবল করতে সাহায্য করে ৷"
তিনি জানান, ছোটবেলায় মিশনারি স্কুলে পড়ার সুবাদে তিনি প্রার্থনা করতেন ৷ নিজের এলাকায় দুর্গাপুজোয় অংশ নিতেন ৷ সবধর্মের উৎসবে অংশ নিতেন এবং সেগুলিকে উদযাপন ও উপভোগ করতেন ৷ এই প্রসঙ্গে সোফিয়া বলেন, "কটক হল সৌভ্রাতৃত্বের শহর ৷" আর প্রথম মুসলিম মহিলা বিধায়ক হওয়ার প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, "প্রথমত, আমি একজন গর্বিত ওড়িয়া এবং ভারতীয় ৷ মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছে, কারণ আমি কটকের মেয়ে ৷ আর এটা কাকতালীয় যে আমি একজন মুসলিম এবং এই ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি ৷"
ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নন্দিনী শতপথীকে রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে বেছে নেওয়া সোফিয়া ফিরদৌস বলেন, "প্রায় 90 বছরের ইতিহাসে ওড়িশা বিধানসভায় 140 জনেরও বেশি মহিলা বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ৷ কিন্তু, তাঁদের মধ্যে কেউ মুসলিম ছিলেন না ৷ ওড়িশার প্রথম মুসলিম মহিলা বিধায়কের ট্যাগ আপনা থেকেই এসেছে ৷ ঈশ্বরকে এর জন্য ধন্যবাদ জানাই ৷ আমি খুব খুশি ৷"