নয়াদিল্লি, 30 জানুয়ারি: আর কোনও মামলাকারীর আবেদনপত্রে তাঁদের জাতি বা ধর্ম উল্লেখ করা যাবে না ৷ আজ এমনই নির্দেশিকা জারি করল সুপ্রিম কোর্ট ৷ উল্লেখ্য, যে কোনও মামলার আবেদনপত্রে মামলাকারী জাতি ও ধর্ম উল্লেখ করা থাকে ৷ যা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি আহসানুদ্দিন আমানুল্লাহর ডিভিশন বেঞ্চ ৷
ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, "আবেদনপত্রে মামলাকারীর জাতি বা ধর্ম উল্লেখ করার কোনও কারণ আমরা দেখছি না ৷ তা সে এই আদালতে হোক বা নিম্ন আদালত ৷" পাশাপাশি পুরনো এই অভ্যেস বদলের কথা বলেছে শীর্ষ আদালত ৷ এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকাও দিয়েছে শীর্ষ আদালত ৷
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ৷ আইনজ্ঞদের একাংশের মতে, বিচার ব্যবস্থার কাছে দেশের সকল নাগরিক সমান ৷ আর ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে কোনও জাতি বা ধর্মের প্রাধান্য পাওয়ার কথা নয় ৷ উল্লেখ্য, রাজস্থানের একটি বদলির পিটিশন সংক্রান্ত শুনানির আবেদনপত্রে দু’তরফের মামলাকারীর অন্যান্য সব তথ্যের সঙ্গে জাতি ও ধর্ম নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল ৷ সেই মামলার প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশিকা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট ৷
বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি আহসানুদ্দিন আমানুল্লাহর ডিভিশন বেঞ্চ তাদের পর্যবেক্ষণে জানায়, "আমরা মনে করি না কোনও মামলার মামলাকারীদের আবেদনে জাতি বা ধর্ম উল্লেখ করার কারণ আছে ৷ তা সে এই আদালত (সুপ্রিম কোর্ট) হোক বা নিম্ন আদালত ৷ এই ধরনের অভ্যেস ত্যাগ করতে হবে এবং অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে ৷"
আদালত তার পর্যবেক্ষণে এও উল্লেখ করেছে, "একটি সাধারণ নির্দেশিকা পাশ করা উপযুক্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, এখন থেকে এই আদালতে কোনও মামলাকারী বা পার্টির আবেদন/কার্যপ্রণালীতে তাঁর বা তাঁদের জাতি বা ধর্ম উল্লেখ করা যাবে না ৷ এমনকি নিম্ন আদালতেও এমন কোনও তথ্য পেশ করা যাবে না ৷" তবে, শুধু সুপ্রিম কোর্ট বা নিম্ন আদালত নয়, এই নির্দেশিকা দেশের সব হাইকোর্টগুলির ক্ষেত্রেও কার্যকর হবে ৷
যেখানে হাইকোর্টগুলিকে নিশ্চিত করতে হবে, তাদের বিচারবিভাগীয় ক্ষেত্রে থাকা সব নিম্ন আদালতে যাতে, কোনও মামলা, পিটিশন এবং কার্যপ্রণালীতে মামলাকারীর জাতি বা ধর্ম উল্লেখ না থাকে ৷ শীর্ষ আদালত এও বলেছে, "উপরোক্ত নির্দেশাবলী অবিলম্বে মেনে চলার জন্য, বার-সদস্যদের পাশাপাশি রেজিস্ট্রারদেরও অবগত করা হবে ৷ এই আদেশের একটি কপি সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রারকে পর্যবেক্ষণ ও কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য সমস্ত হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলদের কাছে পাঠাতে বলা হচ্ছে ৷"
আরও পড়ুন: