নয়াদিল্লি, 14 ডিসেম্বর: সংবিধান নিয়ে বিতর্কে কংগ্রেসকে কার্যত তুলোধনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ সংবিধান প্রণয়ন থেকে শুরু করে একাধিক ইস্য়ুতে প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি এবং তাঁর পুত্র প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধিকেও আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷
সংবিধান প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে এদিন তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন কংগ্রেস সরকারের আমলে বারবার সংবিধান রক্তাক্ত হয়েছে ৷ গণতন্ত্র আহত হয়েছে ৷ এই প্রসঙ্গে 1975 সালে সংবিধানের 25 বছর পূর্তিতে জরুরি অবস্থা জারির কথা ফের উত্থাপন করেন মোদি ৷ গান্ধি পরিবারকে নিশানা করে তিনি বলেন, "এই পরিবার বিভিন্নভাবে সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করেছে ৷ এই পরিবারই দেশে 55 বছর ধরে সরকারে ছিল ৷" এমনকী জরুরি অবস্থা নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করার সময় প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, "কংগ্রেসের শরীরে যে পাপ লেগে রয়েছে, তা ধুলেও যাবে না ৷"
শুধু পূর্বসূরিরাই নয়, গান্ধি পরিবারের বর্তমান প্রজন্ম অর্থাৎ রাহুল ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধিও একই কাজ করে চলেছেন বলে তোপ দাগেন লোকসভার নেতা মোদি ৷ তিনি জানান, তাঁর মতো অনেকেই এখন সংসদে রয়েছেন, যাঁদের রাজনীতিতে তেমন কোনও প্রেক্ষাপট নেই ৷ কিন্তু সংবিধানের জোরেই তাঁরা এখানে পৌঁছতে পেরেছেন ৷
রাহুল গান্ধির নামোল্লেখ না করেই প্রধানমন্ত্রী তাঁকে আক্রমণ করেন ৷ তিনি মনে করিয়ে দেন, ইউপিএ জমানায় মন্ত্রিসভায় পাশ হয়ে যাওয়া অর্ডিন্যান্স প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলেছিলেন রাহুল গান্ধি ৷ তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন মনমোহন সিং ৷ পরে ক্যাবিনেট নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সেই সময় ন্যাশনাল অ্যাডভাইজারি কাউন্সিলকে (এনএসি) ক্যাবিনেটের উপরে স্থান দেওয়া হয়েছিল ৷ আর এনএসি'র মাথায় ছিলেন সোনিয়া গান্ধি ৷
জাতভিত্তিক জনগণনার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷ তিনি জানান, সংবিধান প্রণেতারা ধর্ম ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে সংরক্ষণ চাননি ৷ তার সঙ্গে জড়িয়ে ছিল দেশের ঐক্য এবং অখণ্ডতা ৷ কিন্তু ক্ষমতার লোভে এবং ভোটব্যাঙ্ক তুষ্টিকরণে সংবিধানকে লঙ্ঘন করার চেষ্টা চালিয়েছে কংগ্রেস ৷ তিনি এও জানান, ইন্দিরা গান্ধির সরকারের আমলে 'গরিবি হঠাও' সবচয়ে বড় মিথ্যা ৷ তাঁর পর প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এর ফায়দা তুলেছে বলে অভিযোগ তোলেন প্রধানমন্ত্রী ৷
সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বীকার করে নেন, বিজেপি সরকারও সংবিধান সংশোধন করেছে ৷ তাঁর দাবি, সেই সংশোধন দেশের ঐক্যের স্বার্থে ৷ সংবিধানের 370 ধারা বিলোপ করা হয়েছে দেশের ঐক্যের কথা ভেবে ৷ দেশের ঐক্য নিয়ে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিজেপি সরকারের, একদেশ এক রেশন কার্ড, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, এক দেশ এক ট্যাক্স জিএসটি-র কথা তোলেন ৷ বক্তৃতার শেষে দেশের উন্নয়নে 11টি প্রস্তাব পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷ এর মধ্যে অন্যতম দুর্নীতির প্রতি সরকারের জিরো টলারেন্স ৷