গুয়াহাটি, 6 জুলাই: বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে অসমে । এরই সঙ্গে লাগাতার বৃষ্টির জেরে ব্রহ্মপুত্র নদ ও তার উপনদীগুলো জল বেড়ে ফুলে ফেঁপে উঠেছে । ব্রহ্মপুত্রের জল এলাকাগুলিতে প্রবেশ করেছে ৷ এর ফলে বহু গ্রাম এখনও জলের তলায় । রাজ্যে বন্যার কবলে পড়ে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে ৷ প্রাণহানি হয়েছে পশুদেরও ৷
রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের 30টি জেলা এখনও বন্যার কবলে রয়েছে । এই 30টি জেলার 3618টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যায় তলিয়ে গিয়েছে । 24.22 লক্ষ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । বন্যা কবলিত জেলাগুলি হল কামরূপ, করিমগঞ্জ, ধেমাজি, দারাং, ধুবরি, ডিব্রুগড়, কাছাড়, তিনসুকিয়া, লখিমপুর ইত্যাদি ।
ধুবরিতেই কেবল 7.7 লক্ষ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । এছাড়া বারপেটায় 1.39 লক্ষ, কাছাড়ে 1.75 লক্ষ, দারংয়ে 1.86 লক্ষ এবং মরিগাঁওয়ে 1.46 লক্ষ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং অন্যান্য মন্ত্রীরা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে রাজ্যের বিভিন্ন বন্যা কবলিত জেলা পরিদর্শন করেছেন ৷ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর তরফে প্রশাসনকে উদ্ধার ও ত্রাণের কাজে তৎপরতা জোরদার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
আঞ্চলিক হাওয়া অফিস 9 জুলাই পর্যন্ত অসমের বিভিন্ন অংশে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে ৷ অসম ছাড়াও অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডেও খুব ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে । হাওয়া অফিসের তরফে মঙ্গলবার পর্যন্ত উচ্চ ও নিম্ন অসমের বেশ কয়েকটি জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে ।
জানা গিয়েছে, অসমের এই বন্যার প্রভাব পড়েছে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যানে ৷ বন্যায় ডুবে গিয়েছে কাজিরাঙা ন্যাশনাল পার্ক ৷ আর তার জেরে 4টি হগ ডিয়ার বা হরিণের ডুবে মৃত্যু হয়েছে ৷ আরও অনেক বন্যপ্রাণী জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে ৷ যার মধ্যে 24টি বন্যপ্রাণীকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে ৷ উদ্ধার হওয়া জীবজন্তুগুলিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ অসম বনদফতরের তরফে জানানো হয়েছে, পূর্ব অসমের 233টি বন্যপ্রাণ কেন্দ্রের মধ্যে 167টি বন্যায় ডুবে গিয়েছে ৷