নয়াদিল্লি, 12 মার্চ: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ (সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট) নিয়ে ব্যাখ্যা দিল কেন্দ্রীয় সরকার ৷ কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে যে অনুপ্রবেশকারীদের ফেরত পাঠানোর জন্য এই আইন তৈরি হয়নি ৷ তাছাড়া এই আইন মুসলিম বিরোধী বলে যে কোনও কোনও মহল থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, সেটাও অনুচিত ৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে এই ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে ৷
সেখানে অমিত শাহের মন্ত্রকের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে এই আইনের সঙ্গে মুসলিমদের কোনও সম্পর্ক নেই ৷ এতদিন দেশের হিন্দু বা অন্যান্য নাগরিকদের মতো তাঁরা যে সুযোগ-সুবিধা পেতেন, সবই পাবেন ৷ সিএএ কার্যকর হওয়ার ফলে মুসলিমদের নাগরিকত্ব নিয়ে টানাটানি হবে না ৷ এই নিয়ে ভয়ের কিছু নেই ৷ কোনও ভারতীয় নাগরিককে তাঁদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য কোনও নথি চাওয়া হবে না ৷
উল্লেখ্য, 2019 সালের শীতকালীন অধিবেশনে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করায় কেন্দ্রীয় সরকার ৷ পরে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সেই বিল আইনে পরিণত করেন ৷ কিন্তু সেই দেশের বিভিন্ন অংশে এই আইনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়৷ তার পরের চারবছর কেটে যাওয়ার পর অবশেষে সিএএ কার্যকর করেছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ ফলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আসা ওই দেশের সংখ্যালঘু শরণার্থীরা যাঁরা 2014 সালের 31 ডিসেম্বরের আগে এসেছেন, তাঁরা নাগরিকত্ব পাবেন ৷ তাছাড়া এই আইনে আগে 11 বছর সময় লাগত প্রতিবেশী দেশের ধর্মীয় সংখ্য়ালঘুদের নাগরিকত্ব পেতে ৷ এখন সেটা পাঁচ বছর লাগবে ৷
কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, এই আইন করে এনআরসি করতে চায় বিজেপি ৷ মানুষকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে ৷ যদিও মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "তিনটি মুসলিম দেশে সংখ্যালঘুদের নিপীড়নের কারণে, সারা বিশ্বে ইসলামের নাম খারাপভাবে কলঙ্কিত হয়েছিল । তবে, ইসলাম একটি শান্তিপূর্ণ ধর্ম হওয়ায় ধর্মীয় ভিত্তিতে ঘৃণা, হিংসা, কোনও নিপীড়নের প্রচার বা পরামর্শ দেয় না । এই আইন নিপীড়নের নামে ইসলামকে কলঙ্কিত হওয়া থেকে রক্ষা করে ৷"
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আরও জানিয়েছে, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে অভিবাসীদের এই দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারতের কোনও চুক্তি নেই । বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব আইনের ধারা 6, যেখানে স্বাভাবিক নিয়মে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়, এর অধীনে বিশ্বের কোথাও থেকে মুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব চাইতে কোনও বাধা নেই ৷ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভারতীয় মুসলিমদের অধিকার খর্ব করা হচ্ছে না ৷ স্বাধীনতার পর থেকে অন্যান্য ধর্মের মতোই তাঁরা যেমন ধর্মাচরণ করছে, তার উপর এই আইন কোনও প্রভাব ফেলবে না ৷
উপভোগ করার স্বাধীনতা ও সুযোগকে হ্রাস না করে যেহেতু তারা সাধারণত স্বাধীনতার পর থেকে অন্যান্য ধর্মের ভারতীয় নাগরিকদের মতো অনুশীলন এবং বিনোদন করে আসছে, CAA 2019 নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের যোগ্যতার সময়কাল 11 থেকে কমিয়ে 5 বছর করেছে । সুবিধাভোগী যারা আফগানিস্তান, বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে ধর্মীয় ভিত্তিতে নির্যাতিত হয়েছিল এবং যারা তাদের প্রতি উদার আচরণ দেখানোর লক্ষ্যে 31 ডিসেম্বর, 2014 বা তার আগে ভারতে প্রবেশ করেছিল ।"
আরও পড়ুন: