বিলাসপুর, 8 নভেম্বর: একটি 'ওকে'র জন্য 3 কোটি টাকার ক্ষতি ভারতীয় রেলের! যাত্রীদের হয়রানির কথা আলাদা করে না বললেও চলবে।
তাঁর নাম ভেঙ্কটগিরি রাও । বিশাখাপত্তনমের স্টেশন মাস্টার। 2012 সালের জুন মাসে রাতে ডিউটি করছিলেন। বিয়ে করেছিলেন মাত্র বছর খানেক আগে । কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না। সম্পর্ক রোজ একটু একটু খারাপ হচ্ছিল। বচসা হত নিত্যদিন। ঘটনার সময়ও মোবাইলে স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঝগড়াই চলছিল । ফোন রেখে দেওয়ার জন্য স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে স্বামী বলেন, 'ওকে'। আর এই সামান্য শব্দের জন্যই সব ওলটপালট হয়ে গেল!
স্টেশন মাস্টারের স্ত্রী যখন ফোন করেছিলেন তখন আরও দুটো ঘটনা পাশাপাশি ঘটছিল। একটি ট্রেন স্টেশনের দিকে আসছিল। সেই ট্রেনের অভিমুখ জানার অপেক্ষায় ছিলেন সিগন্যাল ম্যান। তিনি অন্য একটি ফোন লাইনে কথা বলছিলেন ওই স্টেশন মাস্টারের সঙ্গেই। সিগন্যাল ম্যানও ফোনে 'ওকে' শুনতে পান । সেই মতো ট্রেনটিকে পাঠিয়েদেন নকশাল প্রভাবিত এলাকায়। নিয়ম অনুযায়ী রাত 10টা থেকে ভোর 6টা পর্যন্ত ওই এলাকায় ট্রেন চলতে পারে না। সেদিন সেটাই হয়েছিল। ট্রেন ওই এলাকায় ঢুকে পড়ায় তাকে আবার নির্দিষ্ট জায়গায় ফিরিয়ে আনতে হয়। তার জন্যই রেলের খরচ হয়ে যায় প্রায় 3 কোটি টাকা !
ভেঙ্কটগিরিকে সাসপেন্ড করে রেল । তবে এই গল্পের শেষ এখানেই নয় । স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক শেষ করতে চেয়ে বিশাখাপত্তনমের পারিবারিক আদালতে আবেদন করেন তিনি। তাঁর স্ত্রী সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে দাবি করেন, এই মামলার শুনানি বিশাখাপত্তনমে না হয়ে তাঁর বাপেরবাড়ি ছত্তিশগড়ের দূর্গের পারিবারিক আদালতে হোক । সর্বোচ্চ আদালত সেই দাবি মেনে নেয়।
সেখানে ভেঙ্কটগিরির বিরুদ্ধে পণ চাওয়ার অভিযোগ আনেন স্ত্রী। ওঠে নারী নির্যাতনের অভিযোগ। আরও বেশ কয়েকটি দাবি করা হয়। নাম জড়ায় ভেঙ্কটগিরির পরিবারের কয়েকজন সদস্যরও। তবে আদালতে তাতে সাড়া দেয়নি । এরপর বিলাসপুর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ভেঙ্কটগিরি । সেখানে শুনানির সময় 5 নভেম্বর আদালত জানায়, স্ত্রী যে আচরণ করেছেন তা মানসিক অত্যাচারের সামিল ।