কলকাতা, 26 মার্চ: সদ্য দিল্লির জহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। সেই ফলাফল লোকসভা নির্বাচনে নির্ণায়কের ভূমিকা না-নিতে পারলেও যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করছেন বাংলার ছেলে অভিজিৎ ঘোষ। যিনি নির্বাচনে ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন। যদিও এর আগে তিনি প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। ইটিভি ভারতকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তার দাবি, "ছাত্র রাজনীতি কেন জরুরি সেটা জেএনইউতে এসে আমার কাছে অনেকটা স্পষ্ট হয়েছে। তাই, সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেছি। এর আগে সেই পরিবেশ বা সুযোগ আমার কাছে ছিল না।"
দিল্লির এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন বাংলার মেয়ে ঐশী ঘোষ। এখান থেকেই ছাত্র রাজনীতির মধ্যে দিয়ে গোটা দেশে পরিচিতি লাভ করেছেন দীপ্সিতা ধরও। 2024 নির্বাচনে শিলিগুড়ির ছেলে অভিজিৎ ঘোষ সেই তালিকায় নয়া নাম। শিলিগুড়িতে স্কুলে পড়াশোনা শেষে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন মহাবিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে স্নাতক হওয়ার পর জেএনইউ'য়ে মাস্টার্সে ভর্তি হন অভিজিৎ। এখন পিএইচডি'র দ্বিতীয় বর্ষের গবেষণা করছেন তিনি। তার দাদা শিলিগুড়িতে ইমারত ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তার ভাই পড়াশোনা করছে। বাবাও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং সিপিএমের সক্রিয় কর্মী।
মঙ্গলবার টেলিফোনে ইটিভি ভারতকে এক সাক্ষাৎকারে অভিজিৎ ঘোষ তার পরবর্তী পদক্ষেপের কথা স্পষ্ট করেছেন। আপাতত তিনি ছাত্র রাজনীতির সঙ্গেই যুক্ত থাকতে চান। সংসদীয় রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা এই মুহূর্তে নেই। তবে, ভবিষ্যতে ঐশী ঘোষ, দীপ্সিতা ধরের মতো সংসদীয় রাজনীতিতে আসার সুযোগ পেলে পরিস্থিতি বুঝে পদক্ষেপ করবেন বলেও জানিয়েছেন।
অভিজিৎ মনে করেন, জেএনইউ-এর এই ফলাফল আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবে। অভিজিৎ বলেন, "দেশের বড় অংশের ছাত্র সমাজ জেএনইউ-এর দিকে তাকিয়ে থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে চেষ্টা করে। কম খরচে ভালো শিক্ষা গ্রহণ থেকে শুরু করে ছাত্রদের স্কলারশিপ ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধাকে বিষয়ক আন্দোলনে নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করে। এখান থেকেই উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্যাম্পাসে-ক্যাম্পাসে ছাত্রদের দাবি তুলে ধরার পাশাপাশি ক্যাম্পাসের বাইরে ভাত ও কাজের দাবিতে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করবে নতুন প্রজন্ম। লোকসভা নির্বাচনে নির্ণায়কের ভূমিকা না নিতে পারলেও এই ভোটে অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।" তাই এখনকার তরুণ প্রজন্মের কাছে অভিজিতের বার্তা, "নিজের নিজের এলাকা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্র- সব জায়গাতেই অর্থনৈতিক সামাজিক এবং রাজনৈতিক পর্যালোচনা করে সক্রিয় থাকা প্রয়োজন। সমাজ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সার্বিকভাবে রুজি-রুটির প্রশ্নে ছাত্র সমাজ ঐক্যবদ্ধ হলে ধর্মীয় ভেদাভেদ এবং বৈষম্য ঘোচানো সম্ভব হবে।"
আরও পড়ুন: