বেঙ্গালুরু, 23 জুন: কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে সফলভাবে অবতরণ করল রিইউজেবল লঞ্চ ভেহিকেল এলইএক্স-03 ৷ এই নিয়ে টানা তৃতীয়বার লঞ্চ ভেহিকেলের ক্ষমতা প্রদর্শন করে সাফল্য অর্জন করল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ৷ ইসরোর তরফে রবিবার জানানো হয়েছে, মহাকাশ থেকে ফিরে আসা একটি যানের অভিমুখ ও অবতরণের জায়গা এবং উচ্চ-গতিতে অবতরণের অবস্থার উপর ভিত্তি করে এই মিশনটি পরিচালিত করা হয়েছিল ৷ যেখানে একটি রিইউজেবল লঞ্চ ভেহিকেল (আরএলভি) এর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি অর্জনে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে ।
জানা গিয়েছে, ল্যান্ডিং এক্সপেরিমেন্ট (এলইএক্স-03) সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ পরীক্ষাটি কর্ণাটকের চিত্রদুর্গার অ্যারোনটিক্যাল টেস্ট রেঞ্জে (এটিআর) সকাল 7টা 10মিনিটে পরিচালিত হয়েছিল । ইসরো তার প্রেস রিলিজে বলেছে, আরএলভি এলইএক্স-01 এবং এলইএক্স-02 মিশনের সাফল্যের পরে আরএলভি এলইএক্স-03 আরও চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে সফলভাবে অবতরণ করেছে ৷
'পুষ্পক' নামের ডানাওয়ালা যানটিকে ভারতীয় বায়ুসেনার চিনুক হেলিকপ্টার থেকে 4.5 কিমি উচ্চতায় রানওয়ে থেকে 4.5 কিমি দূরে একটি রিলিজ পয়েন্ট থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল । পুষ্পক নিজে থেকে ক্রস-রেঞ্জ সংশোধন কৌশল চালিয়ে রানওয়ের কাছে পৌঁছয় এবং সফলভাবে রানওয়ে কেন্দ্ররেখায় অবতরণ করে ৷ এই ভেহিকেল কম লিফট-টু-ড্র্যাগ রেশিও অ্যারোডাইনামিক কনফিগারেশনের কারণে অবতরণের সময় গতিবেগ 320 কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা ছাড়িয়ে গিয়েছে, যা একটি বাণিজ্যিক বিমানের ক্ষেত্রে 260 কিলোমিটার এবং একটি সাধারণ যুদ্ধ বিমানের ক্ষেত্রে 280 কিলোমিটার ঘণ্টায় থাকে ৷
ইসরো জানিয়েছে, অবতরণের পরে ভেহিকেলের গতিবেগ তার ব্রেক প্যারাসুট ব্যবহার করে প্রায় 100 কিমি প্রতি ঘণ্টায় কমিয়ে আনা হয়েছিল ৷ তারপরে ল্যান্ডিং গিয়ার ব্রেকগুলি রানওয়েতে গতি হ্রাস এবং থামানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল । এই অবতরণ পর্বের স্থিতিশীল এবং সুনির্দিষ্ট করতে সে সময় পুষ্পক রানওয়েতে নিজে থেকে তার রাডার এবং নোজ হুইল স্টিয়ারিং সিস্টেম ব্যবহার করে ।
মহাকাশ সংস্থার দাবি, এই মিশনের মাধ্যমে অনুদৈর্ঘ্য এবং পার্শ্বীয় সমতল ত্রুটি সংশোধন করা হয়েছে যা ভবিষ্যতের অরবিটাল পুনঃপ্রবেশ মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় ৷ আরএলভি-এলইএক্সে মাল্টি-সেন্সর ফিউশন ব্যবহার করা হয়েছে ৷ যার মধ্যে ইনরশিয়াল সেন্সর, রাডার অল্টিমিটার, ফ্লাশ এয়ার ডেটা সিস্টেম, সিউডোলাইট সিস্টেম এবং নাভিসি-এর মতো সেন্সর রয়েছে ৷
ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমানাথ এই ধরনের জটিল মিশনে সাফল্যের ধারা বজায় রাখার প্রচেষ্টার জন্য টিমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন । ভিএসএসসি-এর ডিরেক্টর ড. এস উন্নীকৃষ্ণান নায়ার জোর দিয়েছেন যে, এই ধারাবাহিক সাফল্য ভবিষ্যতের অরবিটাল পুনঃপ্রবেশ মিশনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জটিল প্রযুক্তিগুলি ব্যবহারে ইসরোর আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে তুলবে । জে মুথুপান্ডিয়ান এবং বি কার্তিক এই সফল মিশনের পিছনে রয়েছেন ।