নয়াদিল্লি, 7 অক্টোবর: অতীতের একাধিক ঘটনাকে তুলে ধরে ভারতকে মলদ্বীপের 'কাছের বন্ধু' বলে উল্লেখ করলেন দেশের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি ৷ ভারত সফরে এসেছেন মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ মুইজ্জু ৷ তাঁর সফরের লক্ষ্য অবশ্যই দিল্লির সঙ্গে মলদ্বীপের সম্পর্ককে শক্তিশালী এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন সীমানা নির্ধারণ করা ৷
1998 সালের অভ্যুত্থানের চেষ্টা, 2004 সালের সুনামি, 2014 সালের মলদ্বীপে জল সংকটের ঘটনাগুলি তুলে ধরে সোমবার বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি উল্লেখ করেছেন, ভারত সর্বদাই যে কোনও সঙ্কটের পরিস্থিতিতে প্রথম দ্বীপরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাঁর কথায়, "দুই দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক আছে । এর অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভও রয়েছে ৷ বাণিজ্য, অর্থনৈতিক, উন্নয়ন, জনগণের মধ্যে সংযোগ, প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তাও এর এক-একটি অংশ ৷ এই সফরে আমাদের প্রয়াস, এই শক্তিশালী সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করা এবং পারস্পরিক উদ্বেগের নিরসন করা ৷ ভারত, মলদ্বীপের অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্য ও উন্নয়ন অংশীদার ৷”
বিদেশ সচিব মিসরি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আরও বলেন, "আমরা মলদ্বীপে বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পে অগ্রগতি করছি ৷ এই সম্পর্কের গুরুত্ব সম্পর্কে দুই দেশের নেতৃত্বই স্বীকৃতি দিয়েছেন ৷ আমরা সেই সম্পর্ককে অব্যাহত রাখছি যা ইতিমধ্যেই শক্তিশালী এবং বর্তমানে ইতিবাচক পথে রয়েছে ৷ আমরা এভাবেই এগিয়ে যেতে চাই।"
এর আগে চলতি বছরের জুনে প্রধানমন্ত্রী মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ভারত সফরে এসেছিলেন মইজ্জু। বিদেশ সচিব বলেন, "ভারত সর্বদা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে মলদ্বীপের যে কোনও সংকটের প্রথম প্রতিক্রিয়াশীল দেশ ছিল ৷ 1988 সালে অভ্যুত্থানের চেষ্টা, 2004 সালে সুনামি, 2014 সালে জলের সংকট বা কয়েক বছর আগে করোনা অতিমারি, যাই হোক না কেন, সব ক্ষেত্রেই দ্বীপরাষ্ট্রের পাশে দাঁড়িয়েছে ৷"
রাষ্ট্রপতি মুইজ্জু রবিবার পাঁচ দিনের সফরে ফার্স্ট লেডি সাজিদা মহম্মদের সঙ্গে এসেছেন। মুইজ্জু প্রতিনিধিদল-সহ মঙ্গলবার আগ্রা এবং মুম্বই সফরে করবে বলে জানা গিয়েছে। বেঙ্গালুরু সফরের মধ্য দিয়ে শেষ হবে তাঁর এবারের ভারত সফর। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অন্য শীর্ষ প্রতিনিধিরা তাঁকে রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাগত জানান।
মলদ্বীপের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী মোদি হায়দরাবাদ হাউসে দ্বিপাক্ষিক আলোচনাও করেছেন। দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উন্নয়নমূলক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিদেশ সচিব মিসরি ৷ তিনি বলেন, "আমরা মলদ্বীপের উন্নয়নে যথেষ্ট অবদান রেখেছি ৷ সময়ে সময়ে উল্লেখযোগ্য আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেছি। মালদ্বীপের অনুরোধ এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে মলদ্বীপকে সক্ষম করতে সেই আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।"
এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেছেন, "দুই দেশ সামুদ্রিক সন্ত্রাসবাদ থেকে শুরু করে মাদক পাচার সম্পর্কিত একাধিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করছে।" ভারত-মলদ্বীপ সম্পর্কের বিষয়ে বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি বলেন, "আমি শুধু বলব, এই বন্ধুত্ব বজায় থাকবে।" ভারত আর্থিক সংকটে থাকা মলদ্বীপকে 100 মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়ে সাহায্য করেছে। দুই দেশ মুদ্রা বিনিময় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। বিদেশ সচিব মিসরি জানান, এই চুক্তির উদ্দেশ্য হল, মলদ্বীপের বৈদেশিক মুদ্রার সংগ্রহ বাড়ানো ৷