পুনে, 27 অক্টোবর: খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনের ঘটনায় ভারতীয় হাইকমিশনার-সহ অন্য আধিকারিকদের দিকে আঙুল তুলেছিল কানাডা। এই ঘটনা যে কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না তা আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। পাশাপাশি কানাডা সরকারের দাবিও খারিজ করেন মোদি মন্ত্রিসভার এই সদস্য ।
শনিবার পুনেতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জয়শঙ্করের বক্তব্যে ফের উঠে আসে খালিস্তান প্রসঙ্গ ৷ এই বিষয়ে আরও একবার কানাডার সরকারকে নিশানা করেন তিনি ৷
জয়শঙ্কর বলেন, "ভারতের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের কানাডায় যেভাবে নিশানা করা হয়েছে, তা দেশ কোনওভাবেই মেনে নেবে না ৷" দেশ তথা দেশবাসীর স্বার্থে এই বিষয়ে অবশ্যই পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে সাফ জানান তিনি ৷ দেশের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে ইতিমধ্যেই ভারতের তরফে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান বিদেশমন্ত্রী ৷
সম্প্রতি, নিজেদের তদন্ত রিপোর্টে হারদীপ সিং নিজ্জর হত্যায় কানাডায় ভারতের রাষ্ট্রদূত সঞ্জয় বর্মাকে দায়ী করে জাস্টিন ট্রুডোর সরকার ৷ এখানেই শেষ নয়, ভারতের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাকেও কাঠগোড়ায় তোলা হয় ৷ তাদের দাবি, খালিস্তানি নেতাদের মেরে ফেলার জন্য সেই দেশে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি ৷ এই কাজে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করে কানাডা ৷
এর জবাবে ভারতে নিযুক্ত কানাডার 6 কূটনীতিককে বরখাস্ত করে ভারত ৷ পাশাপাশি কানাডাও ভারতীয় আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দেয়। তার আগেই অবশ্য হাইকমিশনার সঞ্জয় বর্মা-সহ বাকিদের দেশে ফিরে আসার বার্তা দিয়েছিল দিল্লি । সেই মতো তাঁরা দেশে ফিরে আসেন।
অনুষ্ঠানে জয়শঙ্কর আরও বলেন, "সমস্যাটি হল সংখ্য়ালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ হয়েও সেদেশের রাজনীতিতে তাদের (খালিস্তানের সমর্থকদের) প্রভাব যথেষ্ট ৷ অবশ্য এক্ষেত্রে সেই দেশের সরকারের সমর্থন পেয়েছে তারা ৷ তবে এই রাজনৈতিক দল কানাডার জন্যও ক্ষতিকর ৷" বিদেশমন্ত্রীর মতে, এই বিষয়ে বহুবার কানাডা সরকারকে সতর্ক করা হয়েছে ৷ কিন্তু তারা কোনও কথায় কান দেয়নি ৷
এর আগে দেশে ফিরে খালিস্তানি সমস্যা প্রসঙ্গে একাধিক মন্তব্য করেন কানাডায় ভারতীয় হাই-কমিশনার সঞ্জয় বর্মা ৷ সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি জানান, খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দেশে ফেরানোর জন্য ভারত কানাডাকে 26টি অনুরোধ পাঠিয়েছিল ৷ তার মধ্যে মাত্র 5টির সমাধান হয়েছে ৷ বাকিগুলির কোনও সমাধানই হয়নি ৷ তিনি এই ঘটনাকে কানাডার নিষ্ক্রিয়তা বলে উল্লেখ করেন ৷ ওই পাঁচজনের প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া চলছে ৷
কানাডায় বসবাসকারী খালিস্তানি জঙ্গিরা সে দেশের নাগরিক ৷ আর তাই তাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর কানাডা। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন আগে তাদেরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ভারত সরকার ৷ ভারতের অভিযোগ, কানাডায় বসে নাশকতার ছক কষে তারা ৷ অথচ, এই প্রসঙ্গে কানাডা সরকার কোনও পদক্ষেপ নেয়নি ৷ এই বিতর্ককে সামনে রেখে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক এখন তলানিতে পৌঁছেছে ৷