ETV Bharat / bharat

পাকিস্তান-নির্ভরতা কমাতে চাবাহার বন্দর নিয়ে ইরানের সঙ্গে চুক্তি ভারতের - Chabahar Port - CHABAHAR PORT

Chabahar Port Deal: জলপথে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কমতে চলেছে পাকিস্তান ও চিনের উপর নির্ভরতা ৷ চাবাহার বন্দর নিয়ে ইরানের সঙ্গে 10 বছরের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করল ভারত ৷ কেন্দ্রীয় নৌপরিবহণ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের উপস্থিতিতে এই চুক্তি হয় ।

Chabahar Port Deal
ভারত-ইরান বন্দর চুক্তি (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 13, 2024, 9:19 PM IST

নয়াদিল্লি, 13 মে: চাবাহার বন্দরের উন্নয়নে ইরানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করল ভারত ৷ 10 বছরের জন্য এই চুক্তি করা হয়েছে । বন্দর, নৌপরিবহণ ও জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের উপস্থিতিতে ইন্ডিয়া পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড এবং ইরানের পোর্টস অ্যান্ড মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের সঙ্গে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে । ইরানে ভারতীয় দূতাবাসের এমনটাই সোশাব মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছে ৷

চুক্তি স্বাক্ষরের অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, "এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে আমরা চাবাহারে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করেছি । এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে চাবাহার বন্দরের কার্যকারিতা এবং দৃশ্যমানতার উপর ভালো প্রভাব পড়বে । চাবাহার শুধু ভারতের সবচেয়ে কাছের ইরানি বন্দরই নয়, সামুদ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি একটি চমৎকার বন্দর ।" সোনোওয়াল তাঁর ইরানি প্রতিনিধির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন । এই প্রথম বিদেশের কোনও বন্দরের সামগ্রিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে নজির গড়তে চলেছে ভারত ।

চাবাহার বন্দর আফগানিস্তান, মধ্য এশিয়া এবং ইউরেশিয়ানে বিস্তৃত ৷ ভারতের যোগাযোগের অন্যতম ক্ষেত্র এটি ৷ এই চুক্তির ফলে পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দর এবং চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের উপর নির্ভরশীলতা কমার সম্ভবনা রয়েছে । পাকিস্তানের উপর নির্ভর না করে আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ায় ভারতের প্রবেশের সুবিধার্থে চাবাহারকে আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডোর হিসাবে ব্যবহার করা হবে ।

ইরানের চাবাহার বন্দর পাকিস্তানকে বাইপাস করে আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার সঙ্গে ভারতের সংযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পথ হয়ে উঠবে । এই চুক্তি ভারত ও ইরানের মধ্যে বাণিজ্য ও কৌশলগত সম্পর্ক আরও নিবিঢ় । এটি লক্ষণীয় যে, বিদেশ মন্ত্রক বঙ্গোপসাগরের মায়ানমারের সিটওয়ে বন্দরে অপারেশনের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য এপ্রিল মাসে ইন্ডিয়া পোর্টস গ্লোবালের একটি প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দিয়েছিল । সোনোওয়ালের ইরান সফর এই সময়ে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে এসেছে ৷

চাবাহার বন্দর কেন ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?

চাবাহার বন্দর ভারতের জন্য কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ৷ কারণ এটি আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ায় প্রবেশের পথ । চাবাহার ভারতকে আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প পথ তৈরি করবে ৷ এটি এই অঞ্চলে বাণিজ্য ও সংযোগের জন্য পাকিস্তানের উপর নির্ভরশীলতা কমাবে ।

বাণিজ্য রুটের বৈচিত্র্যকরণ: চাবাহার ব্যবহার করে ভারত তার বাণিজ্য রুটগুলিকে বৈচিত্র্যময় করতে পারে ৷ ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বা বাধার সম্মুখীন হতে পারে, এমন প্রচলিত রুটের উপর নির্ভরতা হ্রাস করতে পারে ।

কৌশলগত ভারসাম্য: চাবাহার এই অঞ্চলে চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ক্ষেত্রে একটি কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষা করে ৷ কারণ, পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দর বর্তমানে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের অংশ ।

আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা: চাবাহারের মাধ্যমে বর্ধিত সংযোগ আফগানিস্তান, ইরান এবং ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সহযোগিতার প্রচারের মাধ্যমে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহায়ক হতে পারে । বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারতের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত উপস্থিতি জোরদার করার প্রচেষ্টায় চাবাহার বন্দর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন দেশের কূটনৈতিক মহলের একাংশ ।

আরও পড়ুন:

  1. প্রাক্তন নৌসেনা অফিসারদের দেশে ফেরাতে দিল্লির হাতিয়ার ভারত-কাতার চুক্তি
  2. এইচপিসিএলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশে ব্যাটারি সোয়াপিং স্টেশন গড়বে গোগোরো
  3. সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল আগেই, মলদ্বীপ থেকে সেনা সরিয়ে নিল ভারত

নয়াদিল্লি, 13 মে: চাবাহার বন্দরের উন্নয়নে ইরানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করল ভারত ৷ 10 বছরের জন্য এই চুক্তি করা হয়েছে । বন্দর, নৌপরিবহণ ও জলপথ মন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়ালের উপস্থিতিতে ইন্ডিয়া পোর্টস গ্লোবাল লিমিটেড এবং ইরানের পোর্টস অ্যান্ড মেরিটাইম অর্গানাইজেশনের সঙ্গে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে । ইরানে ভারতীয় দূতাবাসের এমনটাই সোশাব মিডিয়ায় পোস্ট করে জানিয়েছে ৷

চুক্তি স্বাক্ষরের অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, "এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে আমরা চাবাহারে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করেছি । এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে চাবাহার বন্দরের কার্যকারিতা এবং দৃশ্যমানতার উপর ভালো প্রভাব পড়বে । চাবাহার শুধু ভারতের সবচেয়ে কাছের ইরানি বন্দরই নয়, সামুদ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি একটি চমৎকার বন্দর ।" সোনোওয়াল তাঁর ইরানি প্রতিনিধির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন । এই প্রথম বিদেশের কোনও বন্দরের সামগ্রিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে নজির গড়তে চলেছে ভারত ।

চাবাহার বন্দর আফগানিস্তান, মধ্য এশিয়া এবং ইউরেশিয়ানে বিস্তৃত ৷ ভারতের যোগাযোগের অন্যতম ক্ষেত্র এটি ৷ এই চুক্তির ফলে পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দর এবং চিনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের উপর নির্ভরশীলতা কমার সম্ভবনা রয়েছে । পাকিস্তানের উপর নির্ভর না করে আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ায় ভারতের প্রবেশের সুবিধার্থে চাবাহারকে আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডোর হিসাবে ব্যবহার করা হবে ।

ইরানের চাবাহার বন্দর পাকিস্তানকে বাইপাস করে আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার সঙ্গে ভারতের সংযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পথ হয়ে উঠবে । এই চুক্তি ভারত ও ইরানের মধ্যে বাণিজ্য ও কৌশলগত সম্পর্ক আরও নিবিঢ় । এটি লক্ষণীয় যে, বিদেশ মন্ত্রক বঙ্গোপসাগরের মায়ানমারের সিটওয়ে বন্দরে অপারেশনের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য এপ্রিল মাসে ইন্ডিয়া পোর্টস গ্লোবালের একটি প্রস্তাবে সবুজ সংকেত দিয়েছিল । সোনোওয়ালের ইরান সফর এই সময়ে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে এসেছে ৷

চাবাহার বন্দর কেন ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?

চাবাহার বন্দর ভারতের জন্য কৌশলগত দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ ৷ কারণ এটি আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ায় প্রবেশের পথ । চাবাহার ভারতকে আফগানিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার দেশগুলিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প পথ তৈরি করবে ৷ এটি এই অঞ্চলে বাণিজ্য ও সংযোগের জন্য পাকিস্তানের উপর নির্ভরশীলতা কমাবে ।

বাণিজ্য রুটের বৈচিত্র্যকরণ: চাবাহার ব্যবহার করে ভারত তার বাণিজ্য রুটগুলিকে বৈচিত্র্যময় করতে পারে ৷ ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বা বাধার সম্মুখীন হতে পারে, এমন প্রচলিত রুটের উপর নির্ভরতা হ্রাস করতে পারে ।

কৌশলগত ভারসাম্য: চাবাহার এই অঞ্চলে চিনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের ক্ষেত্রে একটি কৌশলগত ভারসাম্য রক্ষা করে ৷ কারণ, পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দর বর্তমানে চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরের অংশ ।

আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা: চাবাহারের মাধ্যমে বর্ধিত সংযোগ আফগানিস্তান, ইরান এবং ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সহযোগিতার প্রচারের মাধ্যমে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহায়ক হতে পারে । বৃহত্তর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারতের অর্থনৈতিক ও কৌশলগত উপস্থিতি জোরদার করার প্রচেষ্টায় চাবাহার বন্দর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন দেশের কূটনৈতিক মহলের একাংশ ।

আরও পড়ুন:

  1. প্রাক্তন নৌসেনা অফিসারদের দেশে ফেরাতে দিল্লির হাতিয়ার ভারত-কাতার চুক্তি
  2. এইচপিসিএলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশে ব্যাটারি সোয়াপিং স্টেশন গড়বে গোগোরো
  3. সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল আগেই, মলদ্বীপ থেকে সেনা সরিয়ে নিল ভারত
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.