নয়াদিল্লি, 5 জুন: দুটো বাড়ির মধ্যে দূরত্ব প্রায় 14 কিলোমিটার ৷ দুটো বাড়ির মধ্যে মিলের চেয়ে অমিল-ই বেশি ৷ একটা বাড়ি দেশের সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা ৷ অন্য বাড়িটা ক'দিন ধরে শিরোনামে থাকছে ৷ দিল্লির 7 নম্বর লোক কল্যাণ মার্গের বাড়িতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তার থেকে বেশ অনেকটা দূরে রামকৃষ্ণপুরমের 5 নম্বর সেক্টরে বাড়ি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের। দুই বাড়িতে বুধবারের পড়ন্ত বিকেলে দু'টি আলাদা বৈঠক হল। প্রথমটা থেকে তৃতীয় এনডিএ সরকার গড়ার দিকে অনেকটা এগিয়ে গেল বিজেপি ও তাদের শরিকরা। আর ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক শেষে খাড়গে জানালেন, দেশের মানুষ বিজেপিকে চায় না। তাই দেশের মানুষের চাহিদাকে মান্যতা দিতে যখন যে পদক্ষেপ করা দরকার, তা তাঁরা করবেন। কিন্তু সেই পদক্ষেপ যে কী তা স্পষ্ট হল না।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের সব খবর এখানে
কংগ্রেস সভাপতির বাড়ির বৈঠকে দলের প্রাক্তন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধি থেকে শুরু করে উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব, এমনকী তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপায়ের পাশাপাশি এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন, জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা, উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বে থাকা শিবশেনার নেতা সঞ্জয় রাউত এবং আপ নেতা রাঘব চাড্ডারা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে বৈঠক হয়।
সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে সব নেতারা একসঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন খাড়গে। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কংগ্রেসের প্রথম দলিত সভাপতি বলেন, "আমাদের জোটের নেতারা দু'ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছেন। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অনেক পরামর্শ এসেছে। ইন্ডিয়া ব্লক দেশের জনগণকে ধন্যবাদ দিতে চায়। এই রায় সংবিধান ও গণতন্ত্র বাঁচানোর লড়াই। কর্মসংস্থানের অভাব ও মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে দেশের মানুষ। ইন্ডিয়া ব্লক মোদির নেতৃত্বে চলা বিজেপি সরকারের বিরোধিতা করবে। ভোটের রায়ে দেশ জানিয়েছে, তারা বিজেপির শাসন চায় না। দেশের মানুষের এই ইচ্ছাপূরণে যথাসময়ে যথাযথ পদক্ষেপ করব।"
পরে সংবাদসংস্থা এএনআইকে সিপিআইএমএলের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য জানান, বৈঠকে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে। তবে সরকার গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে এনডিএ ৷ এটা দেশবাসী চায় না ৷ জনাদেশকে সম্মান জানাতে যা যা দরকার, তা করবে ইন্ডিয়া জোট ৷
বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বললেও সরকার গঠনের ব্যাপারে বিরোধীরা এখনই কোনও পদক্ষেপ করবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে হওয়া বৈঠক থেকে সরকার গঠনের প্রাথমিক কাজ একপ্রকার সেরেই ফেলেছে এনডিএ-র শরিক দলগুলি ৷ ঠিক হয়েছে 7 তারিখ আবারও বৈঠক হবে। বৈঠক শেষে বিজেপির তিন শীর্ষ নেতা- জেপি নাড্ডা, অমিত শাহ এবং রাজনাথ সিং নিজেদের মধ্যে আলোচনা সারবেন। সেদিনই দুই প্রাক্তন এবং বর্তমান বিজেপি সভাপতির বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে সরকার গঠনের দাবি জানাতে যাবেন নরেন্দ্র মোদি ৷