নয়াদিল্লি, 3 মার্চ: লোকসভা নির্বাচনের জন্য 195 জন প্রার্থীর যে প্রথম তালিকা প্রকাশ করেছে বিজেপি তাতে নাম নেই 'আগ্রাসী' নেত্রী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরের ৷ একইসঙ্গে, দিল্লির বর্তমান সাংসদ পারভেশ সাহেব সিং বর্মা এবং রমেশ বিধুরি-সহ একাধিক নামগুলি বাদ গিয়েছে ৷ এই নেতাদের নাম বাদ দেওয়া হতে পারে বলে দলের অন্দরে জোর জল্পনা ছিল ৷ বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্যের জন্য বারবার দলীয় স্ক্যানারের আওতায় এসেছিলেন তাঁরা। আর সে কারণেই তাদের নাম বাদ গিয়েছে বলে খবর ৷
দলীয় সূত্রে খবর, এই নেতারা সংসদের ভিতরে এবং বাইরে তাদের বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য বারংবার শিরোনামে এসেছেন। গোরুয়া শিবির 'অপারেশন ক্লিন-আপ'-এর বার্তা এর আগেই পাঠিয়েছিল দলের অন্দরে ৷ দলীয় সূত্রে খবর, পদ্ম শিবির আগের চেয়ে আরও বেশি 'ইমেজ সচেতন' হয়েছে ৷ কারণ, হিসাবে দল সাফ জানিয়েছে, এবার তাদের বিরুদ্ধে 31টি রাজনৈতিক দলের সমষ্টি ইন্ডিয়া জোট মুখোমুখি হচ্ছে। যাকে একেবারেই হালকা চালে নিচ্ছে না বিজেপি ৷
উল্লেখযোগ্যভাবে তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন প্রজ্ঞা ঠাকুর ৷ সাধ্বি প্রজ্ঞা 2008 সালের মালেগাঁও বোমা বিস্ফোরণ মামলার অভিযুক্ত। তাঁর আসন ভোপালে এবার দল প্রার্থী করেছে অলোক শর্মাকে। প্রজ্ঞা ঠাকুর স্বাস্থ্যের কারণে জামিনে রয়েছেন ৷ বিতর্ক থেকে দূরে থাকার জন্য একাধিক কর্মসূচিতেও গিয়েছিলেন ঠাকুর ৷ তারপরও তাঁকে প্রার্থী করেনি দল। নাথুরাম গডসেকে 'দেশপ্রেমিক' বলে অভিহিত করেছিলেন প্রজ্ঞা ৷ যা নিয়ে তীব্র বিতর্ক হয় ৷ তাঁর আচরণে বিরক্ত খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও ৷ পাঁচ বছর পর ভোপাল আসনটি হারালেন প্রজ্ঞা।
প্রজ্ঞা ঠাকুরের মতে, মুম্বই এসটিএফ প্রধান হেমন্ত করকারেকে তাঁর 'অভিশাপের' কারণেই হত্যা করা হয়েছিল। আরও একটি কারণ হল, তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকাতেও সক্রিয় ছিলেন না বলে অভিযোগ উঠেছে বার বার। অন্যদিকে, প্রজ্ঞা ঠাকুরের মতোই বিজেপির তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, পশ্চিম দিল্লির সাংসদ পারভেশ সিং ভার্মা ৷ 2020 দিল্লি নির্বাচনের আগে, শাহীনবাগের বিক্ষোভের সময় ভার্মা উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছিলেন ৷ সেসময় তিনি বলেছিলেন, বিজেপি জাতীয় রাজধানীতে ক্ষমতায় এলে এক ঘন্টার মধ্যে বিক্ষোভকারীদের সাফ করা হবে।
2022 সালে তিনি মুসলমানদের জন্য জনসাধারণের বয়কটের আহ্বানও জানিয়েছিলেন। দক্ষিণ দিল্লির সাংসদ রমেশ বিধুরি সম্প্রতি সংসদে ঘৃণ্য মন্তব্যের জন্য নিন্দার মুখে পড়েছিলেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে লোকসভায় আলোচনার সময় তিনি আমরোহার সাংসদ দানিশ আলির বিরুদ্ধে কটূ মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ। যদিও দক্ষিণ দিল্লির সাংসদ পরে ক্ষমা চেয়েছিলেন ৷ এরপরও বিজেপির প্রথম তালিকা থেকে অবশ্য তাঁর নামও বাদ যায় ৷ বাদ পড়া অন্য বিশিষ্ট দিল্লির সাংসদদের মধ্যে রয়েছেন মীনাক্ষী লেখি এবং হর্ষ বর্ধন।