ETV Bharat / bharat

রাতে মহিলা চিকিৎসকদের নিরাপত্তার ছবিটা কেমন ? ধরা পড়ল আইএমএ'র সমীক্ষায় - IMA Online Study on Doctor Safety

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Aug 30, 2024, 2:04 PM IST

Doctor's Safety Study in India: আরজি করে নির্যাতিতার মৃত্যুর ঘটনা কর্তব্যরত মহিলা চিকিৎসকদের বিষয়ে অনেক তথ্য সামনে এনেছে ৷ চিকিৎসকদের বিশেষ করে মহিলা চিকিৎসকরা রাতে বিশ্রাম নেওয়ার জায়গা পান না, প্রশাসনও উদাসীন ৷ আতঙ্ক এতটাই যে তাঁরা ব্যাগে অস্ত্র রাখতে শুরু করেছেন, ধরা পড়ল আইএমএ-র অনলাইন সমীক্ষায় ৷

IMA Online Study on Female Doctor Night Safety
আরজি করে পড়ুয়া চিকিৎসকের মৃত্যুতে দেশের মহিলা চিকিৎসকদের ছবি সামনে এসেছে (ইটিভি ভারত)

নয়াদিল্লি, 30 অগস্ট: আরজি কর হাসপাতালে তরুণী পড়ুয়া চিকিৎসকের হত্যার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ দেশের চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর (আইএমএ) একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, সরকারি হোক বা বেসরকারি- সব ধরনের হাসপাতালেই রাতের শিফটে চিকিৎসকরা, বিশেষ করে নিজেদের নিরাপদ বলে মনে করছেন না ৷ এমনকী প্রাণ বাঁচাতে কোনও কোনও চিকিৎসক সঙ্গে অস্ত্র রাখতে শুরু করেছেন ৷

এই সমীক্ষার ফলাফল সংগ্রহ করেছেন কেরলের আইএমএ-র রিসার্চ সেলের চেয়ারম্যান ডাঃ রাজীব জয়দেবন এবং তাঁর দল ৷ অক্টোবর মাসের আইএমএ কেরলের মেডিক্যাল জার্নালে তা প্রকাশিত হবে ৷ ডাঃ জয়দেবন বলেন, "অনলাইন সার্ভের জন্য একটি গুগল ফর্ম দেশজুড়ে চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল ৷ তাঁদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা যেমন ছিলেন, তেমনই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরাও ৷ 24 ঘণ্টার মধ্যে 3 হাজার 885 জন এই সমীক্ষায় সাড়া দিয়েছেন ৷"

আরজি কর হাসপাতালে পড়ুয়া চিকিৎসক সেমিনার রুমের হলে কেন বিশ্রাম নিতে গিয়েছিলেন, এই প্রশ্ন উঠেছে ৷ জানা গিয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসকদের বিশ্রাম নেওয়ার আলাদা কোনও জায়গা ছিল না ৷ এমন ছবি সারা দেশে, সামনে এসেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর (আইএমএ) করা অনলাইন সমীক্ষায় ৷ যাঁরা সমীক্ষার ফর্ম ফিলাপ করেছেন, তাঁদের মধ্যে 45 শতাংশ চিকিৎসক রাতের শিফটে আলাদা কোনও রুম পান না ৷

22টি রাজ্যের চিকিৎসকরা এই সমীক্ষায় তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ৷ তাঁদের মধ্যে 85 শতাংশের বয়স 35 বছরের নীচে ৷ অন্যদিকে 61 শতাংশ হয় ইনটার্ন অথবা স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করছেন ৷ এমবিবিএস কোর্স করছেন এমন মহিলার হার 63 শতাংশ ৷

24.1 শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা নিরাপদ নয়, এমনটা অনুভব করেন ৷ 11.4 শতাংশ জানিয়েছেন তাঁরা ভীষণভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ৷ এই শতাংশের মধ্যে মহিলা চিকিৎসকদের সংখ্যা বেশি ৷ 20-30 বছর বয়সি চিকিৎসকদের মধ্যে এই নিরাপত্তা না-থাকার অনুভূতি সবচেয়ে বেশি ৷ তাঁরা বেশিরভাগ ইনটার্ন অথবা স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠরতা চিকিৎসক ৷

যে চিকিৎসকরা রাতের শিফটে বিশ্রাম নেওয়ার আলাদা ঘর পাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি কম ৷ কিন্তু সমীক্ষায় অংশ নেওয়া 45 শতাংশ চিকিৎসকই রাতে হাসপাতালে কোনও আলাদা ঘর পাননি ৷ চিকিৎসকের জন্য বরাদ্দ ঘরগুলিতে কখনও প্রচুর ভিড় হয়, গোপনীয়তা রক্ষার কোনও ব্যবস্থা থাকে না, কখনও আবার চাবি পাওয়া যায় না, কখনও ওই ঘরগুলি ওয়ার্ড থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত ৷ এই অবস্থায় চিকিৎসকরা বাধ্য হয়ে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য অন্য কোনও জায়গা খুঁজে নেন ৷ এর সঙ্গে আলাদা শৌচালয়ও পান না চিকিৎসকরা ৷ তাই গভীর রাতে শৌচকর্ম করতে হাসপাতালের বাইরে যেতে হয় তাঁদের ৷

এছাড়া রাতের শিফটে রোগীর আত্মীয়-পরিজনের কাছ থেকে অকথ্য গালিগালাজ, হুমকি তো জোটেই ৷ তারা অনেক সময়ই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকে ৷ একজন মহিলা চিকিৎসক জানিয়েছেন, জরুরি বিভাগে ভিড়ের মধ্যে কেউ তাঁকে অযাচিতভাবে স্পর্শ করেছে ৷ এই অভিজ্ঞতা তার একাধিক বার হয়েছে ৷ ছোট হাসপাতালগুলির অবস্থা আরও শোচনীয় ৷ সেখানে কর্মীদের সংখ্যা তুলনায় কম এবং কোনও নিরাপত্তাকর্মী নেই ৷ বহু চিকিৎসক সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সমাধান পাননি ৷ তাঁদের বলা হয়েছে, সিনিয়ররাও একই পরিস্থিতিতে কাজ করেছেন ৷

জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে হিংসার ঘটনা বেশি ঘটে ৷ কেউ কেউ জানিয়েছেন, তাঁরা নিজেদের সঙ্গে অস্ত্র রাখছেন ৷ এক চিকিৎসক তো সমীক্ষায় স্বীকার করেছেন যে, তাঁর হাতব্যাগে একটি ভাঁজ করা যায় এমন ছুরি এবং পেপার স্প্রে থাকে ৷ কারণ তাঁর ডিউটি রুমটি একটা নির্জন কোনে অন্ধকারে ৷ দেশজুড়ে এমন ভয়াবহ অবস্থায় রাতের পর রাত কাজ করে চলেছেন চিকিৎসকরা, বিশেষত মহিলা চিকিৎসকরা ৷

নয়াদিল্লি, 30 অগস্ট: আরজি কর হাসপাতালে তরুণী পড়ুয়া চিকিৎসকের হত্যার ঘটনায় দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ দেশের চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর (আইএমএ) একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, সরকারি হোক বা বেসরকারি- সব ধরনের হাসপাতালেই রাতের শিফটে চিকিৎসকরা, বিশেষ করে নিজেদের নিরাপদ বলে মনে করছেন না ৷ এমনকী প্রাণ বাঁচাতে কোনও কোনও চিকিৎসক সঙ্গে অস্ত্র রাখতে শুরু করেছেন ৷

এই সমীক্ষার ফলাফল সংগ্রহ করেছেন কেরলের আইএমএ-র রিসার্চ সেলের চেয়ারম্যান ডাঃ রাজীব জয়দেবন এবং তাঁর দল ৷ অক্টোবর মাসের আইএমএ কেরলের মেডিক্যাল জার্নালে তা প্রকাশিত হবে ৷ ডাঃ জয়দেবন বলেন, "অনলাইন সার্ভের জন্য একটি গুগল ফর্ম দেশজুড়ে চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল ৷ তাঁদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা যেমন ছিলেন, তেমনই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরাও ৷ 24 ঘণ্টার মধ্যে 3 হাজার 885 জন এই সমীক্ষায় সাড়া দিয়েছেন ৷"

আরজি কর হাসপাতালে পড়ুয়া চিকিৎসক সেমিনার রুমের হলে কেন বিশ্রাম নিতে গিয়েছিলেন, এই প্রশ্ন উঠেছে ৷ জানা গিয়েছে, হাসপাতালে চিকিৎসকদের বিশ্রাম নেওয়ার আলাদা কোনও জায়গা ছিল না ৷ এমন ছবি সারা দেশে, সামনে এসেছে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-এর (আইএমএ) করা অনলাইন সমীক্ষায় ৷ যাঁরা সমীক্ষার ফর্ম ফিলাপ করেছেন, তাঁদের মধ্যে 45 শতাংশ চিকিৎসক রাতের শিফটে আলাদা কোনও রুম পান না ৷

22টি রাজ্যের চিকিৎসকরা এই সমীক্ষায় তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন ৷ তাঁদের মধ্যে 85 শতাংশের বয়স 35 বছরের নীচে ৷ অন্যদিকে 61 শতাংশ হয় ইনটার্ন অথবা স্নাতকোত্তর স্তরে পড়াশোনা করছেন ৷ এমবিবিএস কোর্স করছেন এমন মহিলার হার 63 শতাংশ ৷

24.1 শতাংশ জানিয়েছেন, তাঁরা নিরাপদ নয়, এমনটা অনুভব করেন ৷ 11.4 শতাংশ জানিয়েছেন তাঁরা ভীষণভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ৷ এই শতাংশের মধ্যে মহিলা চিকিৎসকদের সংখ্যা বেশি ৷ 20-30 বছর বয়সি চিকিৎসকদের মধ্যে এই নিরাপত্তা না-থাকার অনুভূতি সবচেয়ে বেশি ৷ তাঁরা বেশিরভাগ ইনটার্ন অথবা স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠরতা চিকিৎসক ৷

যে চিকিৎসকরা রাতের শিফটে বিশ্রাম নেওয়ার আলাদা ঘর পাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি কম ৷ কিন্তু সমীক্ষায় অংশ নেওয়া 45 শতাংশ চিকিৎসকই রাতে হাসপাতালে কোনও আলাদা ঘর পাননি ৷ চিকিৎসকের জন্য বরাদ্দ ঘরগুলিতে কখনও প্রচুর ভিড় হয়, গোপনীয়তা রক্ষার কোনও ব্যবস্থা থাকে না, কখনও আবার চাবি পাওয়া যায় না, কখনও ওই ঘরগুলি ওয়ার্ড থেকে অনেকটা দূরে অবস্থিত ৷ এই অবস্থায় চিকিৎসকরা বাধ্য হয়ে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য অন্য কোনও জায়গা খুঁজে নেন ৷ এর সঙ্গে আলাদা শৌচালয়ও পান না চিকিৎসকরা ৷ তাই গভীর রাতে শৌচকর্ম করতে হাসপাতালের বাইরে যেতে হয় তাঁদের ৷

এছাড়া রাতের শিফটে রোগীর আত্মীয়-পরিজনের কাছ থেকে অকথ্য গালিগালাজ, হুমকি তো জোটেই ৷ তারা অনেক সময়ই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকে ৷ একজন মহিলা চিকিৎসক জানিয়েছেন, জরুরি বিভাগে ভিড়ের মধ্যে কেউ তাঁকে অযাচিতভাবে স্পর্শ করেছে ৷ এই অভিজ্ঞতা তার একাধিক বার হয়েছে ৷ ছোট হাসপাতালগুলির অবস্থা আরও শোচনীয় ৷ সেখানে কর্মীদের সংখ্যা তুলনায় কম এবং কোনও নিরাপত্তাকর্মী নেই ৷ বহু চিকিৎসক সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সমাধান পাননি ৷ তাঁদের বলা হয়েছে, সিনিয়ররাও একই পরিস্থিতিতে কাজ করেছেন ৷

জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে হিংসার ঘটনা বেশি ঘটে ৷ কেউ কেউ জানিয়েছেন, তাঁরা নিজেদের সঙ্গে অস্ত্র রাখছেন ৷ এক চিকিৎসক তো সমীক্ষায় স্বীকার করেছেন যে, তাঁর হাতব্যাগে একটি ভাঁজ করা যায় এমন ছুরি এবং পেপার স্প্রে থাকে ৷ কারণ তাঁর ডিউটি রুমটি একটা নির্জন কোনে অন্ধকারে ৷ দেশজুড়ে এমন ভয়াবহ অবস্থায় রাতের পর রাত কাজ করে চলেছেন চিকিৎসকরা, বিশেষত মহিলা চিকিৎসকরা ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.