সুরগুজা (ছত্তিশগড়), 1 মার্চ: হাসপাতালের বিরুদ্ধে সন্তান বদলের অভিযোগ করে নিজেদের সন্তানকে ফিরে পেতে চেয়েছিলেন দম্পতি ৷ আর তাই পুলিশ ও প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে করাচ্ছিলেন 21 বছরের সেই যুবকের ডিএনএ টেস্ট ৷ সেই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার মধ্যেই মৃত্যু হল সন্তানের ৷ তবে ওটা যে তাঁদেরই সন্তান, তা প্রমাণ করতে এখনও অনড় দম্পতি ৷ তাই এবার হচ্ছে মৃতদেহের ডিএনএ পরীক্ষা ৷
আশ্চর্য এই ঘটনার তদন্ত করছে ছত্তিশগড়ের মহিলা কমিশন ৷ একটি পরিবার তাদের সন্তানের হেফাজতের জন্য কমিশনের কাছে আবেদন করেছে । সন্তানের জন্ম 23 বছর আগে । কয়েক বছর আগে তার সন্দেহজনক অবস্থায় মৃত্যু হয় । তবে পরিবার জানতে চায় যে সে কার সন্তান । এর ফলে মৃতের ডিএনএ পরীক্ষা করাচ্ছে কমিশন ৷
হাসপাতাল থেকেই শিশু পালটে গিয়েছে বলে মহিলা কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই দম্পতি । তাঁরা 23 বছর ধরে তাঁদের সন্তানের খোঁজ করছেন । মৃত যুবক তাঁদেরই সন্তান বলে দাবি করেছেন ওই দম্পতি । মাত্র কয়েক মাস আগে তিনি মারা যান । তবে ওই দম্পতি মৃত যুবকের দেহাবশেষ পরীক্ষা করে প্রমাণ করতে চান যে, সে তাঁদেরই সন্তান ছিল ৷
এই মর্মান্তিক পরিস্থিতিতে নিজেদের নিয়মের বাইরে গিয়ে অভিযোগ শুনছে মহিলা কমিশন । মহিলা কমিশন কালেক্টর এবং এসপিকে মৃত যুবকের দেহাবশেষের ডিএনএ পরীক্ষা করতে বলেছে ।
ঘটনাটি যশপুর জেলার দুলদুলা এলাকার । স্থানীয় বাসিন্দা চামরু রাম অভিযোগ করেন যে, 2000 সালে তাঁর স্ত্রীকে প্রসবের জন্য যশপুরের হোলি ক্রস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল । পাশের গ্রামের আরেক মহিলাকেও ডেলিভারির জন্য সেখানে ভর্তি করা হয় । প্রসবের পর দম্পতিকে বলা হয়, তাঁদের একটি ছেলে হয়েছে । কিন্তু পরে ওই দম্পতিকে একটি মৃত মেয়ে দেওয়া হয় । এর পর থেকে ওই দম্পতির সন্দেহ হয় যে, তাদের সন্তান বদলে দেওয়া হয়েছে ৷
এই ঘটনার পর থেকে ওই দম্পতি অন্য গ্রামে জন্ম নেওয়া সন্তানের উপর নজর রাখতে শুরু করেন । শিশুটি যখন বড় হয়, তখন তার চেহারা চামরু রামের সঙ্গে মিলে যায় । সেই কারণে চামরু রাম কালেক্টর ও এসপির কাছে ওই যুবকের ডিএনএ টেস্টের আবেদন করেন । কিন্তু কেউ চামরুর কথা শোনেননি । নির্যাতিত দম্পতি মহিলা কমিশনে মামলা করেন । মামলার শুনানির সময় যখন ডিএনএ পরীক্ষার প্রক্রিয়া শুরু হয়, তখন 21 বছর বয়সে যুবকটি মারা যান । যুবকের মৃত্যু নিয়েও প্রশ্ন তোলেন দম্পতি । এখন তাঁরা মৃত যুবকের দেহাবশেষের ডিএনএ পরীক্ষা করাতে চান ।
এই মামলার শুনানি করার সময় কমিশন বলেছে যে, এটি একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের মামলা । যেখানে বছরের পর বছর ধরে এক বৃদ্ধ দম্পতি তাঁদের সন্তানের খোঁজ করছেন । যশপুরের কালেক্টর ও এসপিকে মৃত যুবকের দেহাবশেষের ডিএনএ পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে । মামলার ফাইল কমিশন সদস্যকে দেখাতে বলা হয়েছে । যাতে নিয়মানুযায়ী ডিএনএ পরীক্ষা করা যায় । মৃত শিশুটি আবেদনকারী দম্পতিরই বলে প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
আরও পড়ুন: