নয়াদিল্লি, 29 জানুয়ারি: রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজে নিয়োগ মামলার শুনানি সরলো সুপ্রিম কোর্টে ৷ আজ সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে কলকাতা হাইকোর্টের দুই বিচারপতির সংঘাত সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল ৷ যেখানে দু’পক্ষের সওয়ালের পর প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বিশেষ বেঞ্চ, সিবিআই তদন্তের দাবিতে দাখিল হওয়া মূল মামলার আবেদনের শুনানি নিজেদের অধীনে নিয়েছে ৷ অর্থাৎ, মেডিক্যালের নিয়োগে ভুয়ো জাতি শংসাপত্র ব্যবহার হওয়ার তদন্ত সিবিআইকে দেওয়া হবে কিনা, তার শুনানি শীর্ষ আদালতই করবে ৷
প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এ দিন বলেন, "এই সমস্যা সম্পর্কিত সমস্ত মামলা সুপ্রিম কোর্ট নিজেদের হাতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তিন সপ্তাহের মধ্যে এই মামলা সংক্রান্ত সমস্ত আবেদন দাখিল করতে হবে ৷" মামলার পরবর্তী শুনানি তিন সপ্তাহ পরেই হবে বলে জানিয়েছে প্রধান বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চ ৷ এ দিন আদালতে রাজ্য সরকারের তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিবল ৷ মূলত, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একাধিক রায় এবং মন্তব্যের বিরুদ্ধে সওয়াল করেন তিনি ৷
এই মামলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও পার্টি হয়েছেন ৷ তাঁর হয়ে মামলায় সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি ৷ উল্লেখ্য, গত 24 জানুয়ারি মেডিক্যালে ভরতির নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় রাজ্য সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৷ তিনি এর তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, ওই দিনই অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন করেন ৷ যেখানে ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করে ৷
কিন্তু, সেদিনই দ্বিতীয় ধাপে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে মামলার পরবর্তী পর্যায়ের শুনানি ছিল ৷ যেখানে সরকারি আইনজীবী বিচারপতিকে জানিয়েছিলেন, ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করেছে ৷ যার প্রেক্ষিতে বিচারপতি নির্দেশের কপি বা লাইভ স্ট্রিমিংয়ের ফুটেজ দেখতে চান ৷ কিন্তু, কোনও অফিসিয়ার নথি না থাকায়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নিজের রায় বহাল রাখেন এবং সিবিআইকে মামলার সমস্ত নথি হস্তান্তর করেন ৷
কিন্তু, এর পরেই শুরু হয় দুই বিচারপতির সংঘাতের পর্ব ৷ 25 জানুয়ারি বিচারপতি সৌমেন সেনের বেঞ্চ সেই নির্দেশকে খারিজ করে দেন ৷ যা নিয়ে সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করে ৷ এর পরেই বিচারপতিদের সংঘাতে হস্তক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট ৷ প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বি আর গাভাই, বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোসের বিশেষ বেঞ্চ এই মামলায় স্বতঃপ্রণোদিতভাবে শুনানি শুরু করে ৷ আর আজ সেই বিশেষ বেঞ্চ মূল মামলাটিই কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সরিয়ে নিজেদের অধীনে নিল ৷
আরও পড়ুন: