সহরসা, 6 সেপ্টেম্বর: অপরাধী যতই চতুর হোক না কেন, আইনের হাতও ততোধিক দীর্ঘ ৷ বিহারের সহরসা জেলার একটি ঘটনা তেমনটাই প্রমাণ করল ৷ 34 বছর পর সহরসার একটি আদালত এক কনস্টেবলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে ৷ ওই কনস্টেবল সহরসা স্টেশনের এক সবজি বিক্রেতার কাছ থেকে 20 টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন ৷
ঘটনার সূত্রপাত 1990 সালের 6 মে ৷ বিহারের সহরসা স্টেশনে এক মহিলা সবজি বিক্রেতা সীতা দেবীর কাছ থেকে 20 টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন কনস্টেবল ৷ সেই সময় তিনি উর্দি পরেই ছিলেন ৷ তখন সহরসা রেল স্টেশনের প্রধান ও পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে ৷
এদিকে অভিযুক্ত কনস্টেবল এই মামলা থেকে রেহাই পেতে একটি কারসাজি করে বসেন ৷ গ্রেফতারির সময় তিনি তাঁর ঠিকানাটি ভুল লিখে দেন ৷ কনস্টেবল লেখেন সহরসার মহেশখুন্তে তাঁর বাড়ি ৷ কিন্তু তিনি সেখানে থাকতেন না ৷ অভিযুক্তের বাড়ি তৎকালীন মুঙ্গের এবং বর্তমান বারহিয়ার বিজয় গ্রামে, যা লখিসরাই জেলার অন্তর্ভুক্ত ৷ ঘুষ নেওয়ার মামলায় জামিন পাওয়ার পর কনস্টেবল উধাও হয়ে যান ৷
আদালতে সমন জারি হলেও তিনি আর আদালতে হাজিরা দেননি ৷ কনস্টেবলের মনে হয়েছিল যে, তিনি ভুল ঠিকানা দিয়েছেন ৷ তাই কেউ তাঁকে আর খুঁজে পাবে না ৷ 1999 সালে অভিযুক্ত একটার পর একটা তারিখ পেরিয়ে গেলেও, আদালতে হাজিরা দেননি ৷ এবার আদালত কড়া পদক্ষেপ করে এবং অভিযুক্তের জামিন খারিজ করে দেয় ৷
কথায় আছে আইনের হাত দীর্ঘ ৷ অপরাধী সব সময় কোনও না কোনও সূত্র ছেড়ে যায় ৷ পরে সেই প্রমাণের জন্যই তাঁকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় ৷ এমনটাই হয়েছে এই কনস্টেবলের ক্ষেত্রে ৷ এবার সহরসার আদালতের বিচারক সুদেশ শ্রীবাস্তব বিহারের ডিজিপিকে চিঠি লেখেন ৷ তিনি ওই পলাতক অভিযুক্ত কনস্টেবলকে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন ৷
34 বছর আগে এক সবজি বিক্রেতা মহিলার কাছ থেকে 20 টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন কনস্টেবল ৷ সেই ঘটনায় অপরাধীকে খুঁজে পাওয়াটা অবশ্যই একটি সদর্থক বার্তা ৷ একই সময়ে বিচার ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায় ৷ এই ঘুষ নেওয়ার মামলাটি 34 বছর ধরে দীর্ঘায়িত হল কেন ? আদালত কি সেই সবজি বিক্রেতা সীতা দেবীকে সুবিচার দিতে পারবে ?