ভূপালাপল্লী (তেলেঙ্গানা), 1 জানুয়ারি: কয়েক মাস কিস্তির টাকা দিতে না-পারায় বেসরকারি ঋণদানকারী সংস্থার ক্রমাগত হয়রানি ৷ এই অবস্থায় জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন তেলেঙ্গানার এক দম্পতি ৷ বছর শুরুতেই অনাথ হল দুই কিশোর ৷ ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার ভূপালাপল্লী মণ্ডলের কমলাপুর গ্রামে ৷ মৃতদের নাম বনথ দেবেন্দর (37) ও চন্দনা (32) ৷
অসহায় তাঁদের দুই সন্তান যশবন্ত (12) ও ঋষি (14) ৷ কৃষিকাজের উপর নির্ভর করেই সংসার চলত দেবেন্দর ও চন্দনার ৷ ছেলে দুটি পড়ত স্থানীয় সরকারি স্কুলে ৷ কোনওরকমে তাদের দিন চলে যেত ৷ কয়েক মাস আগে গ্রামের অন্যান্য মহিলার সঙ্গে চন্দনা একটি বেসরকারি ঋণদানকারী সংস্থা থেকে আড়াই লক্ষ টাকা লোন নিয়েছিলেন ৷ প্রতি সপ্তাহে 200 টাকা করে দিয়ে তা শোধ করার কথা ছিল ৷
সেই মতো বছরের পর বছর নিয়মিত টাকা দিয়ে তা শোধ করছিলেন চন্দনা ৷ তবে কয়েক মাস ধরে তাঁর স্বামী ও সন্তানদের অসুস্থতার কারণে সাপ্তাহিক 200 টাকা দিতে পারছিলেন না ৷ এদিকে, ঋণদানকারী সংস্থা থেকে টাকা শোধ করার জন্য প্রবল চাপ দেওয়া হচ্ছিল ৷ একদিকে পরিবারে অনটন, অন্যদিকে টাকা পরিশোধের হয়রানি ৷ দুইয়ে মিলে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন চন্দনা ও দেবেন্দর ৷
সেই চাপ সামলাতে না পেরে নিজেকে শেষ করে দিতে গত 6 ডিসেম্বর কীটনাশক খেয়ে ফেলেন চন্দনা ৷ খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা দ্রুত তাঁকে স্থানীয় এমজিএম হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখানেই চন্দনার চিকিৎসা চলছিল ৷ স্ত্রীর এহেন অবস্থা দেখে মাথার ঠিক রাখতে না পেরে 20 ডিসেম্বর নিজের বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে জীবন শেষ করেন দেবেন্দর ৷ এই ঘটনার 10 দিনের মাথায় 31 ডিসেম্বর মঙ্গলবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় চন্দনার ৷
মা-বাবাকে হারিয়ে অনাথ হয়ে পড়ে ঋষি ও যশবন্ত ৷ গ্রামবাসীরা এই দুই কিশোরের সাহায্যের জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ৷ এই বিষয়ে ভূপালপল্লীর সিআই নরেশ কুমার জানান, একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে ৷