নয়াদিল্লি, 2 এপ্রিল: তিহাড়ের 2 নম্বর সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ৷ 14 ফুট লম্বা এবং 8 ফুট চওড়া তাঁর সেল। এই সেলে সোমবারে প্রথমবার রাত কাটিয়েছেন ৷ তবে এই রাত ছিল তাঁর কাছে দীর্ঘ ৷ অস্থিরতায় কাটল তিহাড় সংশোধনাগারে তাঁর প্রথম রাত ৷ গভীর রাতে সেলে তাঁকে হাঁটতে দেখা গিয়েছে ৷
তিহাড় সংশোধনাগার সূত্রে খবর, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ঠিকমতো ঘুমোননি রাতে ৷ সারা রাত ধরে পাশ বদলাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে । যদিও তাঁর সেলে একটি টিভি আছে । জেলে পৌঁছনোর পর রাতে কিছু সময় টিভিতে খবর দেখেন তিনি । এরপর ঘুমোতে যান । তাঁর সেলে এবং সেলের বাইরে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ সেলের ভেতরে সিসিটিভি নজরদারি রয়েছে । একই সঙ্গে সেলের বাইরে 24 ঘণ্টা পাহারা দিচ্ছেন 4 পুলিশ কর্মী ।
যে কক্ষে অরবিন্দ কেজরিওয়াল রয়েছেন সেখানে একটি টয়লেটও রয়েছে । কক্ষে সিমেন্টের তৈরি একটি অংশ রয়েছে, যার উপর একটি চাদর রয়েছে ৷ যদিও কেজরিওয়ালকে একটি কম্বল এবং দুটি বালিশও দেওয়া হয়েছে ৷ তবে আদালতে তিনি তাঁর বাড়ির বিছানার চাদর ও বালিশ সংশোধনাগারে দেওয়ার দাবি করেছিলেন ।
সংশোধনাগারের তরফে জানা গিয়েছে, কেজরিওয়ালকে সোমবার বিকেল 4টেতে তিহাড়ে নিয়ে আসা হয়। তাঁকে সেলে পাঠানোর আগে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয় ৷ সে সময় তাঁর সুগারের মাত্রা 50-এর নীচে ছিল এবং চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে ওষুধ দেওয়া হয়েছে । তিনি তিহাড়ে চিকিৎসকদের নজরদারিতে রয়েছেন ৷ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে বিকেলে চা দেওয়া হয়েছিল এবং রাতের বাড়িতে রান্না করা খাবার খেতে দেওয়া হয়েছিল ৷ সুগার কম থাকায় দুপুরে ও রাতে বাড়িতে রান্না করা খাবার খাবেন কেজরিওয়াল ৷ মঙ্গলবার স্ত্রী ও সন্তান তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলে একজন আধিকারিক জানিয়েছেন ৷
সূত্রের খবর, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী সংশোধনাগারে বেশ কিছু বই চেয়েছিলেন ৷ এর মধ্যে রামায়ণ, মহাভারত এবং 'হাও প্রাইমিনিস্টারস ডিসাইড' মতো বই তাঁকে পড়তে দেওয়া হয়েছে ৷ তাঁকে একটি ধর্মীয় লকেট পরারও অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যা তিনি সবসময় পরে থাকেন। সংশোধনাগারে নিয়ম অনুযায়ী, যে কোনো ব্যক্তি 10 জনের সঙ্গে দেখা করার জন্য নাম দিতে পারেন ৷ তবে কেজরিওয়াল ছয়জনের একটি তালিকা দিয়েছেন যাদের সঙ্গে সংশোধনাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় তিনি দেখা করতে চান । তালিকায় রয়েছেন তাঁর স্ত্রী সুনিতা কেজরিওয়াল, ছেলে ও মেয়ে, প্রাইভেট সেক্রেটারি বিভাব কুমার, আপের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সন্দীপ পাঠক ও আরেক বন্ধুর নাম ।
দিল্লির আদালত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে 15 এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে ৷ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের দাবি, তাঁকে মুক্তি দিলে দিল্লি আবগারি নীতি কেলেঙ্কারির সঙ্গে যুক্ত আর্থিক তছরুপের মামলার তদন্তে তিনি বাধা সৃষ্টি করতে পারেন । অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পাশাপাশি তিহাড়ে বন্দি রয়েছেন তাঁর দলের অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীরাও ৷ মণীশ সিসোদিয়া আছেন এক নম্বর সংশোধনাগারে। সত্যেন্দ্র জৈন আছেন সাত নম্বর সংশোধনাগারে। এর পাশাপাশি টিআরএস নেত্রী কে কবিতা আছেন ছয় নম্বর সংশোধনাগারে। তবে কেজরিওয়াল এই প্রথমবার তিহাড় জেলে আসেননি । এর আগে তিনি 2012 সালে আন্না আন্দোলনের সময় তিহাড় সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন । 2014 সালে নীতীন গডকরি মানহানির মামলাও তিনি এখানে এসেছিলেন ।
আরও পড়ুন: