লখনউ, 9 ফেব্রুয়ারি: দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী চরণ সিংকে শুক্রবার ভারতরত্ন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তিনি ছিলেন দেশের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি মোরারজি দেশাইয়ের পর তিনিই ছিলেন ভারতের দ্বিতীয় অ-কংগ্রেসি প্রধানমন্ত্রী। এর বাইরে স্বাধীন ভারতের অন্যতম বড় কৃষক ও জাঠ নেতা হিসেবেও চৌধুরি চরণ সিং-কে মনে রেখেছে দেশ। তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান দেওয়ার কথা ঘোষণা করায় খুশি সমাজের বিভিন্ন মহল ৷ এই বিষয়ে, চৌধুরী চরণ সিংয়ের নাতি এবং আরএলডি সভাপতি জয়ন্ত চৌধুরীও এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ' প্রধানমন্ত্রী মোদি মন জয় করে নিয়েছেন।'
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক চৌধুরী চরণ সিংয়ের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্য়ায়
- চৌধুরী চরণ সিংয়ের জন্ম 1902 সালের 23 ডিসেম্বর। উত্তর প্রদেশের বিজনৌর জেলার নুরপুরের এক জাঠ পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
- চৌধুরী চরণ সিং দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ই রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। 1925 সালে এমএসসির পর তিনি আইন নিয়েও পড়াশোনা করেন।
- চৌধুরী চরণ সিং 1937 সালে প্রথমবারের মতো বিধায়ক হন। তিনি পাঁচবার ছাপরাউলি বিধানসভা আসন থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন।
- চৌধুরী চরণ সিং ছিলেন দেশের প্রথম জাঠ ও কৃষক নেতা যিনি দু'বার উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং পাঁচ মাসের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।
- চৌধুরী চরণ সিং ছিলেন দ্বিতীয় অ-কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী। তবে তাঁর মেয়াদ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। মাত্র পাঁচ মাস প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি। 28 জুলাই 1979 থেকে 14 জানুয়ারি 1980 পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন তিনি।
- দু'বার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন চৌধুরী চরণ সিং কৃষকদের স্বার্থে একাধিক বড় কাজ ও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল একত্রীকরণ আইন। তাঁর হাত ধরেই দেশে এই আইন বাস্তবায়িত হয়। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে, চৌধুরী চরণ সিং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও ছিলেন। তিনি কৃষি ও আইন মন্ত্রকের দায়িত্বও পালন করেন ৷ পাশাপাশি ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও।
- চৌধুরী চরণ সিং তাঁর জীবনে একাধিক বইও লিখেছেন। এর মধ্যে তিনি বেরেলি জেলে থাকাকালিন দুটি বই লিখেছিলেন। স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় তিনি জেলে যান।
- চৌধুরী চরণ সিং-এর প্রধান বইগুলির মধ্যে রয়েছে 'ভারতের অর্থনৈতিক নীতি', 'দ্য গান্ধিয়ান ব্লুপ্রিন্ট', 'ইকোনমিক নাইটমেয়ার অফ ইন্ডিয়া'।
- 1987 সালের 29 মে চৌধুরী চরণ সিং-এর মৃত্যু হয়। দিল্লিতে কিষাণ ঘাটে তাঁর সমাধি নির্মিত হয়েছে। তিনি তাঁর সমগ্র জীবন ভারতীয়তা ও গ্রামীণ পরিবেশের মর্যাদায় কাটিয়েছেন।
এদিন সমাজবাদী পার্টির জাতীয় সভাপতি অখিলেশ যাদব চৌধুরী চরণ সিংকে ভারতরত্ন পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণায় কৃষকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, "সমাজবাদী পার্টিও চৌধুরী সাহেবকে ভারতরত্ন দেওয়ার দাবি করেছিল। আজ যাঁরা ভারতরত্ন পেয়েছেন এবং তাঁদের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের আমি অভিনন্দন জানাই।"
আরও পড়ুন
ভারতরত্ন পাচ্ছেন পিভি নরসিমহা রাও, চৌধুরী চরণ সিং ও এমএস স্বামীনাথন, ঘোষণা মোদির
মন্দির ভেঙে অন্যায় করেন ঔরঙ্গজেব, মসজিদ অন্যত্র তৈরি হতে পারত, মত ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিবের
জন্মসূত্রে ওবিসি নন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, দাবি রাহুল গান্ধির