গুয়াহাটি, 17 অক্টোবর: বাংলাদেশের শরণার্থীদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট । আদালত জানিয়েছে, নাগরিকত্ব আইনের 6 এ ধারার সাংবিধানিক বৈধতা আছে । এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন অসমের বাসিন্দারা। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের ফলে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা বিতর্কের অবসান হল ।
অসম অ্যাকর্ড অনুযায়ী 1966 সালের প্রথম দিন থেকে 1971 সালের মার্চ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে যাঁরা এ দেশে এসেছেন তাঁদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয় । এই ব্যবস্থাকে অন্তর্ভুক্ত করতেই 1955 সালের নাগরিকত্ব আইনের ৬ এ ধারা যুক্ত করে ইন্দিরা গান্ধির সরকার । 1985 সালে কেন্দ্রীয় সরকার এবং অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (আসু)-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় অসম অ্যাকর্ড ।
কয়েকটি সংগঠন এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল । তাদের দাবি ছিল 1966 সালের বদলে 1951 সাল থেকে যাঁরা বাংলাদেশ থেকে অসমে এসেছেন তাঁদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করা হোক । সেই কারণে 955 সালের নাগরিকত্ব আইনের ৬ এ ধারা খারিজের দাবি উঠতে থাকে । সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য ৬ এ ধারা খারিজ করার পথে হাঁটেনি ।
আসু প্রধান উপদেষ্টা সমুজ্জল ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা খুশি সুপ্রিম কোর্ট অবৈধ বিদেশীদের সনাক্তকরণ এবং নির্বাসনের জন্য কাট-অফ তারিখ নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটিয়েছে । অসাম চুক্তিকে বৈধতা দিয়েছে৷ এই চুক্তির বাকি শর্ত সাফল্যের সঙ্গে লাগু করার দায়িত্ব রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের।
বিধানসভার বিরোধী দলের নেতা তথা কংগ্রেস বিধায়ক দেবব্রত সাইকিয়া বলেন, " সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানাই । আজকের দিনটি ঐতিহাসিক কারণ এই রায়টি বিদেশীদের সনাক্তকরণ এবং নির্বাসনের জন্য কাট-অফ তারিখ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়েছে । আজকের রায়ে এটাও প্রমাণিত হয়েছে যে অসমে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার এবং কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বে অবৈধ অনুপ্রবেশের সমস্যা শেষ করতে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন" ।
উল্লেখ্য, আসুর এক প্রাক্তন নেতা 2012 সালে সুপ্রিম কোর্টে 6এ ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন । সেই মামলায় রায় দিল সর্বোচ্চ আদালত ।