গুয়াহাটি, 6 জুলাই: ক্রমেই গুরুতর হয়ে উঠছে অসমের বন্যা পরিস্থিতি ৷ রাজ্যের 30টি জেলায় প্রায় সাড়ে 24 লক্ষেরও বেশি মানুষ বন্যার কবলে বলে জানা গিয়েছে ৷ ইতিমধ্যেই 52 জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর ৷ বিভিন্ন স্থানে বিপদসীমার উপরে দিয়ে বয়ে চলেছে রাজ্যের প্রধান নদীগুলি ৷ উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্য সরকারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷
সরকারি সূত্রে খবর, বন্যায় এখনও পর্যন্ত 52 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ ভূমিধস ও ঝড়ের কারণে প্রাণ হারিয়েছে আরও 12 জন। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা চূড়ান্ত ক্ষতিগ্রস্থ ডিব্রুগড় জেলা পরিদর্শন করেছেন ইতিমধ্যেই ৷ রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পরে শুক্রবার গভীর রাতে আধিকারিকদের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন ৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "ডিব্রুগড়ের বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করার পরে, আমরা অসম আরোগ্য নিধি-একটি স্বাস্থ্য আর্থিক সহায়তা প্রকল্প-সহ বেশ কয়েকটি বিষয় পর্যালোচনা করেছি ৷"
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, "প্রবল বৃষ্টির কারণে অসমে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে কথা বলেছি ৷ পরিস্থিতি নিয়ে এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ যুদ্ধকালীন তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছে ৷ ত্রাণ সরবরাহের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারকার্যও চলছে ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অসমের জনগণের সঙ্গেই আছেন ৷ এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে রাজ্যকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।" অন্যদিকে, পানীয় জল সরবরাহের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বন্যার জেরে যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে ৷ 'জল জীবন মিশন' প্রকল্পটি এই কঠিন সময়ে কাজে লাগবে বলেও জানান তিনি ৷ তাঁর কথায়, "জল সরবরাহ প্রকল্প এই কঠিন সময়ে পানীয় জল সরবরাহ করছে ৷"
অন্যদিকে, গুয়াহাটির পাহাড়ি জ্যোতিনগর এলাকায় নর্দমায় আট বছর বয়সি ছেলে পড়ে গিয়েছে এক ব্যক্তির ৷ যার সন্ধান করছেন ওই ব্যক্তি ৷ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাবার স্কুটার থেকে পিছলে পড়ে যায় ছেলেটি ৷ একটি খোলা স্টর্মওয়াটার ড্রেনে পড়ে যায় সে ৷ তারপর থেকে হীরালাল সরকার তাঁর ছেলেকে খুঁজে চলেছেন ৷ ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন মেশিন ও স্নিফার ডগ নিয়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন ৷
বন্যায় কামরূপ, হাইলাকান্দি, ধুবরি, নগাঁও, মরিগাঁও, গোয়ালপাড়া, বরপেটা, ডিব্রুগড়, নলবাড়ি, বোঙ্গাইগাঁও, লখিমপুর, জোরহাট, সোনিতপুর, কোকরাঝাড়, করিমগঞ্জ এবং তিনসুকিয়া জেলাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অসম স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটির বুলেটিন অনুসারে, এই বছরের বন্যা, ভূমিধস এবং ঝড়ের সংখ্যা ছিল 64। মোট 47 হাজার 103 জন ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ 612টি ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ৷ নিমাতিঘাট, গুয়াহাটি, গোয়ালপাড়া ও ধুবড়িতে ব্রহ্মপুত্র নদ বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "রাজ্য সরকার মানুষের অভিযোগ শুনতে এবং তাদের যাবতীয় সমস্যার সমাধানের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে ৷" (পিটিআই)