হায়দরাবাদ, 8 মে: দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ৷ এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে 2024 সালের তাপমাত্রাও বাড়বে ৷ এই তাপমাত্রা বাড়ার ফলে চলতি বছর ইতিহাসের শীর্ষ 5 উষ্ণতম বছরের মধ্যে একটি হতে চলেছে ৷ এমনটাই দাবি 'ক্লাইমেট ট্রেন্ডস' সংস্থার ৷ তাদের এই দাবি সামনে আশার পরই তা উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
প্রাক-মৌসুমি বৃষ্টি এবং বজ্রবৃষ্টি হয়নি এপ্রিল মাসে ৷ রিপোর্ট বলছে, গত মাসে ভারতের দক্ষিণ উপদ্বীপে 1901 সাল থেকে এখনও পর্যন্ত পঞ্চম নিম্ন বৃষ্টিপাতের হার রেকর্ড করা হয়েছে । এর ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাপমাত্রা ৷ তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রধান কারণ সুপার এল নিনোর প্রভাব ৷ এর জেরে 2023 সালের জুন থেকে 10 মাস ধরে প্রতি মাসে তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে এবং 11তম মাস অর্থাৎ এপ্রিলকে সবচেয়ে উষ্ণতম মাস হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছে ।
ভারতে গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উৎসব চলছে ৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গরম বাড়ছে ৷ তার প্রভাব পড়ছে দেশের ভোটদান এবং নির্বাচনী প্রচারে। এর সমাধান সূত্র খোঁজার জন্য 'ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের মধ্যে দেশে আবারও কি গ্রীষ্মকালে নির্বাচন করা উপযোগী হবে?', এমনই শীর্ষক শিরোনামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে । তাতে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য উঠে এসেছে ৷ এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, চলতি বছর বিশ্বের 49 শতাংশ জনসংখ্যা 64টি দেশে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে । বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতে রেকর্ড-উচ্চ তাপমাত্রা সত্ত্বেও 90 কোটিরও বেশি মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত ।
তাপমাত্রায় সুপার এল নিনোর প্রভাব
দেশে ইতিমধ্যে 20 শতাংশ প্রাক-মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ঘাটতি রেকর্ড করা হয়েছে। মানুষের ভুলের কারণে জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তনের সঙ্গে এল নিনো শক্তিশালী হয়ে উঠছে । 2016 সাল এই এল নিনোর কারণে সবচেয়ে উষ্ণতম বছর ছিল । সুপার এল নিনোর কারণে 2023 সালে সেই রেকর্ডটি ছাপিয়ে যায়।
মৌসম বিভাগের মতে, ভারতীয় উপদ্বীপে ঘূর্ণিঝড়-বিরোধী প্রভাবের কারণে দেশে বৃষ্টিপাতের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে না। এই কারণে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে সমুদ্রের বাতাস কমছে এবং তাপমাত্রা বাড়ছে । দেশের উপকূলীয় এলাকায় তাপমাত্রা 37 ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে এটিকে সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে মনে করা হয় । সারাদেশের পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকায়ও এ ধরনের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ভারতের পূর্ব উপকূল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আমেরিকা ভিত্তিক জলবায়ু কেন্দ্রীয় সংস্থার মতে, এপ্রিলে ভারতে নির্বাচন শুরু হওয়ার পর ভারতের 51টি প্রধান শহরের মধ্যে 36টিতে টানা 3 দিন ধরে 37 ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে । পাশাপাশি এপ্রিল মাসে প্রায় 18টি শহরে 40 ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রা 3 দিনের বেশি রেকর্ড করা হয়েছে ।
আগের নির্বাচন কমিশনাররা কী বলছেন ?
প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ওপি রাওয়াত বলেছেন, "বর্তমান নির্বাচনগুলি 17 ডিসেম্বর 2023 সাল থেকে 16 জুন 2024 সাল পর্যন্ত যে কোনও সময় অনুষ্ঠিত হতে পারে ৷ তবে কিছু রাজ্যে নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ায় লোকসভা নির্বাচন দুই বা তিন মাস দেরিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৷ ভবিষ্যতে সর্বদলীয় বৈঠক হওয়া উচিত ৷ বিধানসভা ও পঞ্চায়েতের মতো রাজ্যের নির্বাচনগুলি দুই মাস দেরিতে করা উচিত এবং সেই 6 মাসের মধ্যে লোকসভা ভোট হওয়া উচিত ৷"
2029 সালেও 1 জানুয়ারি থেকে 30 জুনের মধ্যে লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৷ এমনটাই উল্লেখ করে ওপি রাওয়াত জানান, ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ নির্বাচন করার জন্য অনুকূল সময় ৷ অন্যথায় নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতা দিয়ে আইন সংশোধন করা উচিত যাতে বিধানসভা ও পঞ্চায়েতের মতো রাজ্যে নির্বাচনগুলি আগে অনুষ্ঠিত হতে পারে ।
অবসরপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনার অশোক লাভাসার কথায়, "180 দিনের মধ্যে যে কোনো সময় দেশে নির্বাচন করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের রয়েছে। গ্রীষ্মকালে যারা ভোট দিতে আসবেন তাদের জন্য পানীয় জল-সহ শীতল স্থানের ব্যবস্থা করতে হবে । তবে সরকারের মেয়াদ কমানো যাবে না । শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলবে । ফেব্রুয়ারি এবং মার্চে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডারটি মিস করা উচিত নয় য গ্রীষ্মের দুর্যোগের প্রভাব কমাতে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত ৷"
আরও পড়ুন: